মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জাতীয় সড়কগুলিতে টোল ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে ভারত (AI Based Tolling System)। ২০২৬ সালের শেষাশেষি ন্যাশনাল হাইওয়েতে সম্পূর্ণ স্যাটেলাইট ও এআই-নির্ভর টোল আদায় ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রী নিতিন গডকরি। সরকারের এহেন উদ্যোগের ফলে টোল প্লাজায় অপেক্ষার সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে (India) যাবে, সাশ্রয় হবে জ্বালানি, কমবে দূষণ এবং সামগ্রিকভাবে লজিস্টিকস ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে বলেই আশা বিশেষজ্ঞদের।
মাল্টি-লেন ফ্রি ফ্লো (AI Based Tolling System)
এই নয়া ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে মাল্টি-লেন ফ্রি ফ্লো (MLFF) টোলিং সিস্টেমের মাধ্যমে। এটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যাটফর্ম, যার সাহায্যে যানবাহন টোল পয়েন্টে না থেমে বা গতি কমানো ছাড়াই চলাচল করতে পারবে। এই উন্নত এএমপিএম টোলিং সিস্টেমে ফাস্ট্যাগ, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রিডার, অটোমেটিক নম্বর প্লেট রিকগনিশন (ANPR) ক্যামেরা এবং এআই-ভিত্তিক বিশ্লেষণ একসঙ্গে ব্যবহার করা হবে। এর ফলে যানবাহনের নির্ভুল শনাক্তকরণ ও টোল আদায় নিশ্চিত হবে এবং টোল পয়েন্টে যান চলাচল অবাধ থাকবে।
সড়ক পরিবহণ
২০২৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় জমা দেওয়া একটি লিখিত সরকারি উত্তরের তথ্য অনুযায়ী, সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রক ইতিমধ্যেই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মাল্টি-লেন ফ্রি ফ্লো পদ্ধতিতে টোল আদায়ের পাইলট প্রকল্প চালু করেছে (India)। এমএলএফএফ (MLFF) কাঠামোয় গ্যান্ট্রিতে স্থাপিত আরএফআইডি রিডার এবং এএনপিআর ক্যামেরা একসঙ্গে কাজ করে। ফলে একটি দ্বৈত সুরক্ষিত ও অত্যন্ত নির্ভুল টোল আদায় ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়। ফাস্ট্যাগ ও নম্বরপ্লেট শনাক্তকরণ প্রযুক্তির মাধ্যমে যানবাহন শনাক্ত করা হয় এবং কোনও শারীরিক বাধা বা টোল বুথ ছাড়াই ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে টোল ফি বাবদ ধার্য করা টাকা কেটে নেওয়া হয় (AI Based Tolling System)।
বাড়বে গাড়ির গতি
গডকরি জানিয়েছেন, একবার এই ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হলে যানবাহনগুলি টোল বুথ দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতেও চলাচল করতে পারবে। এটি বর্তমান ব্যবস্থার থেকে বড় পরিবর্তন, যেখানে টোল বুথ পার হওয়ার সময় গাড়িকে থামতে ও আবার চালু করতে হয়।রাজ্যসভা রিপোর্টের সঙ্গে যুক্ত পরিশিষ্ট অনুযায়ী, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টোল প্লাজায় ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে, গুজরাটের এনএইচ-৮-এর ভরুচ–সুরাট অংশে চোরিয়াসি, এনএইচ-৪৪-এর পানিপথ–জালন্ধর অংশে ঘারাউন্ডা, দিল্লি–জয়পুর করিডরে মনোহরপুরা, শাহজাহানপুর ও দৌলতপুরায় এবং দিল্লির আরবান এক্সটেনশন রোড–২ করিডরের মুন্ডকায়।
সরকার বাধাহীন টোল আদায় ব্যবস্থার বিপুল সুফলের ওপরও ভরসা করছে। মন্ত্রকের করা মূল্যায়ন অনুযায়ী টোল বুথে সারি দেওয়ার প্রয়োজন তুলে দিলে জ্বালানি ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটবে এবং একই সঙ্গে কমবে যানবাহন থেকে নির্গত দূষণের পরিমাণও (AI Based Tolling System)। গডকরির দাবি, জ্বালানি অপচয় কমানো এবং টোল ফাঁকি রোধের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তিটি প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা (India) সাশ্রয়ে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, পণ্যের নির্বিঘ্ন চলাচল লজিস্টিকস দক্ষতা বাড়াবে, যার ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে। টোল বুথ ও ব্যারিয়ার না থাকায় পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত খরচও কমবে বলেই আশা। সেক্ষেত্রে কর্মী নিয়োগ ও পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে আর অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে না (AI Based Tolling System)।

Leave a Reply