Modi Govt: মোদি সরকারের ১১ বছর পূর্তি, দেখে নিন গুরুত্বপূর্ণ কাজের খতিয়ান

bjp Pathbreaking decisions of modi govt

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১৪ সালের ২৬ মে প্রথমবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তার পর ২০১৯ ও ২০২৪ সালেও তিনিই রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদে। সোমবার হল মোদি সরকারের (Modi Govt) ১১ বর্ষ পূর্তি। এদিনই মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরল বিজেপি (BJP)। পদ্ম শিবিরের দাবি, সুসংহত শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে গত ১১ বছরে মোদি সরকার একগুচ্ছ সাহসী ও সুদূরপ্রসারী সংস্কারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের গতি পরিবর্তন করেছে। বিজেপির তরফে ১১টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা ভারতের উন্নয়নের পথে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে।

২০১৪ সালে শুরু হওয়া ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল ভারতকে একটি বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। সরকারের এই কর্মসূচি বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণ, স্বদেশি উৎপাদনকে উৎসাহিত করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের শিল্পক্ষেত্রে নয়া গতি এনেছে। এটি বিধিনিষেধ সহজতর করেছে, উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিয়েছে এবং ভারতকে বিশ্বের দ্বিতীয় সব চেয়ে আকর্ষণীয় উৎপাদন গন্তব্যে পরিণত করেছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ থেকে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’য় রূপান্তর আত্মনির্ভরতা ও বৈশ্বিক শিল্পক্ষেত্রে ভারতের আস্থা বৃদ্ধির প্রতীক।

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা (Modi Govt)

২০১৫ সালে চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগগুলিকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত মুক্ত ঋণ দেয়।২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত এই যোজনার মাধ্যমে প্রায় ৩২.৪ লাখ কোটি টাকার ঋণ বিলি করা হয়েছে। সুবিধাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ নারী, এবং প্রায় অর্ধেক ঋণ দেওয়া হয়েছে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির লোকজনকে। সর্বোচ্চ ঋণ বিলি করা হয়েছে তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকে (BJP)।

বিমুদ্রাকরণ

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর কালো টাকা সাদা করতে, জাল নোটের রমরমা ঠেকাতে, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ করতে (Modi Govt) এবং ডিজিটাল লেনদেনে দেশবাসীকে উৎসাহিত করতে ভারত সরকার ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে। এর ফলে আয়কর রিটার্ন দাখিল বেড়েছে ২৪.৭ শতাংশ এবং অগ্রিম কর সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে ৪১.৮ শতাংশ। ‘অপারেশন ক্লিন মানি’র মাধ্যমে ১৮ লাখ সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যার ফলে ১৭,৫২৬ কোটি টাকার অবৈধ আয়ের সন্ধান মিলেছে। সরকারের এই পদক্ষেপে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

জিএসটি

২০১৭ সালের ১ জুলাই চালু হওয়া জিএসটি বিভিন্ন পরোক্ষ করের পরিবর্তে একটি একক কর ব্যবস্থা চালু করে। এটি করের বাধা দূর করেছে, ইনপুট ক্রেডিটের সুবিধা এনেছে এবং আন্তঃরাজ্য বাণিজ্যকে উন্নত করেছে। ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে দেশে জিএসটি সংগ্রহের পরিমাণ পৌঁছেছে ২০.১৮ লাখ কোটি টাকায়, যা তার আগের অর্থবর্ষের তুলনায় ১১.৭ শতাংশ বেশি। এই সংস্কার কর দেওয়া সহজ করেছে, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করেছে এবং অর্থনৈতিক কাঠামোকে মজবুত করেছে।

ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং ইউপিআই

বিএইচআইএম, আধার এবং ইউপিআইয়ের মতো উদ্যোগগুলি ভারতের পেমেন্ট ব্যবস্থায় বিপ্লব এনেছে। ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে ইউপিআই মাসে ১৭৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লেনদেন করেছে, যার আর্থিক মূল্য ২২ লাখ কোটি টাকারও বেশি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ১৬.৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লেনদেনের মাধ্যমে রেকর্ড গড়ে। ২০১৯ সালে ডিজিটাল পেমেন্টে ইউপিআইয়ের অংশ ছিল ৩৪ শতাংশ। ২০২৪ সালে এটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ শতাংশে। মোদি সরকারের এই ব্যবস্থা ডিজিটাল ফিনান্সে ভারতকে বিশ্বনেতা হিসেবে গড়ে তুলেছে (BJP)।

আয়ুষ্মান ভারত

২০১৮ সালে শুরু (Modi Govt) হওয়া আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (PM-JAY) প্রতি পরিবারে সেকেন্ডারি ও তৃতীয় স্তরের চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কভারেজ প্রদান করে। ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৬.৯ কোটিরও বেশি আয়ুষ্মান কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। যার ফলে প্রায় ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয় হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় এখন ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী সব নাগরিক এবং ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার্সরাও অন্তর্ভুক্ত।

৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলোপ

২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করা হয়। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হয়ে যায় এবং এটি সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একীভূত হয়। এই অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ায় সমান নাগরিকত্বের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে এবং জাতীয় ঐক্য মজবুত হয়েছে।

উরি, বালাকোট, অপারেশন সিঁদুর ও ব্ল্যাক ফরেস্ট  

২০১৬ সালে উরির হামলার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে ভারত। ২০১৯ সালে পুলওয়ামার প্রতিক্রিয়ায় বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক চালায় মোদি সরকার। ২০২৫ সালে হয় অপারেশন সিঁদুর। পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের হত্যা করেছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তার পরেই অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। এই অভিযানে দেশীয় সামরিক সক্ষমতা ও মহিলা অফিসারদের নেতৃত্বের ভূমিকাও তুলে ধরা হয়, যা আদতে আত্মনির্ভরতা ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শুরু হয় অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট (BJP)। ২১ দিন ধরে ভারতের কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের ১০,০০০-এর বেশি কর্মী অংশ নেন ছত্তিশগড়-তেলঙ্গানা সীমান্তের কারেগুট্টালু পাহাড়ে মাওবাদী ঘাঁটি ও তাদের নেতৃত্ব কাঠামো ধ্বংস করতে। অভিযানে ৩১ জন মাওবাদী নিকেশ হয়, যাদের মধ্যে ছিল সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক নামবালা কেশব রাও (বাসবরাজু)-এর মতো শীর্ষ নেতাও (Modi Govt)।

আত্মনির্ভর ভারত

কোভিড অতিমারী-উত্তর পর্বে শুরু হওয়া আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগের লক্ষ্য হল আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো এবং বিশেষ করে এমএসএমইদের জন্য দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো। মোদি সরকারের এই উদ্যোগ ব্যাপক সাফল্য পায়। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিরক্ষা রফতানি ২০১৩–১৪ অর্থবর্ষে ৬৮৬ কোটি টাকা থেকে ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে ২১,০৮৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। বৃদ্ধির পরিমাণ ৩০ গুণ। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা রফতানি ৪,৩১২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮,৩১৯ কোটি টাকায়।

অগ্নিপথ স্কিম

২০২২ সালের জুনে চালু হওয়া অগ্নিপথ স্কিম অনুযায়ী ১৭.৫ থেকে ২১ বছর বয়সি যুবকদের চার বছরের জন্য ‘অগ্নিবীর’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়, যাদের মধ্যে ২৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে স্থায়ীভাবে রাখা হয়। এই স্কিমটি শৃঙ্খলা গড়ে তোলে এবং বার্ষিক ৪.৭৬ লক্ষ টাকা বেতন, ১১.৭১ লক্ষ টাকা ‘সেবা নিধি’ এক্সিট প্যাকেজ এবং ৪৮ লক্ষ টাকার জীবন বীমা দেয়। প্রতিরক্ষা সেবার বাইরেও এটি যুবকদের ভবিষ্যতের (BJP) কেরিয়ারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জনেও সহায়তা করে। অপারেশন সিঁদুরে এই অগ্নিবীরদের অনেকেই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন (Modi Govt)।

সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

কিছু যুগান্তকারী প্রকল্পের মাধ্যমে মোদি সরকার ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। ২০২৪ সালে অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা বহু প্রতীক্ষিত একটি সাংস্কৃতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে। কাশী বিশ্বনাথ ধাম প্রকল্প বারাণসীর মন্দির চত্বরে এক নতুন রূপ এনে দিয়েছে, আর মহাকাল লোক করিডর উজ্জয়নের মহাকালেশ্বর মন্দিরকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এই সমস্ত উদ্যোগই ঐতিহ্য ও আধুনিক পরিকাঠামোর এক অসাধারণ সমন্বয়, যা ধর্মীয় পর্যটন ও সভ্যতাগত গর্বকে উৎসাহিত করছে। এই যুগান্তকারী কীর্তিগুলির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এবং বৈদেশিক নীতিতেও নিজস্ব ছাপ রেখেছে। এমনই একটি সাফল্য হল ভারতে (BJP) সফলভাবে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন। এছাড়াও, নানা সময় বিভিন্ন দেশের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত মানবিক সাহায্য দিয়েছে। যার ফলে ভারত অর্জন করেছে বিশ্বনেতার সম্মান (Modi Govt)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share