মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এসআইআর-এর (SIR) খসড়া তালিকায় নাম না থকালে কোনও চিন্তা নেই। কী কী করবেন আগেই জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। মঙ্গলবার বের হচ্ছে খসড়া তালিকা। প্রত্যকের মনে মনে একটা চিন্তা ঘুরছে নাম থাকবে তো। আর নাম না থাকলে কী হবে? খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল অবজারভার সুব্রত গুপ্ত একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে। তিনি সাফ জানান, “খসড়া তালিকায় যদি নিজেদের নাম না দেখেন তাহলে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। অনলাইনেই ফর্ম ৬-এ আবেদন করতে পারেন। আবেদনের পর আপনাকে হেয়ারিং-এ ডাকা হবে। এরপর উপযুক্ত কাগজ দেখিয়ে সঙ্গে সঙ্গে রোলে তুলে দিতে হবে। যদি কেউ এখানকার নাগরিক হন তাহলে ভয়ের কিছু নেই। উপযুক্ত কাগজ দেখালেই নাম উঠে যাবে ভোটার লিস্টে।”
৮১ হাজার বুথের ৫৮ লক্ষ নাম বাদ (SIR)
সুব্রত গুপ্ত বলেন, “এসআইআর (SIR) হল নির্বাচনী ভোটার তালিকার (Election Commission) নিবিড় সংশোধনের কাজ। যে কোনও কাজ অল্প সময়ের মধ্যে করতে হলে সেখানে চাপ একটু বেশিই থাকে। এই রকম চাপে আমরাও আছি। সাধারণ একজন সরকারি কর্মচারি যে রকম চাপে থাকে এই চাপ অনেকটাই বেশি। তবে আবার এটাও নয় যে কাজ চাপের কারণে থমকে গিয়েছে। আর যদি তাই হতো তাহলে ৮১ হাজার বুথের ৫৮ লক্ষ নাম বাদ দিতে হতো না। এই কাজ করতে তো হয়েছে।”
সুব্রত গুপ্ত আরও বলেন, “কমিশন যখন আমাকে নিয়োগ করেছে তখন সাফ নির্দেশ ছিল, কোনও অবৈধ ভোটারের নাম যেন তালিকায় না থাকে। আর অপর দিকে কোনও বৈধ ভোটারের নাম যেন তালিকার বাইরে না থাকে। আমাদের কাজ এটাই, এই কাজটাই দায়িত্ব নিয়ে করছি। এই জন্যই বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন। দুই মাস খসড়া তালিকা থাকবে পোর্টালে। একই সময়ে শুনানিও চলবে। লোকে আবেদন করতে পারবেন। এর মধ্যে যদি কোনও ভুল ভ্রান্তি ধরা পড়ে তাহলে মানুষ আবেদন করতে পারবেন। তারপর তাঁর নাম আসবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে হেয়ারিং-এ কতজনকে ডাকা হবে তা নিয়ে এখনও কোনও নাম ঠিক হয়নি। ৩০ লক্ষ মানুষের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই, নিঃসন্দেহে তাঁদের শুনানিতে ডাকা হবে। বাকি আর কাদের ডাকা হবে সেই নির্দেশের অপেক্ষা করছি। কমিশনের নির্দেশ ছাড়া তা বলা সম্ভবপর নয়।”
কীভাবে চেনা যাবে বাংলাদেশি
সুব্রত গুপ্ত অবৈধ বাংলাদেশি ভোটার বা জাল ভোটারদের ক্ষেত্রে বলেছেন, “কেউ অবৈধ ভোটারের লেবেল মাথায় লাগিয়ে ঘুরছে এমনটা নয়। আমি বলতে পারি ১ কোটির বেশি ভুলভ্রান্তি মিলে মিশে রয়েছে। আরও অন্য রকম কিছু ভুলভ্রান্তিও রয়েছে। তবে অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে শুনানি না হলে আপাতত কিছু বলা সম্ভবপর নয়। কেউ বাংলাদেশি তা হেয়ারিং-এ বলা সম্ভব। কমিশন (Election Commission) উপযুক্ত তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করবে।”
শুনানি পর্ব শুরু হবে আগামী সপ্তাহে
আবার কমিশন (Election Commission) সূত্রে বলা হয়েছে, খসড়া তালিকায় (SIR) নাম থাকলেই যে চূড়ান্ত হবে এমনটা নয়, যদি কোনও অসঙ্গগতি থাকে তাহলে সকলকেই ডাকা হবে। আনম্যাপড থাকা সকলকেই শুনানিতে ডাকা হবে। খসড়া তালিকায় নাম থাকলেই সব গেল এমনটাও নয়। সব নথি থাকা সত্ত্বেও তালিকায় যদি নাম না ওঠে তাহলেও ভয় নেই। ৬ নম্বর ফর্ম জমা দিতে হবে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুনানি পর্ব শুরু হতে আগামী সপ্তাহ লাগবে। ইতিমধ্যেই সব বুথে এএসডি তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে। সিইও ওয়েবসাইডে এই তথ্য পাওয়া যাবে।
৫৮,২০,৮৯৮ জনের নাম বাদ
গত ২৭ অক্টোবর এই রাজ্যে এসআইআরের ঘোষণা করেছিল কমিশন। ওই নির্ধারিত সময় পর্যন্ত রাজ্যে মোট ভোটার ছিল ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯। কমিশন জানিয়েছে মোট ভোটারের নামেই এনুমারেশন ফর্ম ছাপানো হয়েছিল। প্রত্যেকের কাছেই ফর্ম নিয়ে গিয়েছিলেন বুথ স্তরের অফিসাররা। রবিবার পর্যন্ত মোট ভোটার থেকে নাম বাদ পড়েছে ৫৮,২০,৮৯৮ জনের। বাকিদের নাম খসড়া তালিকায় ওঠার কথা। আজ খসড়া লিস্ট বের হলেই সব স্পষ্ট হবে।

Leave a Reply