Suvendu Adhikari: ডিসেম্বরে ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ, থাকবেন ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী, ঘোষণা শুভেন্দুর

Suvendu Adhikari Announce Mega Event Five Lakh Voices to Chant Gita at Brigade

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দু’বছর আগে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে হয়েছিল ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’। লোকসভা ভোট ঘোষণার কয়েক মাস আগেই সেই অভিনব কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছিল। এবার বিধানসভা ভোটের আগে আবারও ব্রিগেডে একই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ঘোষণা করেছেন, এ বার অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটবে।

পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দুর ঘোষণা (Suvendu Adhikari)

বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়। বিজেপির নামে নয়, ‘সনাতনী ঐক্য মঞ্চ’ নামক সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। হিন্দুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে আয়োজন করা হয় এই বিক্ষোভ মিছিল। মিছিল শেষে চণ্ডীপুর থানার সামনে জনসভায় বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভায় সাধু সমাজের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি ব্রিগেডে ‘পাঁচ লক্ষ হিন্দুর গীতা পাঠ’-এর (Gita) কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

৭ ডিসেম্বরের দিন হবে গীতা পাঠ, জানাচ্ছে আয়োজক সংস্থা

শুভেন্দুর কথায় (Suvendu Adhikari), ‘‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাগেশ্বর ধাম থেকে ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী আসবেন। ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ হিন্দু একসঙ্গে গীতা পাঠ করবেন।’’ আয়োজক সংগঠন ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’-এর সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে ৭ ডিসেম্বরের দিন ধার্য হয়েছে। বাগেশ্বর ধামের পীঠাধীশ্বর ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী এতে যোগদানের সম্মতি দিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। ২০২৩ সালের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দ্বারকাপীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী, যিনি হিন্দু ধর্মের চার শীর্ষ পদাধিকারীর অন্যতম।

মূল দায়িত্বে কার্তিক মহারাজ

২০২৩ সালের গীতাপাঠের (Gita) আয়োজন করেছিল একাধিক ধর্মীয় সংগঠন। তবে ২০২৪ সালে শিলিগুড়িতে যে সমবেত গীতাপাঠ হয়, তা একাই আয়োজন করে ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’, সংগঠনের নেতা ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দের (কার্তিক মহারাজ) নেতৃত্বে। এ বারও মূল দায়িত্ব তাদের কাঁধেই থাকছে। যদিও শুরু থেকেই শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) এই উদ্যোগকে নেপথ্য থেকে সমর্থন দিয়ে এসেছেন। চণ্ডীপুরের সভায় তাঁর ঘোষণাই স্পষ্ট করে দিয়েছে, এবারও তাঁর দলবল জমায়েতের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। আয়োজকদের বক্তব্য, এবারের গীতাপাঠ হবে আগের সব আয়োজনের থেকে অনেক বেশি বিস্তৃত ও ঐতিহাসিক। তাঁদের দাবি, গতবারই লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ ঘটেছিল, যা রাজ্যে একটি নজির তৈরি করেছিল। তবে এবারের আয়োজনকে তারা আরও বৃহৎ আকারে গড়ে তুলতে চাইছেন।আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধু কলকাতা বা আশেপাশের জেলাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এ বার ব্রিগেডে আসবেন। এ জন্য আগেভাগেই বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও সাধু-সন্তদের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।

জুন মাসেই গীতা পাঠের এই অনুষ্ঠানের কথা ঘোষণা করেছিলেন কার্তিক মহারাজ

এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য, ব্রিগেডে গীতাপাঠের প্রসঙ্গ প্রথম সামনে আসে চলতি বছরের জুন মাসে। সেই সময়েই ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ আয়োজনের কথা ঘোষণা করেছিলেন পদ্মশ্রী-পুরস্কারপ্রাপ্ত ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজ। তিনি জানিয়েছিলেন, দিল্লিতে একাধিক ধর্মগুরুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল এবং নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনার পরই তিনি এই পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের ঘোষণা করেন। রাজ্যে হিন্দু ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই গীতাপাঠকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আয়োজকদের মতে, সমবেত গীতাপাঠ কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং হিন্দু সমাজকে একত্রিত করার এক মহৎ প্রচেষ্টা। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের রাজনৈতিক আবহে যে বিভাজনের ছবি স্পষ্ট হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ আরও বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। কারণ সম্প্রতি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ উঠেছে এবং একাধিক ক্ষেত্রে তাদের হিন্দুবিরোধী চিত্রও প্রকাশ্যে এসেছে।

অনুষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই

যদিও কার্তিক মহারাজ সবসময় স্পষ্ট করেছেন যে, উদ্যোক্তারা জানেন— এই কর্মসূচির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। গত জুন মাসেই তিনি এ কথা পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন। কার্তিক মহারাজ বলেছিলেন, “এখন গ্রামে গ্রামে, জেলায় জেলায় গীতা পাঠ হচ্ছে। যার ফলে মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তনও হচ্ছে। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।” এরপরেই তাঁর সংযোজন, “রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। গীতা এমন এক ধর্মগ্রন্থ যা হাজার হাজার বছর ধরে মানবজাতির কল্যাণে নিয়োজিত। বহু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও গীতা পড়েন। পৃথিবীর সমস্ত ভাষায় গীতা অনুবাদ হয়েছে। এখন সনাতন হিন্দু ধর্মের কথা বললেই বিজেপির কথা বলা হলে তো হাস্যকর ব্যাপার।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share