তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
দূষণ বিশ্বজুড়ে এক গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে। বিশেষত বায়ুদূষণ একাধিক রোগের কারণ! বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই ভারতেও বায়ুদূষণ একাধিক রোগের কারণ হয়ে উঠছে। গত কয়েক বছরে কলকাতা, দিল্লির মতো বড় শহরে বায়ুদূষণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে শিশুদের (Childhood Asthma)। এমনটাই জানাচ্ছে সম্প্রতি প্রকাশিত এক সর্বভারতীয় সমীক্ষা। দেশ জুড়ে বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়ছে। তাই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, হাঁপানির মতো রোগ নিয়ে সতর্কতা ও সচেতনতা না বাড়লে আরও বড় বিপদ হতে পারে।
কী বলছে রিপোর্ট? (Childhood Asthma)
সম্প্রতি প্রকাশিত এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে হাঁপানিতে ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। এক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সি ভারতীয় ছেলেমেয়েদের ৫ শতাংশ হাঁপানিতে আক্রান্ত। কিন্তু ২ থেকে ৬ বছর বয়সিদের ৮ শতাংশ শিশু হাঁপানিতে আক্রান্ত হচ্ছে। অর্থাৎ শিশুদের মধ্যে এই সমস্যার প্রকোপ বাড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, বায়ুদূষণের জেরেই শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
কেন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাঁপানি নিয়ে সচেতনতা কম। অধিকাংশ অভিভাবকেরা অনেক সময়েই এই রোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন না। ফলে বড় বিপদ হতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রথম থেকেই সতর্কতা এবং সচেতনতা থাকলে শিশু সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তবে, ফুসফুসের রোগ নিয়ে সচেতনতা জরুরি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাঁপানির (Childhood Asthma) সমস্যা থাকলে অন্যান্য সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই ভাইরাস ঘটিত অসুখ থেকে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। তাই সন্তানের ঘনঘন কাশি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হলে একেবারেই সময় নষ্ট করা উচিত নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ সন্তানের হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে অভিভাবকদের প্রয়োজনীয় কর্মশালায় অংশগ্রহণ জরুরি। কীভাবে সন্তানকে সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করা যায়, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকাও দরকার।
হাঁপানি থাকলেও স্বাভাবিক জীবনযাপন কীভাবে সম্ভব? (Childhood Asthma)
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুর হাঁপানির সমস্যা থাকলেই, সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না, এমনটা একদম নয়। বরং, ঠিকমতো চিকিৎসা হলে, সে সুস্থভাবেই জীবনযাপন করতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে সচেতনতা এবং সতর্কতা জরুরি। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, কয়েকটি বিষয় নজর রাখলেই সেই কাজ হবে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুকে এই রোগ সম্পর্কে জানানো জরুরি। সন্তান হাঁপানির (Childhood Asthma) মতো সমস্যায় ভুগলে, তাকে তার সমস্যা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলা দরকার। যখন সে সুস্থ থাকবে, তখন তাকে ভালোভাবে বোঝাতে হবে, যাতে সে ভয় না পায়। কিন্তু সতর্ক থাকে। তার ইনহেলার বা যে ওষুধ, বিপদে সাহায্য করতে পারে, সেটাও ভালোভাবে চিনিয়ে দেওয়া জরুরি, যাতে তার বড় কোনও সমস্যা না হয়। সন্তানকে বোঝাতে হবে, এটা এমন কোনও বড় সমস্যা নয়, যার জন্য সে তার সমবয়সিদের মতো জীবনযাপন করতে পারবে না। কোনওভাবেই শিশুকে রোগ নিয়ে ভয় দেখানো চলবে না। খেলার মতো করেই সবটা বোঝাতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম প্লে থেরাপি।
চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, সন্তান হাঁপানিতে আক্রান্ত হলে তার স্কুল কর্তৃপক্ষকেও এ ব্যাপারে জানিয়ে রাখা উচিত। যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে বড় দুর্ঘটনা না হয়। হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে যেহেতু অন্যান্য ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তাই সন্তানকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। তাকেও এই ব্যাপারে বোঝানো দরকার বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাহলে বারবার ভোগান্তি কম হবে (Normal life)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
Leave a Reply