Colombia Support India: অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ভারতকে সমর্থন! পাকিস্তানিদের জন্য সমবেদনার বিবৃতি প্রত্যাহার করল কলম্বিয়া

colombia support india will issue a statement against pakistan after shashi tharoor's disappointment

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ আমেরিকায় বিরাট কূটনৈতিক জয় ভারতের। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ (Operation Sindoor) নিহত পাকিস্তানিদের জন্য সমবেদনা জানিয়েছিল কলম্বিয়া সরকার (Colombia Support India)। ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল সেই দেশে গিয়ে কলম্বিয়ার বিবৃতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে। অবশেষে সেই বিতর্কিত বিবৃতি প্রত্যাহার করল কলম্বিয়া। এমনটাই দাবি সে দেশে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা শশী থারুরের (Shashi Tharoor)। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কলম্বিয়ার বিদেশমন্ত্রী নতুন বিবৃতিও প্রকাশ করেছেন।

পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছে কলম্বিয়া

কলম্বিয়ার (Colombia Support India) বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছেন। কাশ্মীরে কী ঘটেছিল, তা-ও বিশদে জানতে পেরেছেন। কলম্বিয়া সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের। সেখানে ছিলেন কলম্বিয়ার বিদেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী রোসা ইয়োলান্দা ভিলাভিসেন্সিয়ো। সমাজমাধ্যমে শশী থারুর লিখেছেন, ‘‘কলম্বিয়ার মন্ত্রী রোসা এবং তাঁর সিনিয়র সহকর্মীদের সঙ্গে একটি দুর্দান্ত বৈঠক হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় ভারতের অবস্থান ওঁদের জানিয়েছি। পাকিস্তানিদের জন্য ‘আন্তরিক সমবেদনা’ প্রকাশ করে ওঁরা যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তাতে আমরা হতাশ, ওঁদের বলেছি। মন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ওই বিবৃতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান ওঁরা বুঝেছেন এবং সমর্থন করেছেন।’’

শশী থারুরের ক্ষোভ

আসলে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি কলম্বিয়া। উলটে পাকপন্থী বিবৃতি দেয় বোগাতা। ভারতীয় সেনার অভিযানে নিহত পাক নাগরিকদের পরিবারকে শোক জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল দেশটি। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তোলে দক্ষিণ আমেরিকার ওই দেশ। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ভারতের অবস্থান বোঝাতে কলম্বিয়ায় পৌছেই এই বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় প্রতিনিধি দল। কলম্বিয়া সরকারের আচরণে তাঁরা যে হতাশ, সে কথা সে দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখের উপরেই বলে দেন থারুররা।

সন্ত্রাসবাদ এবং তার প্রতিরোধকারীরা এক নয়

সন্ত্রাস দমনে ভারতের(Colombia Support India) ভূমিকায় পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের একাধিক প্রথম সারির দেশ। আমেরিকা থেকে ফ্রান্স, জাপান থেকে ইন্দোনেশিয়া, একের পর এক দেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পেশ করছেন ভারতের সংসদীয় দলের প্রতিনিধিরা। এর মাঝে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল তুরস্ক। সেই তালিকায় ছিল কলম্বিয়াও। পাকিস্তানে নিহতদের প্রতি কলম্বিয়া সমবেদনা জানানোয় নিন্দা প্রকাশ করে শুক্রবার সে দেশের রাজধানী বোগাতায় সাংবাদিকদের থারুর বলেন, “কলম্বিয়া সরকারের প্রতিক্রিয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি। তাঁরা ভারতের আক্রমণে নিহত পাকিস্তানিদের জন্য আন্তরিক সমবেদনা জানালেন। সন্ত্রাসবাদের বলি হয়েছেন যাঁরা, তাদের জন্য নয়! আমরা কলম্বিয়ার বন্ধুদের বলতে চাই, সন্ত্রাসবাদ এবং তার প্রতিরোধকারীদের কোনওভাবেই এক করে দেওয়া যায় না। কেউ আক্রমণ করে, কেউ রক্ষা করে, এদের মধ্যে কোনও সমতা নেই। আমরা আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছি মাত্র। যদি কোথাও কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তার মীমাংসার জন্য আমরা আছি।”

একাধিক জঙ্গি হামলা সহ্য করেছে ভারত

এর পরেই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বিস্তারিত বিবরণ এবং পরবর্তীকালে পাকমদতপুষ্ট জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিস্তারিত বিবরণ দেন থারুর। সংসদীয় প্রতিনিধিদল জানায়, নয়াদিল্লির কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, ২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলার পিছনে পাকিস্তান মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা জড়িত ছিল। থারুরের সংযোজন, ‘আমরা কেবল আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছি। পরিস্থিতি সম্পর্কে কলম্বিয়ার সঙ্গে কিছু বিস্তারিত কথা বলতে পেরে আমরা খুব খুশি। ঠিক যেমন কলম্বিয়া অনেক সন্ত্রাসবাদী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি ভারতেও একাধিক জঙ্গি হামলা হয়েছে। আমরা বিগত প্রায় চার দশক ধরে অনেক জঙ্গি হামলা সহ্য করেছি।’

ভারতের পাশে কলম্বিয়া

থারুরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি পানামা এবং গুয়েনা সফরের পর বৃহস্পতিবার কলম্বিয়ায় পৌঁছয়। থারুরদের প্রতিবাদের পর কূটনৈতিক স্তরেও দুদেশের মধ্যে আলোচনা হয়। এর পর কলম্বিয়ার (Colombia Support India) চেম্বার অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ্‌সের সেকেন্ড কমিশনের (ভারতের বিদেশ বিষয়ক কমিটির সমান) প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো তোরো এবং চেম্বার অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভ্‌সের প্রেসিডেন্ট (ভারতের লোকসভার স্পিকারের সমান) জেমি রল সালামান্‌কার সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। থারুর জানিয়েছেন, কলম্বিয়ার এই আধিকারিকেরাও ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছেন। থারুরের পাশে দাঁড়িয়ে এর পর কলম্বিয়ার বিদেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী বলেন, ‘‘কী ঘটেছিল, আমরা তার ব্যাখ্যা পেয়েছি। কাশ্মীরে কী ঘটেছিল সেই সম্পর্কে এখন আমাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।’’ সূত্রের দাবি, দ্রুতই ভারতের পক্ষে জোরাল বিবৃতি দেবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা বিজেপি নেতা তরণজিৎ সিং সান্ধুও জানিয়েছেন, ভারতীয় প্রতিনিধিদলের চাপে অবস্থান বদলাতে বাধ্য হয়েছে কলম্বিয়া। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির অবস্থান বা মতামত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, শীঘ্রই তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হতে চলেছে। পুরো বিষয়টিকে ভারতের বড় কূটনৈতিক জয় হিসাবে দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।

 

 

 

 

 

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share