Bangladesh: ক্ষমতায় থাকতে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের পরিকল্পনা করেছিলেন ইউনূস! ফাঁস হয়ে যায় ছক

Bangladesh army chief foiled md yunus plans to trigger skirmishes with india

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা ভেস্তে দিলেন সে দেশেরই সেনা প্রধান! ইউনূস (Md Yunus) মনে করেছিলেন ভারতের সঙ্গে সীমান্তে ছোটখাট সংঘর্ষ লাগিয়ে রেখে দেশের ভেতরের গুরুতর সমস্যাগুলি থেকে বাংলাদেশবাসীর দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে। এভাবে জনমতকে তাঁর পক্ষে আনতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী। ইউনূসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে সীমিত পরিসরের একটি সীমান্তসংঘর্ষ কেবল তাঁর সমস্যাগুলো দূর করবে না, বরং তাঁকে আগাম নির্বাচনের দাবিকে উপেক্ষা করে আরও কিছুদিন ক্ষমতায় টিকে থাকার সুযোগ করে দেবে। তাঁর ধারণা ছিল, এই পরিকল্পিত সংঘর্ষের সময় সব পক্ষ— এমনকি সাধারণ মানুষও— জাতীয়তাবাদের চেতনায় নিজেদের বিভেদ ভুলে তাঁকে সমর্থন করবেন। সূত্রের খবর, ইউনূস এই পরিকল্পনা করেন জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ এবং সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কিছু নেতার সঙ্গে পরামর্শ করে। এনসিপিকে বাংলাদেশে ‘রাজপন্থী দল’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। কারণ এটি ইউনূসের আশীর্বাদপুষ্ট। তাঁর সক্রিয় সমর্থনও পেয়েছে এই দল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত হয় এই দল। ছাত্রবিক্ষোভের অগ্রণী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (এডিএসএম) কয়েকজন নেতা যাঁরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের নিয়েই গঠিত হয়েছে এই দল।

ইউনূসের শলা (Bangladesh)

জানা গিয়েছে, ভারত যখন পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুর চালায়, তখন নাকি ইউনূস (Md Yunus) পরিকল্পনাটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) খালিলুর রহমান এবং সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ ফইজুর রহমানের সঙ্গে শলা করে চূড়ান্ত করেছিলেন। প্রসঙ্গত, কিউএমজি সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে থাকা অল্প কিছু উগ্র ইসলামপন্থীর একজন, যিনি সেনাপ্রধানের বিরোধিতা করেন সব সময়। লেফটেন্যান্ট জেনারেল রহমান পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। চলতি বছরের (Bangladesh) মার্চে সেনাপ্রধানকে সরাতে তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন। যদিও ব্যর্থ হন। তার পর থেকেই তাঁকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কোনও যোগাযোগও রাখতে পারেন না।

ঢাকা ব্রিগেড

এই কারণেই ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত এবং সেনা সদর দফতরের অধীন ৪৬তম স্বাধীন পদাতিক ব্রিগেডের (‘ঢাকা ব্রিগেড’ নামেও পরিচিত) সঙ্গে যুক্ত কর্নেল পদমর্যাদার এক আধিকারিককে সেনাপ্রধানের সামনে গোটা পরিকল্পনাটি তুলে ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই কর্নেল অন্তর্বর্তী সরকারের দুই প্রাক্তন এডিএসএম নেতার ঘনিষ্ঠ বলে সন্দেহ করা হয়। তিনি সেনাবাহিনীর সদর দফতরের প্রবীণ আধিকারিকদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত যখন পাকিস্তানকে জব্দ করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই ইউনূস ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা ভেবেছিলেন, ভারত ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তে উসকানিমূলক কাজকর্মের প্রতি বিশেষ নজর দিতে পারবে না। ঢাকার এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, “পরিকল্পনা ছিল বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)-কে সীমান্তে একটি আক্রমণাত্মক ভঙ্গি নিতে উদ্বুদ্ধ করা, যাতে ভারতের বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স)-এর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এই পরিকল্পনার অংশ ছিল সীমান্তের কিছু পেছনের এলাকায় সেনা ইউনিট মোতায়েন করা, যাতে বিজিবি সদস্যদের ব্যাকআপ দেওয়া যায়।”

ঢাকায় সরকার পরিবর্তন

প্রসঙ্গত, গত (Bangladesh) বছরের অগাস্টের শুরুতে ঢাকায় সরকার পরিবর্তনের পরপরই বিজিবি আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর খুবই আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তারা ভারতীয় সীমান্তে কাঁটাতার বসানো ও অন্যান্য নির্মাণ কাজের বিরোধিতা করতে শুরু করে। বিজিবি (Md Yunus) এমনটা শুরু করেছিল গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে। তখন বিজিবির জওয়ানরা ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত নির্ধারণকারী একটি নদী পেরিয়ে ভারত ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে। তারা অসমের শ্রীভূমি জেলার একটি মন্দিরের সংস্কার কাজও বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল।বিএসএফের এক কর্তা বলেন, “গত বছরের অগাস্ট থেকে এ বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সীমান্তের অনেক ফাঁক-ফোকর দিয়ে বিজিবি বাংলাদেশি অপরাধীদের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে। তবে তারা এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে আগ্রাসী ভূমিকায় ইতি টেনেছে।”

ইউনূসের পরিকল্পনা

জানা গিয়েছে, এর কারণ বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান নাকি বিজিবির প্রধান মেজর জেনারেল মহম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীকে বিজিবির আক্রমণাত্মক অবস্থান থেকে সরে আসার নির্দেশ দেন। সেনাপ্রধান নাকি বিজিবি প্রধানকে এ নিয়ে ভর্ৎসনাও করেন। বিজিবি প্রধান নাকি জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে বলেছিলেন, তিনি ‘যমুনা’ (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের বাসভবন) থেকে মৌখিক নির্দেশ পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলতাফ হুসেন, যিনি বর্তমান সেনা প্রধানের ঘনিষ্ঠ, তিনি বলেন, “ইউনূসের পরিকল্পনা ছিল, এমন ছোটখাটো সংঘর্ষকে বাংলাদেশের অতিরঞ্জিত জাতীয়তাবাদী মিডিয়ার একটি অংশ ব্যবহার করবে জনরোষ ও জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে দিতে। ইউনূস ও তাঁর সহকর্মীরা সেই জাতীয়তাবাদী আবেগকে উসকে দেবে যুদ্ধংদেহি বক্তব্য ও আগ্রাসী অবস্থানের মাধ্যমে। এর ফলে গোটা দেশ ইউনূসের পক্ষে দাঁড়িয়ে যাবে। চাপা পড়ে যাবে তাঁর আমলে সৃষ্টি হওয়া সব অভ্যন্তরীণ সমস্যা (Bangladesh)।”

সেনাবাহিনীর ব্যাকআপ

এই পরিকল্পনার সফলতার জন্য সেনাবাহিনীর সমর্থন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত, তাহলে সীমান্তের কাছাকাছি মোতায়েন থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিজিবিকে সাহায্য করতে পারত। হুসেন বলেন, “সেনাবাহিনীকে ব্যাকআপ হিসেবে না পেলে বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হওয়ার সাহস পেত না। বিএসএফ সংযম দেখায়, কিন্তু একটা সীমা পর্যন্ত। ইউনূস যেটা চেয়েছিলেন তা হল, বিজিবি যেন সেই রেড লাইন অতিক্রম করে, যেটা করলে বিএসএফের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ করা হত। সেই জন্যই সেনাবাহিনীকে পেছনে মোতায়েন (Md Yunus) করা হয়েছিল, যাতে বিএসএফ বিজিবি-র বিরুদ্ধে কড়া কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাতে না পারে (Bangladesh)।”

কী বললেন সেনাপ্রধান?

ইউনূসের এই ষড়যন্ত্রের কথা দ্রুত পৌঁছে যায় সেনাপ্রধানের কানে। বাংলাদেশ সেনা সদর দফতরের এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, “জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁর সহকর্মীদের, বিশেষ করে চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং অপর দুই বাহিনীর প্রধান — এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ও অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নজমুল হাসানের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করেন। সকলেই ইউনূসের পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেন।” এর পরেই সেনাপ্রধান ইউনূস এবং এনএসএ-কে জানিয়ে দেন যে এই পরিকল্পনাটি রূপায়ণ করা হলে, তা হবে অবিবেচকের মতো কাজ। তাই এটি কার্যকর করা হবে না। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ভারত সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং ভারতকে উসকানি দেওয়া চলবে না। ভারতকে নিয়ে এমন সীমানা উত্তেজনার খেলা বুমেরাং হতে পারে। কারণ সীমান্তে যে কোনও ভুল পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে। তিনি এও জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামর্থ্য কিংবা মনোভাব কোনওটিই ভারতের সঙ্গে শত্রুতায় জড়ানোর নয় (Bangladesh)।

বাংলাদেশ সেনাপ্রধান আরও জানিয়ে দেন, সীমান্তে কোনও সেনা তিনি মোতায়েন করবেন না। বিজিবি-র প্রধানকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন কারও কাছ থেকে সরাসরি কোনও নির্দেশ না নেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইউনূসের এই ‘ধান্ধা’র খবর জেনে যায় বিএনপি-ও। এর পরেই বিএনপি নেতৃত্বও দ্রুত ইউনূসকে জানিয়ে দেন (Md Yunus), এমন করা হলে তাঁরা তাঁর তীব্র বিরোধিতা করবেন এবং এর বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য ব্যাপক প্রচারও করবেন। সূত্রের খবর, তার পরেই ভয়ে ষড়যন্ত্র কার্যকর করা থেকে বিরত থাকেন ইউনূস (Bangladesh)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share