Bangladeshi Hindu Got Land: উত্তরপ্রদেশে ১০,০০০ বাংলাদেশি হিন্দু পরিবারকে জমির মালিকানা দেবে সরকার

Yogi_Adityanath

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ও তার আগে বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১০,০০০ হিন্দু উদ্বাস্তু পরিবারকে জমির মালিকানা প্রদান করবে উত্তরপ্রদেশ সরকার। দীর্ঘ ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অনিশ্চয়তা ও আইনি অস্বীকৃতির মধ্যে বসবাস করা এই পরিবারগুলো অবশেষে জমির স্থায়ী মালিকানা পেতে চলেছে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই কথা জানিয়েছেন।

আইনি স্বীকৃতি, ন্যায় বিচারের প্রশ্ন

পিলভিত, রামপুর, বিজনৌর ও লখিমপুর খেরি জেলার বিভিন্ন গ্রামে এই পরিবারগুলো ১৯৬০ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে এসেছিলেন। কাগজে-কলমে জমি বরাদ্দ পেলেও কখনোই আইনি মালিকানা পায়নি এই পরিবারগুলো। প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা, পুরনো আইন এবং দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণে তারা ছিন্নমূল অবস্থাতেই ছিল। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করেন। তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন — বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করে, দীর্ঘদিন বসবাসকারী ও জমি চাষ করা পরিবারগুলোকে মালিকানা সনদ প্রদান করতে হবে এবং রেভিনিউ রেকর্ড করতে হবে। যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “এটা শুধুমাত্র জমির মালিকানা নয় — এটা ন্যায়বিচার, মানবতা ও জাতীয় দায়িত্বের প্রশ্ন। এই মানুষগুলো বাইরের কেউ নয়, তারা ভারতেরই সন্তান, যারা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছিল।”

ইতিহাসের প্রেক্ষাপট

১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও ইসলামপন্থী দুষ্কৃতীদের হাতে বহু হিন্দু পরিবার হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়। সেই সময় বহু হিন্দু পরিবার ভারতের উত্তরপ্রদেশে আশ্রয় নেয়। ভারত সরকার তাদের সাময়িক পুনর্বাসন করলেও চূড়ান্ত আইনি স্বীকৃতি ও জমির মালিকানা দেয়নি। অনেক পরিবার আজও সরকারি রেকর্ডে মালিকানা পায়নি, কিছু জমি বন বিভাগের অধীনে থেকে গিয়েছে। কিছু জমি দখল হয়েছে বা মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ বলেন, “আইন মানুষের সেবার জন্য, মানুষকে দুর্ভোগে ফেলার জন্য নয়। যদি পুরনো আইন বাতিল হয়, তাহলে আমরা নতুন পথ খুঁজে বের করব। যে পরিবারগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই জমিতে চাষ করছে, বসবাস করছে — তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।”

সামাজিক প্রতিক্রিয়া

উদ্বাস্তু পরিবারগুলো এই পদক্ষেপকে “নতুন ভোর” বলে বর্ণনা করেছে। পিলভিতে বসবাসকারী এক প্রবীণ উদ্বাস্তু বলেন, “৫০ বছর ধরে এই জমিতে চাষ করেছি, ঘর বানিয়েছি, সন্তানদের পড়াশোনা করিয়েছি — কিন্তু কখনো কাগজ পাইনি। আজ মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিলেন। আজ আমরা আর উদ্বাস্তু নই — আমরা ভারতের নাগরিক।” এই উদ্যোগ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)-এর আদর্শকেও বাস্তব রূপ দেয় — যেখানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রদানের কথা বলা হয়েছে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share