মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আট দিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘ ৯ মাস ইন্ট্যারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে কাটান সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Willams)। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতাকে মহাশূন্যে প্রেরণা দিয়েছিল ভগবদ্গীতা (Bhagvad Gita)। পৃথিবীর বাইরে এই দীর্ঘ সময় নিজের শিকড় ও ধর্মীয় বিশ্বাসকে ধরে রেখেছিলেন সুনীতা। নিজের সঙ্গে একটি গণেশ মূর্তি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সুনীতা জানান, ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় প্রতীক তাঁকে মানসিক শান্তি দেয় এবং নিজের লক্ষ্যের প্রতি আরও মনোনিবেশ করার শক্তি জোগায়।
গীতার বার্তা ও আধ্যাত্মিক শক্তির আশ্রয়
প্রথম মহাকাশ অভিযানে (২০০৬ সালে) সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Willams) ভগবদ্গীতার (Bhagvad Gita) একটি কপি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, গীতার কর্মযোগের বার্তা জীবনের প্রতিটি সংগ্রামে জয়ী হতে সাহায্য করে। মহাশূন্যের নিঃসঙ্গতা ও চাপের পরিস্থিতিতেও গীতার শিক্ষা তাঁকে মানসিকভাবে শক্তিশালী রেখেছে। ২০১২ সালে দ্বিতীয়বার মহাকাশ ভ্রমণের সময় তিনি শিবের একটি ছবি এবং ওঁ প্রতীক সঙ্গে রেখেছিলেন। মহাশূন্যে এই আধ্যাত্মিক শক্তির সংস্পর্শে থাকায় তিনি আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধরে রাখতে পেরেছিলেন।
গণেশের প্রতি বিশ্বাস
২০২৪ সালের অভিযানে যাওয়ার সময়ও সুনীতা গণেশের একটি মূর্তি তাঁর সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, গণেশের আশীর্বাদ তাঁকে সমস্ত বাধা থেকে রক্ষা করে। মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ৯ মাস মহাকাশে আটকে থাকলেও গণেশের প্রতি তাঁর বিশ্বাস অটুট ছিল। তিনি মনে করেন, গণেশ তাঁর জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক এবং সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের শক্তি।
দোল মাতার আশীর্বাদ
সুনীতা উইলিয়ামসের (Sunita Willams) পৈতৃক গ্রাম ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরের কাছে ঝুলসান। এখানে অবস্থিত কুলদেবী দোল মাতার মন্দিরের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস। প্রথম অভিযানের আগে তিনি এই মন্দির থেকে প্রসাদ হিসেবে একটি চুনারি নিয়ে গিয়েছিলেন। মহাকাশযাত্রায় যাওয়ার আগে তাঁর নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য গ্রামে দোল মাতার মন্দিরে টানা ৯ মাস ধরে বিশেষ প্রার্থনা চলেছে। মন্দিরে অখণ্ড জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত করা হয়েছিল এবং তাঁর নিরাপত্তার জন্য ধারাবাহিক প্রার্থনা করা হয়েছিল।
মহাকাশে ভরসা আধ্যাত্মিকতা
সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Willams) শুধু একজন বিজ্ঞানী বা মহাকাশচারী নন, বরং তিনি আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী এক সাহসী নারী। মহাকাশের নিঃসঙ্গতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তিনি আধ্যাত্মিক বিশ্বাসকে শক্তির উৎস হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সুনীতার কথায়, এই ধর্মীয় উপকরণ তাঁকে মহাকাশের নির্জন পরিবেশে মনের জোর ধরে রাখতে সাহায্য করে।
Leave a Reply