PM Modi: প্রশান্ত মহাসাগরে শক্তিবৃদ্ধি ভারতের, ফিজির সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর

India Fiji to strengthen cooperation in defence says pm modi

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে এবং শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হল ভারত ও ফিজি (India Fiji)। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ও ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিটিভেনি রবুকার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কৃষি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়। রবিবার তিন দিনের সফরে ভারতে পৌঁছন রাবুকা। সেখানে তিনি মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের পরিস্থিতি, বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক এবং অন্যান্য আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক (PM Modi)

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিয়েছে। এর মধ্যে ফিজির অর্থনীতি ও সেনাবাহিনী তুলনামূলকভাবে বড়। চিনের প্রভাবের মোকাবিলা করতেই ফিজির সঙ্গে সম্পর্ক পোক্ত করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদির ভারত। রাবুকার সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে ফিজির সামুদ্রিক নিরাপত্তা উন্নত করতে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামে সহযোগিতা দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “আমরা সাইবার নিরাপত্তা ও তথ্য সুরক্ষায় আমাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।” রাবুকা বলেন, “উভয় দেশই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে চায়। ভারত–ফিজির সম্পর্ক থেকে ফিজি কেবলই উপকৃত হতে পারে।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত ফিজিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সহযোগিতার কেন্দ্র হিসেবে দেখে। আমাদের দুই দেশই মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধশালী ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে।” তিনি বলেন, “রাবুকার ‘শান্তির সাগর’ ধারণা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং ভবিষ্যতমুখী একটি দৃষ্টিভঙ্গি।”

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে পদক্ষেপ

দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, এ বছর ফিজি সফরে একটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানো, সুভায় ভারতের মিশনে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশের পদ সৃষ্টি করা এবং ফিজির সেনাবাহিনীকে দু’টি সমুদ্র অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়া। ফিজি-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে অন্যান্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গেও সমন্বয় সাধন করবেন। এছাড়াও ভারত ফিজিতে একটি সাইবার সুরক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে সাহায্য করবে। বিদেশ মন্ত্রকের (দক্ষিণ বিভাগ) সচিব নীনা মালহোত্রা জানান, দু’টি দেশের মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে (PM Modi)। এ বিষয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে জুলাই মাসে। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা মূলত ফিজির সামুদ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর কেন্দ্রীভূত, যা সক্ষমতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে করা হচ্ছে। কিছু সরঞ্জামের অনুরোধ এসেছে, আমরা সেগুলি বিবেচনা করছি।” যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রবুকা ফিজির একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল সুরক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং ভারতের কাছ থেকে নিরাপত্তা চাহিদা পূরণের জন্য সাহায্যের আশ্বাসকে স্বাগত জানান। তিনি ভারতের একটি যুদ্ধজাহাজের পরিকল্পিত বন্দর সফরকেও স্বাগত জানান, যা দুই দেশের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতা আরও জোরদার করবে (India Fiji)।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতা জোরদার করা

জানা গিয়েছে, দুই দেশের প্রধানই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতা জোরদার করার ব্যাপারে সম্মত হন এবং এপ্রিল মাসে দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত জঙ্গি হামলাকে কঠোর ভাষায় নিন্দে করেন। ওই হামলায় বেছে বেছে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, তাঁরা সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড প্রত্যাখ্যান করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা একমত যে সন্ত্রাসবাদ পুরো মানবজাতির পক্ষে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী রবুকা এবং ফিজি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি (PM Modi)।”

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ সহযোগিতা ফোরাম

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে ভারত ২০১৪ সালে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ সহযোগিতা ফোরাম (FIPIC) চালু করে। এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিতে বাস করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষের একটা বড় অংশ। ফিজিতে অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ভারতের একাধিক উন্নয়নমূলক (India Fiji) উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে সাসটেনেবল কোস্টাল ও মহাসাগর গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং আইটি কেন্দ্রও। সে দেশে গড়ে তোলা হবে ১০০ বেডের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালও (PM Modi)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share