মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “আমি যদি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে না থাকতাম, তাহলে মর্গে থাকতাম।” মর্মস্পর্শী কথাগুলি যিনি বললেন, তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান। কোচবিহারে কনভয়ে হামলার ঘটনায় গর্জে উঠলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “এর শেষ দেখে ছাড়ব।” ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে আসা উদয়ন গুহকে (Udayan Guha) আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমি মমতাকে হারানো লোক। সত্যিকারের সনাতনী হয়ে থাকলে, এর হিসেব আমি নেব। বদলও হবে, বদলাও হবে। উদয়ন গুহ, তোমার সঙ্গে আমার হিসেব হবে।” তিনি বলেন, “গতকাল গভীর রাতে রাজ্যপাল, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজিপিকে মেল করে বিচারপতি মান্থার ২টি অর্ডার জানিয়ে সমস্ত তথ্য দিয়ে এসেছি। বাগডোগরা থেকে সকাল ১০টায় কোচবিহারের উদ্দেশ যাত্রা করি। শ্রাবণ মাস, বাবা মহাদেবের আশীর্বাদ, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এসেছি।”
মমতাকে হারিয়েছি, তাই এত রাগ (Suvendu Adhikari)
এর পরেই তিনি বলেন, “মমতাকে হারিয়েছি। তাই ওদের এত রাগ। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে এসেছি। বাংলাদেশ থেকে হু হু করে লোক ঢোকাচ্ছে।” নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, “যেই খাগড়াবাড়ি ঢুকেছি, অমনি উন্মত্ত হায়নার দল, উদয়ন গুহের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমি যদি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে না থাকতাম, তাহলে আমার মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে ফুল দিতে হত আপনাদের। প্রত্যক্ষ খুনি যদি উদয়ন গুহ হন, তাহলে পরোক্ষ রাজীব কুমার। এর শেষ দেখে ছাড়ব।” এর পরেই তিনি বলেন, “আমি মমতাকে হারানো লোক। সত্যিকারের সনাতনী হয়ে থাকলে, এর হিসেব আমি নেব। বদলও হবে, বদলাও হবে। উদয়ন গুহ, তোমার সঙ্গে আমার হিসেব হবে।” এসআইআর প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “কোনও হিন্দুর সমস্যা হবে না, কোনও রাজবংশীরও সমস্যা হবে না। একটাও বাংলাদেশি মুসলমান, রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় থাকবে না।”
শুভেন্দুর কনভয়ে হামলা
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিধায়কদের ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার কোচবিহারের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতার। পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরায় পৌঁছন তিনি। পরে রওনা দেন কোচবিহারের উদ্দেশে। শুভেন্দুর কনভয় খাগড়াবাড়িতে পৌঁছতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে জুতো ছোঁড়া হয়, গো ব্যাক স্লোগানও দেওয়া হয়। শুভেন্দুর গাড়ির কাচও ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “গাড়ির সামনের কাচ ভাঙতে পারেনি। পাথর দিয়ে পিছনের কাচ ভেঙেছে। এটা তো সাধারণ গাড়ি নয়। কনভয়ে হামলা নয়, মেরে ফেলার জন্যই পাথর ছুড়েছিল। বুলেটপ্রুফ গাড়ি না থাকলে, কিছু থাকত নাকি (Udayan Guha)!”
জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান শুভেন্দু
জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান শুভেন্দু। তা সত্ত্বেও কীভাবে রাজ্যের বিরোধী দলের নেতার কনভয়ে হামলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের দাবি, পুলিশি নিরাপত্তা ঢিলেঢালা ছিল। কোচবিহারে হামলার মুখে পড়ার পর শুভেন্দু অধিকারী, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজিপিকে চিঠি দিচ্ছেন। নিরাপত্তা নিয়ে আদালতের নির্দেশ মনে করিয়েই চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সোমবারই শুভেন্দুর আইনজীবী অনীশ মুখোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের ডিজিপি, রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে চিঠি দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশ মেনেই কর্মসূচি করেছেন শুভেন্দু। কিন্তু সেই নির্দেশ ঠিকঠাক কার্যকর হয়নি বলেই অভিযোগ। জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তার অধিকারী একজন রাস্তা গিয়ে গেলে কীভাবে চারপাশে তৃণমূল কর্মীরা জমায়েত করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।
ভাইপোর নির্দেশে মেরে ফেলার জন্য হামলা
এদিন শুভেন্দু বলেন, “ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মেরে ফেলার জন্য হামলা চালানো হয়েছিল। ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসপি দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, উদয়ন গুহ আক্রমণ করেছেন।” রাজ্যের (Udayan Guha) বিরোধী দলনেতার দাবি, এই হামলার পেছনে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের এনে কাঠের ডান্ডা ও পাথর দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতেই তাঁর কনভয়ে ইট-পাথর ছোড়া হয়েছে।
কী বললেন নিশীথ প্রামাণিক
বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “যখন কোচবিহারে আমাদের (Suvendu Adhikari) গাড়ি ঢোকে, তখন খুব ভালো করেই জানতাম, উদয়নবাবুর এই ধরণের পরিকল্পনা আছে। উনি স্থানীয় একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পাশে বসে রয়েছেন। সেখানেই আমাদের কনভয় থামানো হয়।” তিনি বলেন, “আমরা বারংবার আমাদের দেহরক্ষীদের বলে দিয়েছিলাম, ওরা যা করে করুক, গাড়ি ভেঙে ফেলে, ফেলুক। আপনারা গাড়ি থেকে নামবেন না। বা কোনও ধরণের প্ররোচনায় পদক্ষেপ করবেন না। তা-ই হয়েছে। একেবারে গাড়ির ভিতর থেকে ভিডিও আছে (Suvendu Adhikari)।”
Leave a Reply