মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘নীলের ঘরে দিয়ে বাতি, জল খাওগো পুত্রবতী’! শুধু পুত্র নয়, পুত্র-কন্যা সবার জন্যই এই ব্রত রাখেন বাংলার মায়েরা। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন প্রতি বছর পালিত হয় নীল ষষ্ঠী (Nil Sasthi 2025)। বাংলার ১২ মাসের ১৩ পার্বনের মধ্যে অন্যতম পার্বন হল নীল ষষ্ঠীর ব্রত। এটি বাংলার একটি নিজস্ব লোকায়ত ধর্মীয় উত্সব। এই বছর আজ, রবিবার, ১৩ এপ্রিল পালিত হবে নীল ষষ্ঠী।
কেন নাম নীল ষষ্ঠী
নীল ষষ্ঠীর (Nil Sasthi 2025) পরের দিন চৈত্র সংক্রান্তি। তার পরের দিন বাংলা নববর্ষের শুরু। পুরাণ অনুসারে, নীল ষষ্ঠীর দিনেই মহাদেবের সঙ্গে নীল চণ্ডিকার বিয়ে হয়। নীলকণ্ঠ, মহাদেবের সঙ্গে এদিন নীল চণ্ডিকা বা নীলাবতীর বিয়ের কারণেই এই দিনটি নীলষষ্ঠী নামে পরিচিত। আর এই ষষ্ঠীর পুজোকে নীল পুজো বলা হয়। গ্রামীন অঞ্চলে চৈত্র সংক্রান্তিতে চরক পুজো উপলক্ষে গাজনের মেলাও বসে।
কীভাবে পালন করা হয় নীল ষষ্ঠী
চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সারাদিন নির্জলা উপবাস রাখতে হয়। সন্ধেবেলা শিবলিঙ্গে জল ঢেলে মহাদেবের পুজোর প্রসাদ মুখে দিয়ে উপবাস ভাঙা হয়। উপোস ভাঙার পরও এদিন ফল, সাবু ইত্যাদি ছাড়া ময়দার তৈরি খাবারই খেতে হয়। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন পঞ্জিকা অনুসারে ষষ্ঠী তিথি নয়। তা হলেও এদিন নীল ষষ্ঠীর ব্রত পালন করা হয়। নীল ষষ্ঠীতে (Nil Sasthi Brata) ষষ্ঠী দেবীর সঙ্গেই সন্তানের মঙ্গল কামনা করে মহাদেবের আরাধনা করা হয়ে থাকে। শিবের মাথায় বেলপাতা, ফুল ও একটি ফল ছুঁয়ে রাখতে হয়। অপরাজিতা বা আকন্দ ফুলের মালা পরিয়ে, সন্তানের নামে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করা হয়।
নীল ষষ্ঠী ২০২৫ পুজোর সময়
১৩ এপ্রিল ২০২৫, বাংলা ক্যালেন্ডারে ৩০ চৈত্র ১৪৩১ রবিবার পালিত হবে নীল পুজো। প্রতিপদ পড়েছে রবিবার ভোর ৫টা ৫২ মিনিটে। পঞ্জিকা অনুসারে নীলকণ্ঠ শিবের পুজো করুন কাল সকাল ৯টা ৩২ মিনিটের মধ্যে। তবে দেবীর ষোড়শ যাত্রার মধ্যে অন্যতম হল নীলযাত্রা। দেবী নীলাবতীর পুজো করতে হবে সন্ধেবেলা। নীলের পুজোয় অবশ্যই পঞ্চামৃত নিবেদন করতে হবে। এই পঞ্চামৃত হল দুধ, দই, ঘি, মধু ও চিনি। এর সঙ্গে একটু কালো তিল ও সিদ্ধি পাতা মিশিয়ে দিতে পারলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া গঙ্গাজল, আকন্দ ফুল, ধুতরো, নীল অপরাজিতা ও কাঁচা আম দিয়ে এ দিন মহাদেবের পুজো করুন।
Leave a Reply