Sukanta Majumdar: ‘‘ব্রিটিশ আমলের দমন-পীড়ন’’, চাকরিহারা শিক্ষক সুমনের গ্রেফতারিতে গর্জে উঠলেন সুকান্ত

Sukanta Majumdars Remarks regarding ssc jobless teachers Suman Biswas Arrest

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এসএসসি ভবন অভিযানের আগেই চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাসকে আটক করার ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধলেন বিরোধী দল বিজেপির নেতা সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। সুমন বিশ্বাসের আটককে ‘ব্রিটিশ আমলের দমন-পীড়ন’ বলে তোপ দেগেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। অনেকেই বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আসলে দুর্নীতিগ্রস্তদের পক্ষে, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

কী বললেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)?

মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, “এরকম নির্লজ্জ এবং দু’কানকাটা সরকার এবং প্রশাসন আমরা আগে কোনও দিনও দেখিনি। যেভাবে এই ২৬ হাজার লোকের চাকরি গেল, শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের লোভের জন্য, লালসার জন্য। এদের উচিত ছিল মাথা নিচু করে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। এই যে একের পর এক শিক্ষকের অবস্থা খারাপ হচ্ছে, একজন আদিবাসী শিক্ষকের মৃত্যু ঘটল, আমার মনে হয় এটা মার্ডার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক মার্ডার। সেই ভদ্রলোকের জীবন যাওয়ার পরেও যখন যোগ্য শিক্ষকরা তাঁদের চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য যখন আন্দোলনে নেমেছেন, সেই গণতান্ত্রিক শান্তিপ্রিয় আন্দোলনকে যেভাবে এই সরকার দমন-পীড়ন করছে, ব্রিটিশ আমলে স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্দোলনকে এভাবে দমন-পীড়ন করা হত। স্বাধীনোত্তর ভারতে এ ধরনের দমন-পীড়ন আমরা দেখিনি।”

ভোরেই সুমন বিশ্বাসের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ

প্রসঙ্গত, এদিনই এসএসসি ভবন অভিযানের ডাক দেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একটা বড় অংশ। অভিযানের শুরু হওয়ার আগেই আটক করা হয় চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাসকে (Suman Biswas)—এমনই অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, আদিসপ্তগ্রাম স্টেশন থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ। অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন যে সুমন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে আটক করা হয়েছে। এর আগে আজ ভোরেই আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক সুমন বিশ্বাসের ব্যান্ডেলের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। তাঁর পরিবার বলছে, ‘ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ পুলিশ এসে বাড়িতে তল্লাশি চালায়,’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলেছে সুমনের পরিবার “চাকরি না পেয়ে প্রতিবাদ জানানো কি অপরাধ?”

কী বলছেন সুমন বিশ্বাসের ভাই

সুমন বিশ্বাসের ভাই সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, “দাদার এক বন্ধু ফোন করলেন। আদিসপ্তগ্রামে বাড়ি। তাঁর সঙ্গে হয়ত দেখা করে কলকাতা যাওয়ার ভাবনা-চিন্তা করেছিলেন। তিনি হয়ত যেতে দেননি। সে ব্যাপারটা আমি বলতে পারব না। কারণ, কাল রাতের পর আর ফোন হয়নি দাদার সঙ্গে। এখন এই মুহূর্তে খবর পেলাম, আদিসপ্তগ্রাম স্টেশন থেকে দাদা হয়ত আন্দোলনের জন্য যাচ্ছিলেন ট্রেন ধরবে বলে। তখন এসে ধরল। যখন ধরছে দাদাকে কোনও কথা বলতে দেয়নি। সুমন বিশ্বাসকে কোনও কথা বলতে দেয়নি। যখন জিজ্ঞাসা করছে, আপনার কোন থানা থেকে? কোনও সদুত্তর না দিয়ে তুলে নিয়ে চলে গেল। এবার কোন থানায় গেছে, আমার দাদার বন্ধু এখন বিভিন্ন থানায় বাইক নিয়ে ঘুরছে, কোন থানায় নিয়ে গেল। আমরা কি করব? ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে যোগ্য চাকরি পাওয়াটা কি তাঁর অপরাধ? আমরা কার কাছে যাব? এই সরকারের কর্মচারী হয়ে যদি এই সরকারের কাছে ধর্ষিত হতে হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব?”

কী বলছেন সুমন বিশ্বাস (Suman Biswas)?

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির কারণে বাতিল হয়েছে ২০১৬-এর এসএসসির গোটা প্য়ানেল! চাকরি হারিয়ে রাস্তায় বসেছেন যোগ্য শিক্ষকরাও। এই আবহেই যোগ্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে সোমবার ১৭ অগাস্ট এসএসসি ভবন অভিযানের ডাক দেয় চাকরিহারা শিক্ষকদের একটা বড়ো অংশ। সুমন বিশ্বাস বলছেন, “বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে বলা হয়েছে কারা নাকি ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করতে চায়। এই ধরনের কোনও বক্তব্য়ের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এসএসি ভবন অভিযান হবেই। শেষ সময় পুলিশ প্রশাসন ভয় পেয়ে আমাদের আন্দোলনকে ভেঙেচুরে তুবড়ে দেওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা করছে কি না সেটা সময় বলবে।” শুধু সুমন বিশ্বাসই নন, এসএসসি অভিযানে যোগ দিতে আসা আরও দুই চাকরিহারাকেও করুণাময়ী থেকে আটক করেছে পুলিশ। চাকরিহারাদের একের পর এক আটক ও গ্রেফতারের ঘটনায় আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত নেন, আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখা হবে। তবে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন—সোমবার আন্দোলন স্থগিত থাকলেও তাঁরা নিজেদের দাবি থেকে এক ইঞ্চিও সরবেন না।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share