PM Modi: একসঙ্গে গাড়িতে সফর দুই রাষ্ট্রপ্রধানের, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতি টানতে কথা মোদি-পুতিনের!

pm modi and putin talk ukraine finding solution end war quickly

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন (Ukraine) যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখোমুখি হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi), তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়’। তারপর মস্কোভা নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে গ্যালন গ্যালন জল। বন্ধ হয়নি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যদিও জারি রয়েছে শান্তি প্রচেষ্টা। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে শান্তি প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে সোমবার পুতিনকে মোদি বলেন, “ভারত আশা করে সব পক্ষই এই প্রক্রিয়ায় গঠনমূলকভাবে এগিয়ে আসবে।”

ডিসেম্বরে ভারতে আসবেন রুশ প্রেসিডেন্ট (PM Modi)

দিন দুয়েক আগেই রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ভারতে আসবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। চিনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের পর পুতিনের সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রীর। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে, ডিসেম্বরেই ভারত সফরে আসবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করছি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এটি সম্প্রতি পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের প্রতি ইঙ্গিত মোদির। তিনি বলেন, “আমরা আশা করি যে সব পক্ষই এই প্রক্রিয়ায় গঠনমূলকভাবে এগিয়ে যাবে। দ্রুত যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এটাই সমগ্র মানবজাতির আহ্বান।”

একই গাড়িতে মোদি-পুতিন

এদিন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে দুই রাষ্ট্রপ্রধান একই গাড়িতে করে শীর্ষ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যান। পরে উভয় পক্ষের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে প্রধানমন্ত্রী পুতিনের সঙ্গে তাঁর নিজের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “এসসিও সম্মেলনের কার্যক্রম শেষে, প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং আমি একসঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ভেন্যুতে যাই। তাঁর সঙ্গে আলোচনা সবসময়ই গভীর চিন্তাশীল হয়।” সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজেই চেয়েছিলেন যে এসসিও সম্মেলনের ভেন্যু থেকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের স্থান রিটজ-কার্লটন হোটেলে যেতে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে এক সঙ্গে সফর করবেন। এজন্য তিনি প্রায় ১০ মিনিট মোদির জন্য অপেক্ষাও করেন (Ukraine)। সূত্রের খবর, “এরপর দুই নেতা এক সঙ্গে তাঁর গাড়িতে ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকের ভেন্যুতে পৌঁছানোর পরেও তাঁরা প্রায় ৪৫ মিনিট গাড়িতেই আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। এর পর দুই নেতা পূর্ণাঙ্গ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন, যা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে (PM Modi)।”

ভারতের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে আমেরিকা। তারপর এই প্রথম মুখোমুখি হলেন মোদি-পুতিন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রুশ প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি এমন একটা সময়ে এসেছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যের নিন্দে করেছে। ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধে অর্থায়ন করার জন্য নয়াদিল্লিকে কাঠগড়ায় তোলেন। গত মাসে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ওই জ্বালানি কেনার জন্য তাকে শাস্তি দেওয়া। আমেরিকার চাপ সত্ত্বেও ভারত মস্কো থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি কেনা বন্ধ করেনি। সাফ জানিয়ে দিয়েছে (Ukraine), তাদের জ্বালানি আমদানি নীতিকে জাতীয় স্বার্থই পরিচালনা করবে। নয়াদিল্লি মার্কিন শুল্ককে অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অমূলক বলেও আখ্যা দিয়েছে (PM Modi)।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ আখ্যা

এদিকে, গত সপ্তাহেই ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলে দেগে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “শান্তির রাস্তা আংশিকভাবে হলেও নয়াদিল্লির মধ্যে দিয়েই যায়। ভারত যা করছে তার কারণে আমেরিকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।” অন্যদিকে, ভারত তার কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের অবস্থান দৃঢ়ভাবে বজায় রেখেছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমার রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘তাস’কে বলেন, “ভারতীয় কোম্পানিগুলি যেখানে সর্বোত্তম চুক্তি পাবে, সেখান থেকেই (তেল) কিনতে থাকবে।” ভারতের দাবি, চিন এবং ইউরোপও সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। কিন্তু ওয়াশিংটন বিশেষভাবে নয়াদিল্লিকেই নিশানা করছে। রাশিয়াও ট্রাম্পের শুল্ক নীতির সমালোচনা করেছে। জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের নিজস্ব বাণিজ্যিক অংশীদার বেছে (Ukraine) নেওয়ার অধিকার রয়েছে (PM Modi)।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন এসসিও সম্মেলনের জন্য চিনের তিয়ানজিনে পৌঁছন, তখনই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “এই (ইউক্রেন) যুদ্ধের অবসান অবশ্যই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শুরু হতে হবে।” জেলেনস্কি এও (Ukraine) বলেন, “ভারত প্রয়োজনীয় চেষ্টা করতে এবং রাশিয়া ও অন্যান্য নেতার কাছে যথাযথ বার্তা পৌঁছে দিতে প্রস্তুত (PM Modi)।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share