Air India Plane Crash: ‘‘ঈশ্বরই রেখেছেন, নইলে…’’! বিশ্বাসই হচ্ছে না বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত যাত্রীর

air india plane crash at ahmedabad airport lone survivor explained the horrible moments

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাখে হরি মারে কে! এই কথা ফের একবার সত্য প্রমাণিত হল আমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় (Air India Plane Crash)। বিশ্বাসকুমার রমেশ, এয়ার ইন্ডিয়ার অভিশপ্ত এআই১৭১ বিমানের একমাত্র যাত্রী, যিনি বেঁচে রয়েছেন। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বাসকুমার রমেশ নামে ওই যাত্রী জানালেন, এয়ার বিমানটি ওড়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই গোটা ঘটনাটি ঘটেছে। একটা জোরালো শব্দ হয়। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান ছিল, বিমান দুর্ঘটনায় সম্ভবত সকল আরোহীই নিহত। কিন্তু পরে আমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএ মালিক জানান, এক জন জীবিত রয়েছেন। পুলিশ তাঁকে খুঁজে পেয়েছে। ১১এ আসনের ওই যাত্রী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর চিকিৎসা চলছে।

চারপাশে শুধুই মৃতদেহ

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট নাগাদ, গুজরাটের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার বিমানটি (Air India Plane Crash)। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেক অফের ৪ মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। ১.২৫ লক্ষ লিটারেরও বেশি জ্বালানি ছিল তখন বিমানে। বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ছাদে ভেঙে পড়ার পরই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে জ্বলে যান সকলে। বছর চল্লিশের রমেশ লন্ডনেই থাকেন। গুজরাটে এসেছিলেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। গতকাল দাদা অজয় কুমার রমেশের সঙ্গে তিনি লন্ডনে ফিরে যাচ্ছিলেন। সেই যাওয়া আর হয়নি। রমেশ বসেছিলেন জানলার ধারে ১১এ সিটে। ইমার্জেন্সি এক্সিটের ঠিক পাশেই বসায়, বিমানটি ভেঙে পড়তেই ছিটকে বেরিয়ে যান বিশ্বাস। তাতেই রক্ষা পান। রক্ষা পাননি দাদা। তবে ২৪২ জনের মধ্যে একমাত্র তিনিই বেঁচে, এ কথা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না। হাসপাতালের বিছানা থেকে শুয়ে দুর্ঘটনার পরের মুহূর্ত বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আমার চারপাশে শুধু মৃতদেহ ছিল। বিমান টুকরো টুকরো হয়ে আমার চারিদিকে পড়েছিল। হঠাৎ কেউ একজন আমায় টেনে তুলল আর অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে গেল।”

ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম

গুজরাটের সিভিল হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রমেশ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর বুক, চোখ ও পায়ে আঘাত রয়েছে। এমন বিপর্যয় ঘটতে চলেছে, তা কি বিমানে বসে আঁচ করতে পেরেছিলেন রমেশ? উত্তরে তিনি বলেন, “টেক অফের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে জোরে একটা শব্দ হয়। তারপরই প্লেন (Air India Plane Crash) ক্র্যাশ হয়ে গেল। সব কিছু এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। বুঝতেই পারিনি। যখন জ্ঞান ফেরে, উঠে দেখি, চারদিকে ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে লাশ। ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। উঠে দাঁড়ানোর পরেই পালাতে শুরু করেছিলাম আমি। সেই সময় কেউ একজন আমাকে ধরে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দেন। তার পর ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করেই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”

ডিএনএ নমুনার প্রয়োজন

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু। তিনি জানিয়েছিলেন, বিমানের সকল আরোহীই নিহত দুর্ঘটনায় (Air India Plane Crash)। ঠিক তার পরেই সংবাদ সংস্থা এএনআই আমেদাবাদের সিপিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, গোটা ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন এক জনই। সিপি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। যে হেতু লোকালয়ে বিমান ভেঙে পড়েছে, তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’’ বিমানটি যে বহুতলে ভেঙে পড়েছে, সেটি ছিল বিজে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-পড়ুয়াদের হস্টেল। স্থানীয়দের দাবি, ওই হস্টেলে থাকেন ৫০ জন চিকিৎসক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিমান ভেঙে পড়ায় ওই হস্টেলের পাঁচ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া গোটা বিমানের ভিতরে থাকা যাত্রীদের দেহের এতটাই খারাপ অবস্থা যে শনাক্ত করতে ডিএনএ নমুনার প্রয়োজন। তাই যাত্রীদের পরিবারের কাছে ডিএনএ নমুনা চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share