Bangladesh: ইতালি সফর সেরে বাংলাদেশে ফিরলেন ইউনূস, ঘরে-বাইরে সমালোচনার ঝড়

Bangladesh md yunus italy

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দু’দিনের ইতালি সফর সেরে বুধবার সকালে বাংলাদেশে (Bangladesh) ফিরলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস (Md Yunus)। ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে’র একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তিনি গিয়েছিলেন ইতালির রাজধানী রোমে। ইউনূসের প্রেস উইং জানিয়েছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা। উল্লেখ্য, এবার ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে রোমে, রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সদর দফতরে। সেপ্টেম্বরেই রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেশে ফেরেন ইউনূস। ফের একবার বিদেশ সফরে গেলেন অক্টোবরে।

১৪ মাসের রাজত্বকালে ১৪ বার (Bangladesh)

মাত্র ১৪ মাসের রাজত্বকালে ইউনূস সদলে বিদেশ সফর করেছেন অন্তত ১৪ বার। প্রধান উপদেষ্টার ঘন ঘন এই বিদেশ সফরে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে। তাঁর এই সফর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান, ইতালি ও বাংলাদেশ – এই দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক কোনও সফর নয় এটি। ইতালির সরকারের প্রধান বা রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গেও বাংলাদেশ সরকারের (Bangladesh) প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের কোনও তথ্যই নেই। তাই সরকারি অর্থ ব্যয় করে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের যোগ দেওয়া নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম

প্রসঙ্গত, ২০২১ সাল থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম। এর আগের চারটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে, এই ইভেন্টের বিভিন্ন অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন কয়েকটি দেশের কৃষিমন্ত্রী বা কৃষি সংক্রান্ত দফতরের আধিকারিকরা। গত বছর হাতে গোণা কয়েকটি দেশের সর্বোচ্চ নেতা অবশ্য অংশ নিয়েছিলেন। এহেন একটি অনুষ্ঠানে সরকারি অর্থ ব্যয়ে ইউনূস কেন সদলে রোমে গেলেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

টিআইবির বক্তব্য

সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়ে ইউনূস দেশে ফেরার পরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিদেশ সফরে এত বড় প্রতিনিধি দল পাঠানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। টিআইবির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইফতেথারুজ্জামান সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, “ওঁরা (ইউনূস ও তাঁর দলবল) রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে বিবেচনায় নিয়ে পুরো রাষ্ট্রের স্বার্থ প্রোমোট করার জন্য যাচ্ছেন। তাঁদের কার কী ভূমিকা, কীভাবে (Md Yunus) ভূমিকা পালন করছেন, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে হবে (Bangladesh)।” তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা আরও কমবে। কিন্তু সেটা আরও বেড়েছে।”

কী বললেন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত

প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদের প্রশ্ন, “একটি দেশের শীর্ষ নেতার ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াটা কি খুব জরুরি?” তিনি বলেন, “উনি একটা মাল্টালেটারাল অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। এটা ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক কোনও সফর নয়।” তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠান সত্যিকার অর্থেই খুব কম হচ্ছে।” তাঁর প্রশ্ন, “তাই এগুলিতে যোগ দেওয়া কি ওঁর কাছে খুবই জরুরি বলে মনে হল? প্রধান উপদেষ্টার তো এর চেয়েও ঢের বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে!” প্রাক্তন এই কূটনীতিক বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রধান উপদেষ্টা এখন জাতীয় নেতা। বক্তৃতা দেওয়ার চেয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়াটা ওঁর জন্য বেশি জরুরি। তাঁর সেই কাজটায় বারংবার (Bangladesh) ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।” তিনি বলেন, “ওঁর সিরিয়াসনেসের অভাবটার একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়ছে, ওঁর নিজের ওপরেও আর সরকারের সক্ষমতার ওপরেও।”

প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিঠি

এদিকে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং উপপ্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানিকে চিঠি দিয়ে ইউনূস সরকারের দ্বারা বাংলাদেশের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির ওপর পরিচালিত হামলার নিন্দা করেছেন। দু’টি আলাদা চিঠিতে ইতালিতে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা ইউনূস প্রশাসনকে অনির্বাচিত এবং দেশ শাসনের জন্য কোনও গণতান্ত্রিক জনসমর্থনহীন বলে বর্ণনা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, অন্তর্বর্তী সরকার বারবার নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে। ওই সরকার (Md Yunus) আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “ইউনূসের শাসনকালে রাজনৈতিক নিপীড়ন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আওয়ামি লিগের নির্দোষ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা শিকার হচ্ছেন বৈষম্য, হিংসাত্মক হামলা এবং ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শয়ে শয়ে আওয়ামি লিগ কর্মীকে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে ২০০-রও বেশি সমর্থককে।” অন্যদিকে, ইউনূস ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করবেন, এমন কথা তিনি কোথাও বলেননি বলে দাবি করেছেন ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Bangladesh)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share