তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ঘুম থেকে উঠে কিংবা নিত্যদিনের ঘরোয়া কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ পা কিংবা কোমরে যন্ত্রণা অনুভব হয়। অনেকেই হঠাৎ এই পা, ঘাড় কিংবা কোমরের পেশিতে খিঁচ (Muscle cramps) অনুভব করেন। যার ফলে দিন কয়েক ধরে ভোগান্তি চলে। স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়। এমনকী মারাত্মক ব্যথার জন্য অনেক সময় হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেকের ঘন ঘন এই ধরনের পেশিতে টানের মতো সমস্যা দেখা দেয়। আর তখন বাড়তি সতর্কতা জরুরি। বারবার দেহের বিভিন্ন পেশিতে টান, জানান দেয় শরীরে একধিক ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সতর্ক না হলে বড় বিপদ হতে পারে।
কেন বারবার পেশিতে খিঁচ ধরে? (Muscle cramps)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পেশিতে খিঁচ বা টান অনুভব হয় মূলত দূর্বলতার কারণে। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরের ক্ষমতার বাইরে একটানা পরিশ্রম করলে, পেশি দুর্বল হয়ে যায়। আর তখন পেশিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমা হয়। আর তার জেরেই পেশিতে টান বা খিঁচের মতো সমস্যা দেখা দিতে থাকে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে খেলোয়াড়দের প্র্যাক্টিসের সময় পেশিতে টান ধরে। লাগাতার অক্লান্ত পরিশ্রমের জেরেই এই সমস্যা হয়। দুর্বলতার পাশপাশি শরীরে জলের অভাব পেশিতে খিঁচের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরের ৭০ শতাংশ জল থাকে। সেই জলের সাহায্যেই মানুষের শরীরের একাধিক অঙ্গ সক্রিয় থাকে। পেশির সচলতা বাড়াতেও শরীরের ভিতরের জল সাহায্য করে। শরীরে এই পর্যাপ্ত পরিমাণ জল না থাকলেই পেশিতে নানান সমস্যা দেখা যায়। তার জেরেই কোমর, ঘাড় কিংবা হাতে-পায়ে খিঁচের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে, এর পাশপাশি শরীরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে কিনা সেদিকে নজরদারি জরুরি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরে এই উপাদানের ঘাটতি হলেই দুর্বলতা দেখা দেয়। পেশি শক্তি কমে এবং খিঁচ হতে পারে (Muscle cramps)।
কীভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, লাগাতার কাজ করবেন না। দিনে যতই কাজের চাপ থাকুক না কেন, কাজের ফাঁকে অন্তত আধ ঘণ্টা অন্তর কিছুটা সময় বিশ্রাম জরুরি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই কাজ শুরুর আগে কিছুটা সময় শারীরিক কসরত জরুরি। তবেই পেশি সচল থাকবে। পেশিতে টান ধরার (Muscle cramps) সমস্যাও কমবে।
নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরে জলের ঘাটতি না হলে পেশিতে টান ধরার ঝুঁকিও কমে।
জল খাওয়ার পাশপাশি ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি ১২ জাতীয় খাবার নিয়মিত খাওয়া দরকার। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত লেবুর রস, ডিম খাওয়া দরকার। এই ধরনের খাবারে শরীরে এনার্জির জোগান পাওয়া যায়। দুর্বলতা কম হয়। ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি ১২ চাহিদা পূরণ হয়। ফলে, পেশিতে টান ধরার সমস্যাও কমে।
নিয়মিত যে কোনও ধরনের বাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের খাবার থেকে শরীর সহজেই পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। এর ফলে শরীরের পেশি মজবুত হয়। খিঁচের ঝুঁকিও কমে (Muscle cramps)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Leave a Reply