India Bangladesh Relation: ‘গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা খর্ব’, বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ হওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

India Bangladesh relation awami league ban reaction

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইউনূস সরকারের আমলে একাধিক কাজকর্ম নিয়ে এর আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। এবার শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগকে (Awami League) নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে গর্জে উঠল নয়াদিল্লি (India Bangladesh Relation)। বিদেশমন্ত্রকের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এভাবে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উদ্বেগজনক। ভারতের স্পষ্ট বার্তা – সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ছাড়া রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা গণতন্ত্র-বিরোধী।

ভারতের প্রতিক্রিয়া (India Bangladesh Relation)

মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আওয়ামি লিগকে প্রক্রিয়া ছাড়াই নিষিদ্ধ করার ঘটনা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিসর সংকুচিত হওয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের পক্ষে ভারত। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা খর্ব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আশা করি, বাংলাদেশে দ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন করা হবে। গণতন্ত্র ফিরবে।” বাংলাদেশ সরকারের আইনি উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও হাসিনা উচ্ছেদ আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

বাংলাদেশের বিবৃতি

ভারতের ওই প্রতিক্রিয়ার পর বাংলাদেশের তরফে মহম্মদ ইউনূসের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, “আমরা দেখেছি, কীভাবে আমাদের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করেছে আওয়ামি লিগ, রাজনৈতিক পরিসর কম করে দিয়েছে, গত ১৫ বছরের শাসনকালে আমাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার কারণেই এই দলটিকে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন ছিল।” অন্তর্বর্তী সরকারের (India Bangladesh Relation) তরফে আরও বলা হয়, “আমরা দেখেছি, কীভাবে ভোটের নামে প্রহসন করা হয়েছে এতদিন। আমরা দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাই। নির্বাচন একেবারেই আমাদের নিজস্ব বিষয়। আমাদের নির্বাচন, সার্বভৌমত্বকে সবাই সম্মান করি, এবং এটাই আমাদের কাম্য।”

ছেঁদো যুক্তি!

পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারত। তার জেরে শুরু হয় ভারত-পাক সংঘাত। এই আবহে গত শনিবার মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে আওয়ামি লিগের কার্যকলাপ।’ ইউনূস সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, বাংলাদেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই (Awami League) আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থেই আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে (India Bangladesh Relation)।

শাহবাগ ব্লকেড

জুলাই আন্দোলনের জেরে গত বছরের ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন আওয়ামি লিগ সুপ্রিমো শেখ হাসিনা। আশ্রয় নেন ভারতে। তার পর থেকেই সে দেশে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠতে শুরু করে। আওয়ামি লিগের ছাত্র শাখা বাংলাদেশ ছাত্র লিগকে কয়েক মাস আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশের নয়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবিতে টানা তিন দিন ধরে কর্মসূচি শুরু করেছিল। গত শুক্রবার থেকে শাহবাগ ব্লকেড নামে একটি কর্মসূচিও শুরু করেছে তারা (India Bangladesh Relation)। সেই আবহেই শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাকিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা-সহ অন্যান্য যা যা বিষয়ে বিচার চলছে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ থাকবে আওয়ামি লিগের সব রকমের কার্যক্রম। এদিনের ওই বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনের সংশোধনীও অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুসারে ট্রাইব্যুনাল কোনও রাজনৈতিক দল, তার শাখা সংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকেও এবার থেকে শাস্তি দিতে পারবে (Awami League)।

একাধিকবার শিরোনামে এসেছে বাংলাদেশ

সম্প্রতি ওয়াকফ অশান্তি ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার আগে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে ছিল বাংলাদেশ। কারণ সেই সময় বাংলাদেশে মৌলবাদীদের দাপট চরমে ওঠে। যখন যা ইচ্ছে, তাই করে তারা। হিন্দুদের ওপর আক্রমণও করতে শুরু করে। ভাঙতে থাকে মাজারও (India Bangladesh Relation)। বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল টিমের খেলা বন্ধ করে দেয়। এই মৌলবাদীরা ক্রেন-বুলডোজার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িও ভাঙে। তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়। দেদার লুটপাট করতে শুরু করে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়িতেও তাণ্ডব চালায়। বাংলাদেশজুড়ে আওয়ামি লিগ নেতাদের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। সব দেখে শুনেও মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ইউনূস! যারা তাণ্ডব চালাচ্ছে, তাদের গ্রেফতার না করে, যাদের ওপর হামলা হচ্ছে (Awami League), তাদের ধরতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করে ইউনূস সরকার। সেই ইউনূস সরকারই এবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিল আওয়ামি লিগকে।

ক্ষমতার চিটে গুড়ে পা আটকে গিয়েছে খোদ ইউনূসেরও (India Bangladesh Relation)!

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share