মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের আন্তর্জাতিক জনসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের (India Fishermen in Bangladesh) আটক করেছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ অঞ্চল থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েন ওই ৩৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। এর জেরেই তাঁদের আটক করেছে বাংলাদেশের নৌবাহিনী। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁদের ব্যবহৃত দু’টি ট্রলার ‘এফবি ঝড়’ ও ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী ৩৮’। এই ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
খারাপ আবহাওয়ার কারণে ভুল
পশ্চিমবঙ্গের (India Fishermen in Bangladesh) দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থেকে এই মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। খারাপ আবহাওয়া এবং ন্যাভিগেশন সমস্যার কারণে তাঁরা ভুলবশত বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে পড়েন বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সময় বাংলাদেশের একটি টহল জাহাজ তাঁদের আটক করে মংলা বন্দরে নিয়ে যায়। পরে, ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে স্থানীয় আদালতে তোলা হয়। এখনও পর্যন্ত তাঁদের মুক্তি নিয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি। ভারতীয় কূটনৈতিক মহল ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দ্রুত মুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা
সুন্দরবন মেরিটাইম ফিশারম্যান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের প্রতিনিধি সতীনাথ পাত্র জানিয়েছেন, “এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, গত বছরের অক্টোবরে একই ধরনের ঘটনায় প্রায় ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করে তিন মাস পর মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে (India Fishermen in Bangladesh) সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার কারণে দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক ইতিমধ্যেই চাপে রয়েছে। এই ধরনের গ্রেফতারের ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রেখেই কূটনৈতিক স্তরে সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে। ঘটনাটি আবারও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত ও সামুদ্রিক সমন্বয় সংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। খারাপ আবহাওয়া ও অনিশ্চিত যন্ত্রপাতির কারণে এই ধরনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। তাই দুই দেশের মধ্যে একটি মানবিক ও স্পষ্ট সমুদ্রনীতি তৈরি প্রয়োজন। তা না হলে, উপকূলবর্তী অসংখ্য পরিবারের জীবন-জীবিকা ভবিষ্যতেও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
Leave a Reply