Vladimir Putin: আগামী সপ্তাহেই ভারতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা?

India Russia relation delhi rolls out warm welcome for Russian president vladimir putin

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের তারিখ ঘোষণা করা হল। ক্রেমলিনকে উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর ভারতে আসবেন পুতিন। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দেশে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও এক সরকারি বিবৃতিতে পুতিনের সফর নিশ্চিত করেছে। সফরকালে পুতিন নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাশিয়ার রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাঁর সম্মানে রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হবে।

কী কী নিয়ে আলোচনা

বিদেশ মন্ত্রকের মতে, এই সফর দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের ‘বিশেষ ও সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ আরও মজবুত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। নেতারা ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন এবং আগামী বছরের জন্য সহযোগিতার নতুন দিশা নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতেও আলোচনা হবে। ২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই বৈঠকে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য, মহাকাশ, বিজ্ঞানসহ একাধিক ক্ষেত্রের সহযোগিতাও গুরুত্ব পাবে বলে সরকারি মহলে আশা করা হচ্ছে।

কৌশলগত সহযোগিতার বন্ধন

মোদি ও পুতিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক, কৌশলগত সহযোগিতার বন্ধন আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদী নয়াদিল্লি। এছাড়া, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথা হতে পারে। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। ফলে মার্কিন-ভারত বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। তবে আমেরিকার এই পদক্ষেপ সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যনীতিতে পরিবর্তন করেনি নয়াদিল্লি। এর ফলে দুই দেশের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। আমেরিকার বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে সরব হয়েছে ক্রেমলিনও। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতাই আলোচনার কেন্দ্রে

সূত্র জানিয়েছে, পাঁচটি অতিরিক্ত এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এয়ার-ডিফেন্স স্কোয়াড্রন ক্রয়ের ভারতীয় প্রস্তাব—যা ‘অপারেশন সিনদূর’-এ অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত—এই বৈঠকের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই কার্যকর এস-৪০০ সিস্টেমগুলোর জন্য অতিরিক্ত ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহের বিষয়টিও আলোচনায় থাকতে পারে। এছাড়া রাশিয়ার পঞ্চম প্রজন্মের সু-৫৭ যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত করেনি ভারত। মস্কো এই বিমানকে আমেরিকান এফ-৩৫-এর সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে জোরালোভাবে তুলে ধরছে বলে জানা গিয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধও থাকবে আলোচনায়

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিকবার শান্তির পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহার সঙ্গে ফোনে আলাপ করে ইউক্রেন পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেন সংঘাতের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁরা কথা বলেছেন। যুদ্ধের দ্রুত অবসান ও টেকসই শান্তির প্রতি ভারতের সমর্থনের কথাও জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। উল্লেখ্য, পুতিন শেষবার ২০২১ সালে নয়াদিল্লি সফর করেছিলেন, এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি গত বছর জুলাই মাসে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মস্কো গিয়েছিলেন। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের এই ধারাবাহিক উচ্চস্তরের যোগাযোগই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তার প্রমাণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share