Chhattisgarh: ছত্তিশগড়ে ধর্মান্তরিত ব্যক্তির কবরকে ঘিরে বিতর্ক, পালিত হল বনধও

Chhattisgarh statewide bandh observed over conversion burial dispute

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছত্তিশগড়ে (Chhattisgarh) ধর্মান্তরণ এবং কাঁকর জেলায় ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির কবর দেওয়া(দাফন)-কে ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের (Burial Dispute) প্রতিবাদে ২৪ ডিসেম্বর, বুধবার রাজ্যজুড়ে পালিত হল বনধ। দিনব্যাপী ডাকা এই বনধে সমর্থন জানিয়েছে ছত্তিশগড় চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স।

বনধ পালিত (Chhattisgarh)

বনধের জেরে রাজ্যের অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। সবজি বাজারও বসেনি। বন্ধ ছিল যান চলাচলও। যাঁরা বনধ ডেকেছেন, তাঁরা কাঁকর জেলায় একটি মিছিলও করেন। প্রশাসনের কাছে জমা দেন স্মারকলিপি। কাঁকর জেলার আমাবেড়া এলাকায় এক সরপঞ্চের (গ্রামপ্রধান) বাবার দাফনকে ঘিরে বড়সড় বিতর্ক শুরু হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর এই বনধের ডাক দেওয়া হয়। গত ১৬ ডিসেম্বর বাদে তেওদা গ্রামের সরপঞ্চ রাজমান সালাম গ্রামবাসীদের তীব্র আপত্তি উপেক্ষা করে গ্রামের সীমানার মধ্যেই তাঁরই একটি জমিতে তাঁর প্রয়াত বাবার দেহ দাফন দেন, যা থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত।

গ্রামের সীমানার মধ্যে ওই দাফনে বিতর্ক

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামের সীমানার মধ্যে ওই দাফন পঞ্চম তফসিলের অধীন নিয়মকানুন এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত প্রথাগত রীতিনীতির লঙ্ঘন। স্থানীয়রা সরপঞ্চের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। অভিযোগ, সরপঞ্চ গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়েও দাফন সম্পন্ন করেন। গ্রামবাসীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন এবং দাফন করা দেহটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। মৃতদেহ দাফনের পরের দিন সকালে কবরের ওপর ইটের গাঁথুনি দেখতে পাওয়ার পর গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। ব্যাপক উত্তেজনা দেখা যায় গ্রামে। শেষ পর্যন্ত শুরু হয় সংঘর্ষ, পাথর ছোড়া। স্থানীয় দু’টি গির্জায় ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে। এই সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি জখম হন (Chhattisgarh)। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশকর্মীও ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন শেষ পর্যন্ত ১৮ ডিসেম্বর মৃত ব্যক্তির দেহ কবর থেকে সরিয়ে নেয়।

উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি

২১ ডিসেম্বর এক সাংবাদিক সম্মেলনে সর্ব সমাজের পদাধিকারীরা ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের পদক্ষেপ ছিল বৈষম্যমূলক। তাঁদের দাবি, প্রশাসন প্রথমে গ্রামবাসীদের আবেদন নিতে অস্বীকার করে এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়। এদিকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, বহিরাগতদের আক্রমণে স্থানীয় বাসিন্দারা জখম হয়েছেন। এতে প্রায় ২৪জন জখম হন।গ্রামসভার অনুমতি ছাড়াই ওই ব্যক্তির দাফন করা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চম তফসিলভুক্ত এলাকায় এই ধরনের অনুমতি বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি, অস্থায়ী গির্জাগুলির কার্যকলাপ নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। সর্ব সমাজের সদস্যরা হুঁশিয়ারি দেন, প্রশাসন যদি সর্ব সমাজের অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়, তবে সমাজকে রাস্তায় থেকে আদালত পর্যন্ত নিজের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নামতে বাধ্য হতে হবে।

এর আগে সর্ব সমাজের সদস্যরা ধর্মান্তর ও কাঁকেরের দাফন দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে একদিনের বন্‌ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন। সদস্যরা জানান, এটি এই ধরনের একমাত্র ঘটনা নয়, রাজ্যের অন্যান্য জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল থেকেও একই ধরনের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসছে। তাঁদের অভিযোগ, খ্রিস্টান মিশনারিদের সঙ্গে যুক্ত ধর্মান্তরকারী গোষ্ঠীগুলি পরিকল্পিতভাবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যার ফলে সমাজে অশান্তি ও বিভাজন তৈরি হচ্ছে (Burial Dispute)। এদিকে, সোমবার সরকার কাঁকের জেলার নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে অশোক কুমার রাখেচাকে। প্রাক্তন কাঁকের এসপি ইন্দিরা কল্যাণ এলেসেলারের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। ইন্দিরা কল্যাণ এলেসেলাকে ছত্তিশগঢ় সশস্ত্র পুলিশের সুরগুজা রেঞ্জের ডিআইজির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে (Chhattisgarh)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share