BJP: “বাংলা অনাচার ও নৈরাজ্যের ঘাঁটি”, আরজি করকাণ্ডে মমতার মুন্ডুপাত বিজেপির

Mamata Banerjee: মমতা স্বৈরশাসক, অপরাধীদের রক্ষা করছেন, প্রতিক্রিয়া বিজেপির...
bjp_flag
bjp_flag

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কামদুনি থেকে আরজি কর। দুরত্ব বিস্তর। তবে সে কামদুনিই হোক, কিংবা চোপড়া বা আরজি কর, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) শাসনে রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ‘নারী-শিকারে’র এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা। যার জেরে তোলপাড় রাজ্য। তৃণমূল-শাসনে রাজ্যে ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলে নারী নির্যাতনের কড়া সমালোচনা করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)।

কী বলছেন ত্রিবেদী (BJP)

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস যে সংবেদনশীল আচরণ করছে, তা উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির আচরণের মতোই। কনৌজ থেকে কলকাতা পর্যন্ত ঘৃণা, নারীদের প্রতি অবজ্ঞা ও অপরাধীদের সুরক্ষার বিপজ্জনক মানসিকতা রয়েছে।” তিনি বলেন, “সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর জবাব দেওয়া উচিত যে তাঁদের ‘মহব্বত কি দুকান’ শুধুমাত্র অপরাধী, দুর্নীতিবাজ ও ধর্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হয় কিনা।” ত্রিবেদী বলেন, “অধীর রঞ্জন চৌধুরী দাবি করেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নেই এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন স্বৈরশাসক, অপরাধীদের রক্ষা করছেন।” তাঁর প্রশ্ন, “কংগ্রেস পার্টি এখনও কীভাবে তাঁর সঙ্গে জোটে থাকতে পারেন?”

মৃত্যু মিছিল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) (কু)শাসনের জেরে বাংলা নারীদের জন্য বিপজ্জনক জায়গায় পরিণত হয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক ঘটনার রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই বর্ধমানের একটি মাঠে মেলে এক যুবতীর গলাকাটা দেহ। শক্তিগড়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক প্রতিবন্ধী কন্যা। বিজেপির (BJP) দাবি, এই সব ঘটনা-শৃঙ্খল প্রমাণ করে তৃণমূলের জমানায় ভালো নেই বাংলা। 

নৈরাজ্যের ঘাঁটি বাংলা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মুন্ডুপাত করেছেন সাংসদ বিজেপির দীনেশ শর্মা। তাঁর ভাষায়, “বাংলা অনাচার ও নৈরাজ্যের ঘাঁটি।” তিনি বলেন, “বাংলায় পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকে। আর প্রকাশ্যে কাজ করে বেড়ায় অপরাধীরা।” তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যও। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও শাসন নেই। সম্প্রতি এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা জাতির জন্য গভীর লজ্জার।” মমতার সরকারের ব্যর্থতাকেও ইস্যু করেন তিনি। মৌর্য বলেন, “ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার বদলে রাম এবং বামকে দুষেই হাত ধুয়ে ফেলছেন তিনি।” উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্মীয় ও রাজনৈতিক লাভের জন্য বাংলাকে হিংসায় নিক্ষেপ করেছে তৃণমূল। তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার কন্যাদের কল্যাণকে উপেক্ষা করেছেন। মহিলা চিকিৎসকের ওপর যে নিদারুণ অত্যাচার হয়েছে, তা মেলে কেবল তৃণমূল সরকার যেভাবে তাঁর মর্যদাহানি করেছে তার সঙ্গেই।”

ক্ষমতার মোহ

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার মোহে এতটাই অন্ধ যে তিনি রামকেও গালি দিতে দ্বিধা করেন না। মনে হয়, তিনি মা-মাটি-মানুষ নীতি পরিত্যাগ করেছেন। শ্রী রাম যখন শান্তি-সম্প্রীতি ও প্রেমকে মূর্ত করে তোলেন, তখন অন্যায় বিরাজ করলে তিনিও তাড়কা দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা মন্দের মোকাবিলা করেন এবং নির্মূল করেন।” বিজেপির (BJP) জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন, “বাংলায় রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যর্থ। এরকম ঘটনা (আরজি করকাণ্ডের মতো) ঘটলে উর্দি পরা কর্মীদের সাংবিধানিক নীতিগুলি উপেক্ষা করতে চাপ দেওয়া হয়। চাপ দেওয়া হয় একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের রক্ষা করতে।”

আরও পড়ুন: ‘‘গোটা ডিপার্টমেন্টকেই সন্দেহ করি’’, সিবিআইকে বলেছেন নির্যাতিতার বাবা

কেন চুপ রাহুল, প্রিয়ঙ্কা

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র অজয় অলোক বলেন, “বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি বিরোধীরা। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যিনি ‘লাডকি হুঁ, লাড শক্তি হুঁ’ স্লোগানের পক্ষে ছিলেন, বাংলার ঘটনায় তিনি নীরব। চুপ করে রয়েছেন অখিলেশ যাদবও। কোনও কথা বলছেন না ইন্ডি জোটের নেতারা।” বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, “কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পুলিশকে বিশ্বাস করে না। তাই তদন্তটি সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়েছে।” তাঁর প্রশ্ন, “এই ঘটনার দায় নিয়ে কখন পদত্যাগ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)?”

রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই!

পদ্ম শিবিরের জাতীয় মুখপাত্র অনিল কে অ্যান্টনি বলেন, “সম্প্রতি সন্দেশখালি, চোপড়া এবং এখন কলকাতার মতো জায়গায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরেছে। পুলিশ এই ধরনের জঘন্য অপরাধে জড়িতদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই বললেই চলে।” বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারি বলেন, “ইউপিএ সরকারের সময় দেশ নির্ভয়ার বিরুদ্ধে নৃশংসতা দেখেছিল। আর আজ কংগ্রেস বাংলার বিষয়ে নীরব রয়েছে।” তিনি বলেন, “সেই সময় জাতি যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তেমনি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে একত্রিত হচ্ছে (BJP)।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles