মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২৫ মে ভারতের সশস্ত্র সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জন্মদিন (Rash Behari Bose)। মহান এই বিপ্লবীর কর্মকাণ্ড এককথায় রোমাঞ্চকর। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবীর সব্যসাচী চরিত্র যেন রাসবিহারী বসু নিজেই। লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর বোম নিক্ষেপ হোক অথবা দেশে সোনা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা। সবেতেই নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এরপর ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে জাপানে চলে যান ১৯১৫ সালের ১২ মে। এক্ষেত্রে তিনি নিজের পরিচয় দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয় হিসেবে। নাম নেন পি এন টেগোর। জানা যায়, খিদিরপুর ডক থেকে ‘সানুকি মারু’ নামক জাহাজে চড়ে তিনি জাপানের উদ্দেশে রওনা হন।
রাসবিহারী বসু এনিয়ে কী লিখেছিলেন?
গবেষকদের মতে, ১৯১৪ সালেই তাঁর বিদেশ যাওয়ার সমস্ত রকমের ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল (Indian Freedom Fighter)। তখন ব্রিটিশ সরকার তাঁকে গ্রেফতার করতে উঠেপড়ে লেগেছিল বলে জানা যায়। একাধিক বড় বড় রেলস্টেশনে তাঁর ছবি টাঙানো হয়েছিল। রাসবিহারীকে (Rash Behari Bose) ধরিয়ে দিলে মোটা টাকার পুরস্কার ঘোষণা হয়েছিল। তখন পুরস্কারের অঙ্কটা নেহাত কম ছিল না। এই সময়ই ঠিক হয় তিনি নবদ্বীপে থাকবেন। নিরাপদে আত্মগোপন করবেন। এনিয়ে রাসবিহারী (Rash Behari Bose) লিখেছেন, “নবদ্বীপ একটি তীর্থস্থান। অথচ সাধারণতঃ সেখানে তত বেশী লোক যাওয়া আসা করে না। কিছু দিন সেখানে থাকাই ঠিক হইল। তাছাড়া সেই সময় আমাদেরই একজন লোক সেখানে ছিল, তাহার মতে নবদ্বীপ খুব নিরাপদ স্থান। এই সমস্ত ঠিক করিয়া… তখন একজন ভট্টাচার্য্য ব্রাহ্মণের মতন ছিলাম। পৈতে তো ছিলই, তার উপর একটি টিকিও ছিল… পশুপতি যেমন নির্ভীক তেমনি বুদ্ধিমান। তাহাকে সঙ্গে করিয়া বরাবর ট্রেনে নবদ্বীপ গিয়া হাজির। ঠাকুর (ত্রৈলোক্য মহারাজ) সেখানে ছিল। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করিয়া একটি বাড়ি ভাড়া করিবার জন্য খুঁজিতে বাহির হইলাম। নবদ্বীপের একপ্রান্তে এক বৈরাগীর এক বাড়ী ছিল। ২টি ঘর। সেটি ভাড়া করিলাম। সেখানে প্রায় একমাসের ওপর ছিলাম।”
বাড়িটির বর্তমান অবস্থান
জানা যায়, ওই বাড়িটি নবদ্বীপের ব্রজানন্দ গোস্বামী রোডে অবস্থিত। এমনটাই দাবি করে শ্রীমদনমোহন মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরে ঢুকেই ডান হাতের প্রথম ঘরটিতেই থাকতেন রাসবিহারী (Rash Behari Bose), এমনটাই বলছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। এমনকি বিপ্লবী যে টেবিল-চেয়ার ব্যবহার করতেন, যে টেমির আলোয় লিখতেন, সে সবও তাঁরা সংরক্ষিত হয়ে রয়েছে। তদানীন্তন মন্দির-প্রধান প্রভুপাদ প্রাণগোপাল গোস্বামীই তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
Leave a Reply