Himanta Biswa Sarma: পাকিস্তানের মিথ্যে হুমকির বেলুন ফাটিয়ে দিলেন হিমন্ত, ইসলামাবাদকে দিলেন ভূগোলের পাঠ

China Brahmaputra india himanta biswa sarma gives Pakistan a reality check

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে দেয় ভারত। তার পরেই বন্ধু দেশ চিনকে পাশে টেনে ব্রহ্মপুত্রের জল বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয় পাকিস্তান (Pakistan)। শাহবাজ শরিফের দেশের ওই হুঁশিয়ারিতে যে ভারত আদৌ ভীত নয়, ওই হুঁশিয়ারি যে নিছকই ফাঁকা বুলি, তা সাফ জানিয়ে দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma)।

পাকিস্তানের বেলুন ফুটো (Himanta Biswa Sarma)

রীতিমতো তথ্য দিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, চিন যদি ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দেয় বা জল বন্ধ করে দেয়, তাহলে অসুবিধা তো দূর, বরং সুবিধাই হবে ভারতের। ২ জুন এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে পাকিস্তানকে বাস্তবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, “যদি চিন ব্রহ্মপুত্রের জল ভারতকে দেওয়া বন্ধ করে দেয়? পাকিস্তানের নয়া আতঙ্ক কল্পনার জবাব— ভারত যখন পুরনো সিন্ধু জলচুক্তি থেকে সরে এসেছে, তখন পাকিস্তান তার মিত্র চিনের নাম করে আর একটি মিথ্যা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে – যদি চিন ভারতের দিকে ব্রহ্মপুত্রের জল বন্ধ করে দেয়?’ এই মিথ্যাটিকে আমরা ভয় দিয়ে নয়, বরং তথ্য দিয়ে ভেঙে দিই— ব্রহ্মপুত্র এমন একটি নদ যা ভারতে ‘বাড়ে’, ছোট হয় না। চিন ব্রহ্মপুত্রের মোট প্রবাহের মাত্র ৩০–৩৫ শতাংশ জল সরবরাহ করে, সেটিও প্রধানত হিমবাহ গলে যাওয়া ও সীমিত তিব্বতি বৃষ্টিপাত থেকে।”

ব্রহ্মপুত্রের জল

তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্রের বাকি ৬৫–৭০ শতাংশ জল ভারতে তৈরি হয়, মূলত অরুণাচলপ্রদেশ, অসম, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে প্রচণ্ড বর্ষণের ফলে। এছাড়া সুবনসিরি, লোহিত, কামেং, মানাস, ধানসিরি, জিয়া-ভরালী, কপিলি ও খাসি, গারো ও জয়ন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা নদী যেমন কৃষ্ণাই, দিগারু ও কুলসি ভারতের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রকে প্রবাহিত রাখতে বড় অবদান রাখে। এভাবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্টভাবে বোঝান যে, চিন জল বন্ধ করলেও ব্রহ্মপুত্র ভারতের ভিতরেই বয়ে চলে এবং শক্তিশালী থাকে। পাকিস্তানের আতঙ্ক-সৃষ্টির প্রচেষ্টাকে তিনি তথ্য দিয়ে খণ্ডন করে দেন (Himanta Biswa Sarma)। ব্রহ্মপুত্রের উৎস তিব্বতের মালভূমি। ভারতীয় উপমহাদেশ, দেশের উত্তর-পূর্ব অংশকে কৃষিকাজের জল জোগায়, পানীয় জল জোগায়, বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখে। তিব্বতের দক্ষিণ-পশ্চিমের চেমাইয়ুংদাং হিমবাহ থেকে এর উৎপত্তি। তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র পরিচিত ইয়ারলুং সাংপো নামে। অরুণাচলপ্রদেশে এর নাম হয়েছে দিহাং। সমস্ত উপনদী সঙ্গমে এসে মিশলে নাম হয় ব্রহ্মপুত্র। বাংলাদেশে এই নদেরই নাম যমুনা। শেষে এই নদী এসে মিশেছে সুন্দরবনের কাছে গঙ্গায়, যা থেকে তৈরি হয়েছে সুন্দরবন ব-দ্বীপ (Pakistan)।

অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য

অসমের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “চুটিংয়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে জলের স্রোত ২০০০-৩০০০ কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ডে। অসমের সমতল গুয়াহাটিতে তা-ই ফুলেফেঁপে হয় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার কিউসেক। ব্রহ্মপুত্রের উজানের ওপর ভারত নির্ভরশীল নয়। ব্রহ্মপুত্র ভারতের বৃষ্টিনির্ভর নদী ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে, সেটি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের পরেই শক্তিশালী হয়েছে। এই সত্যটা পাকিস্তানের জানা দরকার। আর চিন যদি জলের স্রোত বন্ধ করার কথা ভাবে (চিন অবশ্য এখনও এমন কথা বলেনি), তাতে ভারত উপকৃতই হবে। প্রতিবছর বন্যা হবে না অসমে, যাতে লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হন, জীবনজীবিকা নষ্ট হয় প্রতি বছর। অন্যদিকে, পাকিস্তান ৭৪ বছর ধরে সিন্ধু জলচুক্তির সুবিধা নিয়ে এসেছে। এখন ভারত নিজের সার্বভৌমিক ক্ষমতা দাবি করায় আতঙ্কিত। ওদের মনে করিয়ে দিই, ব্রহ্মপুত্রকে কোনও একপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে না। আমাদের ভূগোল, বর্ষা এবং সভ্যতা তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ভয় পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ এবং ভারত এখন তার জলসম্পদ সম্পর্কে স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম (Himanta Biswa Sarma)।” অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তান সিন্ধু জলচুক্তির অধীনে ৭৪ বছর ধরে যে অগ্রাধিকারমূলক জলপ্রবাহের সুবিধা ভোগ করে এসেছে, এখন ভারত যখন বৈধভাবে তার সার্বভৌম অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে, তখন শত্রুর মতো আচরণ করা প্রতিবেশী দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

নাকের জলে চোখের জলে পাকিস্তান

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আমলে স্বাক্ষরিত হওয়া সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার পর নাকের জলে চোখের জলে হওয়ার জোগাড় পাকিস্তানের। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সিন্ধুর শাখানদীগুলির জলপ্রবাহ কমে যাওয়ায় পাঞ্জাব প্রদেশে ব্যাপক জলসংকট দেখা দিয়েছে। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলও মিলছে না (Pakistan)। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহবাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইহসান আফজল রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানের জল বন্ধ করতে পারে, তাহলে চিনও ভারতের সঙ্গে একই কাজ করতে পারে। মনে হয় সেটা একেবারেই ভালো কাজ হবে না। এমনটা চলতে থাকলে পৃথিবীজুড়ে এক নয়া যুদ্ধ শুরু হবে (Himanta Biswa Sarma)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share