মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশে ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর উদ্বাস্তু বাংলাদেশী হিন্দুদের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) পাশ হয়। এরপর ২০২৪ সালে এই আইনের বাস্তবায়ন শুরু হয়। লোকসভা ভোটের মধ্যেই পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের ভারত সরকার সিএএতে নাগরিকত্ব প্রদান করা শুরু করেছে। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থী উদ্বাস্তুদের মধ্যে বেশ কিছু মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এবার নাগরিকত্ব পেলেন নিউ বারাকপুরের বাসিন্দা।
কেন বাংলাদেশ থেকে আসতে হয়েছিল (CAA)?
নাগরিকত্ব পেয়ে হিন্দু যুবক বলেন, “আমি দেবপ্রসাদ গাইন, নিউ বারাকপুর লেনিনগড়ে থাকি। ২০০৫ সালে আমি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে চলে এসেছিলাম। ২০০৪ সালে তৎকালীন বাংলাদেশে বিএনপির নেতৃত্বে একটি সরকার ক্ষমতায় আসে। এই সরকার এসে দেশে ব্যাপক হিংসা শুরু করে। নির্বিচারে শুরু হয় হিন্দু নিধন। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হিন্দুদেরকে ফাঁসিয়ে অত্যাচার করা হত। নিজের জন্ম ভিটায় ছিল না নিজের ধর্মপালনের অধিকার। হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের চরমপন্থী হিসাবে চিহ্নিত করে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হত। তাই আমি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু পালিয়ে আসার পরও আমাদের সুখ ছিল না। সবসময় মনে হতো এই বুঝি ভারতের পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে চলে যাবে। এই বুঝি আবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এই রকম দিনের পর দিন ২০ বছর ধরে আমরা আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (CAA) মাধ্যমে আমাদের সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই।”
আরও পড়ুনঃ "নাগরিকত্বের কাগজ হাতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে, মাথা উঁচু করে বাঁচব", বললেন নদিয়ার বিকাশ
নাগরিকত্ব পাওয়ার পর কী বললেন?
নাগরিকত্ব পেয়ে এই হিন্দু যুবক আরও বলেন, “ভারত সরকার আমাদের জন্য একটা সুন্দর ব্যবস্থা চালু করেছে। এই ব্যবস্থা হল সিএএ (CAA)। এর মাধ্যমে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান, পার্সিদের জন্য নাগরিকত্বের বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই পাঁচটি ধর্মের মানুষ, যাঁরা কেবলমাত্র ইসলাম ধর্মপ্রধান দেশ বাংলদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে নিজেদের অস্তিত্বের সঙ্কটের জন্য ভারতে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আমরা ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার হয়েছি। রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে নদীতে সাঁতার কেটে সীমান্ত পার হয়ে এই পশ্চিমবঙ্গে এসেছি। সেই দিন কিছুটা মুক্তি পেলেও আজ নাগরিকত্ব পেয়ে সম্মান ফিরে পেলাম। তবে অনেকে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। আদতে কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল হবে না। সিএএতে আমি আবেদন করেছি কিন্তু আমার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড বাতিল হয়নি। আমরা এবার সরকারি মান্যতায় নাগরিকত্ব পেয়েছি। সব কাগজপত্র ঠিক থাকবে, শুধু অতিরিক্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় সনদপত্র পাওয়া যাবে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours