Indigenous LRSAM: দেশীয় ‘এস-৪০০’! নিজস্ব ত্রিস্তরীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করছে ভারত?

Air Defence System: একবার স্বদেশীয় ত্রিস্তরীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি হলে, বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের তালিকায় ঢুকে পড়বে ভারত...
LRSAM-400_(1)
LRSAM-400_(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগলো ভারত। এবার দেশের আকাশসীমার (Air Defence System) সুরক্ষার্থে, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি নিজস্ব অত্যাধুনিক দূরপাল্লার মিসাইল তৈরি করছে ভারত। জানা যাচ্ছে, রুশ নির্মিত ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই নতুন এই লং রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল (Indigenous LRSAM) বা দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা হবে ৪০০ কিলোমিটার।

কেন নতুন দূরপাল্লার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম প্রয়োজন?

বর্তমানে, দেশের আকাশসীমাকে রক্ষা (Air Defence System) করার জন্য রাশিয়া থেকে কেনা ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমকে চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে মোতায়েন করেছে ভারত। ৪০০ কিমি দূরত্বের মধ্যে যে কোনও টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম এই অত্যাধুনিক মিসাইল। বিশ্বের সেরা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমগুলির অন্যতম রাশিয়ার এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই মিসাইলের তিনটি স্কোয়াড্রন ইতিমধ্যেই ভারতে পৌঁছে গিয়েছে। তাদের মতোয়েনও করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, বাকি আরও ২টি সিস্টেম কবে আসবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, স্বদেশীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (Air Defence System) নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা বাড়াতে এবং নিজস্ব ক্ষমতা দেশকে রক্ষা করার লক্ষ্যেই এই বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ভাবনাচিন্তা করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মিসাইলের (Indigenous LRSAM) নির্মাণ-পর্ব কার্যকর হলে, ৪০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যে কোনও শত্রু বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ধ্বংস করা অত্যন্ত সহজ হয়ে যাবে। এর ফলে, দেশের আকাশসীমা সুরক্ষা অনেক বেশি সুরক্ষিত ও নিশ্ছিদ্র হবে। 

এই সিস্টেম তৈরি হলে কতটা লাভ ভারতের?

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এই স্বদেশীয় ত্রিস্তরীয় ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম (Indigenous LRSAM) তৈরির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। হয়ত শীঘ্রই এই মিসাইল সিস্টেম উৎপাদনের সবুজ সঙ্কেত মিলতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রজেক্টে আনুমানিক ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার (আনুমানিক ২০ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা) খরচ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, একবার এই মিসাইল সিস্টেম তৈরি হলে, তা হবে অত্যন্ত গর্বের। ভারত বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের তালিকায় ঢুকে পড়বে, যাদের স্বদেশীয় ত্রিস্তরীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (Air Defence System) রয়েছে। 

আকাশসীমার সুরক্ষায় বর্তমানে ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি, ভারতের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমের কয়েকটি নির্মাণ-পর্বে ও কয়েকটি গবেষণা ও পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছে। তবে, কোনওটাই ‘এস-৪০০’ সমকক্ষ নয়। ‘মৈত্রী কুইক রিয়্যাকশন এসএএম’ (QRSAM) নিয়ে পরীক্ষা চলছে। এটির সাফল্যের হার অত্যন্ত ভালো। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা এই মিসাইল নিয়ে ভীষণই আশাবাদী। এটি তৈরি করছে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। এছাড়া, ভারতের আস্তিনে রয়েছে ‘আকাশ’, ‘ত্রিশূল’, ‘আকাশ-এনজি’। এছাড়া রয়েছে ‘অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স’ মিসাইল যা ১০ কিমি পর্যন্ত শত্রু-টার্গেটকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এটি ভারতীয় বায়ুসেনা ব্যবহার করে।

কী থাকবে এই সিস্টেমে?

জানা যাচ্ছে, দেশীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে (Air Defence System) তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মজুত থাকবে, যা মূলত তিন ধরনের দূরত্বের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। এক-একটি সিস্টেমে ৩ ধরনের পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে। একটি দূরপাল্লার— যা আনুমানিক ৪০০ কিমি দূরত্বে যে কোনও লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতে পারবে। দ্বিতীয় স্তর হলো মাঝারি পাল্লার, যা ৭০ কিমি পর্যন্ত বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে। তৃতীয় তথা শেষ স্তর হবে স্বল্পপাল্লার। যা ৩৫ কিমি পর্যন্ত যে কোনও বস্তুকে ধ্বংস করতে পারবে। ইতিমধ্যে, ইজরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে মাঝারি পাল্লার সারফেস টু এয়ার মিসাইল (MRSAM) প্রযুক্তি তৈরির কাজ চলছে। যা ৭০ কিমি দুরত্বে যে কোনও লক্ষ্যকে আঘাত হানতে সক্ষম হবে। প্রতিটা এলআরএসএএম সিস্টেমের (Indigenous LRSAM) অঙ্গ হিসেবে থাকবে তিন ধরনের মিসাইল, রেডার, কন্ট্রোল সিস্টেম, ভার্টিকাল লঞ্চার ও দু-ওয়ে কমিউনিকেশান লিঙ্ক।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles