Pahalgam Attack: সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানকে মাত দিলেন মোদি!

Pahalgam attack pm modi delivers a knock out punch on iwt

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Attack) প্রতিবাদে গত ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে দেয়। পহেলগাঁওয়ের ওই জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক নেপালি সহ মোট ২৮ জন। হামলার পরিকল্পনা করেছিল ‘দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট’ নামে একটি সংগঠন। এটি হাফিজ সৈয়দের নেতৃত্বাধীন ‘লস্কর-ই-তৈবা’র একটি ছায়া সংগঠন। হাতে নয়, পহেলগাঁওকাণ্ডের পর ভারত যে তাদের ‘জলে’ মারবে, তা বোধহয় কল্পনাও করেননি পাকিস্তানের কর্তাব্যক্তিরা। মোদি সরকারের সিদ্ধান্তে তাঁরা যারপরনাই অবাক। প্রশ্ন হল, কেন?

মুম্বই হামলা (Pahalgam Attack)

এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর। ওই দিন শুরু হয় মুম্বই হামলা, চলে টানা তিন দিন। লস্কর-ই-তৈবার ১০ জন সদস্যের তাণ্ডবে নিহত হন ১৬৬ জন। তখন কেন্দ্রের ক্ষমতায় মনমোহন সিংয়ের সরকার। সেই ঘটনার পরেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা হয়নি। সিন্ধু জল চুক্তি যে স্থগিত করা যায়, এবং এভাবেও যে পাকিস্তানকে ‘শিক্ষা’ দেওয়া যায়, তা স্বপ্নেও ভাবেননি কংগ্রেসের মাতব্বররা। যার কারণে আক্ষরিক অর্থেই পেয়ে বসেছিল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের ধারণা হয়েছিল, এবারও ভারত কঠোর কোনও পদক্ষেপ করবে না, কেবল প্রতিবাদ এবং দোষারোপ করেই রণে ভঙ্গ দেবে। পাকিস্তানের অনেকেই ভাবছিল, ১৬৬ জনকে গুলি করে খুন করার পরেও যখন ভারত জোরালো কোনও পদক্ষেপ করেনি, তখন মাত্র ২৭ জন হিন্দু হত্যায় কী আর করতে পারে! তারা বুঝতেই পারেনি, মোদির নীতি আর মনমোহনের নীতিতে আকাশ-পাতাল ফারাক।

সংসদে হামলা

মুম্বই হামলার সাত বছর আগে ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছিল বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার। সেই হামলার নেপথ্যেও ছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া (Pahalgam Attack) হয়েছিল। সিন্ধু জল চুক্তি (IWT) স্বাক্ষরিত হয় ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, পাকিস্তানের করাচিতে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের তরফে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আয়ুব খান। চুক্তির সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাঙ্কের কর্তারা।

নেহরুকে সতর্ক করেছিলেন বাজপেয়ী

১৯৬০ সালের ৩০ নভেম্বর সংসদে নেহরুর পাকিস্তানকে দেওয়া এই নয়া ‘উপহার’ নিয়ে বিতর্ক হয়। সেই সময় ছত্রিশ বছর বয়সি বলরামপুরের সাংসদ অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর ভাষণে তথ্য, পরিসংখ্যান এবং যুক্তিজাল বিস্তার করে নেহরু সরকারকে কার্যত তুলোধনা করেন। সেই সময়ই বাজপেয়ী নেহরুকে এই বলে সতর্ক করেছিলেন যে, পাকিস্তানের প্রতি এই উদারতার খেসারত দিতে হবে ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। মোদি সরকার চুক্তিটি স্থগিত করায়, নেহরু জমানায় নেওয়া কিছু আত্মঘাতী পদক্ষেপ এখন হয়তো উল্টে যাবে, অন্তত আংশিকভাবে হলেও।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচ পদক্ষেপ

পহেলগাঁওকাণ্ডের পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর প্রথম সিদ্ধান্তটি হল সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা। এটি মোদির তরফে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কৌশলগত পদক্ষেপ (Pahalgam Attack)। পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য মোদি সরকারের কূটনৈতিক নীতির একটি মূল স্তম্ভ হিসাবে আইডব্লিউটিকে ব্যবহার করা তাঁর ধারাবাহিক কৌশল। এই প্রথম নয়, বরং এটি মোদির পঞ্চমবারের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সময়ে আইডব্লিউটি ‘হাতিয়ার’ ব্যবহার (PM Modi)।

আইডব্লিউটি অস্ত্র প্রয়োগ

প্রশ্ন হল, আগের চারটি তাহলে কখন ছিল? এটা বোঝার জন্য মোদির তিনটি মেয়াদজুড়ে কাজকর্ম পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। তাঁর প্রথম মেয়াদে মোদি পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দুবার এই চুক্তির উল্লেখ করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সরাসরি আর একবার এটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে ২০২৪ সালের অগাস্ট ও এবার ২০২৫ সালের এপ্রিলে এটি ব্যবহার করা হল (Pahalgam Attack)। বুধবার পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিনটি মেয়াদে পঞ্চমবারের মতো আইডব্লিউটি অস্ত্র প্রয়োগ করলেন। এই পাঁচটির মধ্যে কমপক্ষে তিনবারই বড় ধরনের জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির প্রসঙ্গ উঠেছে। বুধবারের পদক্ষেপটি আইডব্লিউটির ক্ষেত্রে মোদি সরকারের পঞ্চম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আগের ঘটনাগুলিতেও প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে এই চুক্তির কথা উল্লেখ করেছিলেন। এটি একটি ক্রমবর্ধমান কৌশল, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ আগেরটির চেয়ে এক ধাপ উচ্চতর (PM Modi)।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরি সেক্টরে পাকিস্তানি হামলার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “রক্ত এবং জল একই সঙ্গে বইতে পারে না” (Pahalgam Attack)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share