Bangladesh Crisis22: চূড়ান্ত অনাচার! ক্ষোভে পদত্যাগ করতে হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকেও!

bangladesh_f

অনেকেই বলছেন, হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার পর থেকেই জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। বেছে বেছে যেমন মন্দির এবং ধর্মস্থানে অবাধে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘরবাড়িতে, একই সঙ্গে মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে গণপিটুনি এবং খুন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টার্গেট সংখ্যালঘু হিন্দু অথবা বিরোধী রাজনৈতিক কণ্ঠ। সারা বিশ্ব দেখছে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ইউনূসের স্বরূপ। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার হওয়ার পর গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত। আওয়ামি লিগপন্থী জনপ্রতিনিধি, পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পদস্থ কর্তাদের কী করুণ পরিণতি হয়েছে, তাও কারও অজানা নয়। প্রথম খণ্ডে আমরা ১২টি পর্বে তুলে ধরেছিলাম নানা অত্যাচারের কাহিনি। এবার সেসব নিয়েই আমাদের দ্বিতীয় খণ্ডের ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আজ দশম পর্ব।

 

 আতঙ্কের বাংলাদেশে জঙ্গলের রাজত্ব-১০

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসেই পতন হয় হাসিনা সরকারের (Bangladesh Crisis22)। তারপর থেকেই ভুলন্ঠিত হয় গণতন্ত্র। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সর্বত্র চলে হামলা। প্রশ্নের মুখে পড়ে মানবতা (Targeting Minority)। এ নিয়ে ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকা সমেত প্রত্যেক দেশই সরব হয়। বাংলাদেশের মানবতা বিপন্ন নিয়ে  ব্রিটেনের পার্লামেন্টেও প্রশ্ন ওঠে। সেখানকার কয়েকজন সাংসদ এ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis22) সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে ইউনূস সরকারকে হুঁশিয়ারিও দিতে দেখা যায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

লঙ্ঘিত মানবাধিকার 

প্রসঙ্গত, অগাস্ট মাসের পর থেকে বাংলাদেশে শুরু হয় জঙ্গলের রাজত্ব। সেখানে নারী, শিশু, বিরোধী দল ও সংখ্যালঘুদের অধিকার ছিল না বললেই চলে। দলে দলে সংখ্যালঘুরা সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন দেশ ছাড়ার জন্য। একইভাবে কয়েকজন হিন্দু তো নিজেদের জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপই দিয়ে দেন। শুধুমাত্র তাই নয়, বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলির ওপরে হামলা ও সন্ন্যাসীদের ওপর পুলিশি হয়রানির ঘটনা সামনে আসে। সারা বিশ্বের হিন্দুরা সরব হন এমন ঘটনায়। এই আবহে গত ২৫ নভেম্বর সে দেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে। শুধু তাই নয়, ইসকনের একের পর এক শাখাতে হামলা চলতে থাকে। বিচারের নামে প্রহসন শুরু হয় চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি জেলে রয়েই গিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি তাঁর জামিনের আবেদন খরিজ করে দেন চট্টগ্রাম আদালতের বিচারক। এখানেই ওয়াকিবহাল মহল প্রশ্ন তোলে ইউনূসের বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis22) জঙ্গিরা নিরাপত্তা পায়, জঙ্গিদেরকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়। সমালোচনার মুখে পড়েও বিএনপি-জামাতের নেতৃত্বে চলা ইউনূস সরকার কোনওভাবেই চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে থাকা দেশদ্রোহিতার অভিযোগ সরায় না।

পদত্যাগ করেন বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইউনূস সরকারের জমানায় বাংলাদেশের মানবাধিকার। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের এমন মানবাধিকার বিরোধী ঘটনাগুলি যখন ঘটতে থাকে, ঠিক তখনই আবাক করার মতো ঘটনা ঘটে বাংলাদেশের হিউম্যান রাইটস কমিশনে। হিউম্যান রাইটস কমিশন বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis22) একটি স্বশাসিত সংস্থা। বাংলাদেশে ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর, তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কমলউদ্দিন আহমেদ সমেত আরও পাঁচ জন সদস্য ইস্তফা দেন। কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছিলেন যে বাংলাদেশের বেড়ে চলা মানবাধিকার বিরোধী ঘটনাই তাঁদেরকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। মানবাধিকার কমিশনের যে সেখানে কোনও ভূমিকা নেই, তাদের কোনও গুরুত্ব নেই তা কমলউদ্দিন আহমেদ সহ ৫ সদস্যের পদত্যাগেই প্রমাণিত হয়। নিজেদের পদত্যাগপত্রে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য়রা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে জানিয়েছিলেন, কীভাবে বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়েছে এবং প্রশ্নের মুখে পড়েছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা।

কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগেই বেরিয়ে আসে বাংলাদেশের আসল চেহারা 

এতে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়, বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis22) মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকা সমেত বিশ্বের তাবড় দেশগুলি যে অভিযোগ তুলেছিল তা সত্য। বিদেশি শক্তির তরফ থেকে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়, তাতেই সিলমোহর দেয় বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের ৫ সদস্যের পদত্যাগ। বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করাতে প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশে সত্যিই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে কেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সহ সদস্যরা পদত্যাগ করলেন সে বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটে জামাত-বিএনপির নেতৃত্বে চলতে থাকা ইউনূস সরকার।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share