মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আত্মনির্ভরতার পথে আরও এক ধাপ এগোতে চলেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। এবার দেশে তৈরি তেল ট্যাঙ্কার কিনতে চলেছে ভারত। ২০৪০ সালের মধ্যে ১১২টি তেল ট্যাঙ্কার কেনার জন্য প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে সরকার। বিদেশি নৌবহরের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে তেল সরবরাহ সুরক্ষিত (Indian Maritime security) করার জন্যই এই উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির “মেক ইন ইন্ডিয়া” (Make in India) উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই বিনিয়োগ ভারতের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
ধাপে ধাপে কেনা হবে ট্যাঙ্কার
বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পুরনো ট্যাঙ্কার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করে। তবে এবার এই নির্ভরতা কাটাতে এবং নিজস্ব ট্যাঙ্কার বহর গড়ে তুলতে চাইছে পেট্রোলিয়াম ও জাহাজ পরিবহণ মন্ত্রক। প্রথম ধাপে ৭৯টি ট্যাঙ্কার কেনা হবে, যার মধ্যে ৩০টি হবে মিডিয়াম রেঞ্জ ক্যাটেগরির। চলতি মাসেই প্রথম ধাপে ১০টি ট্যাঙ্কারের অর্ডার দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রকল্পে শুধুমাত্র ভারতে নির্মিত জাহাজকেই বিবেচনা করা হবে। তবে বিদেশি কোম্পানির সহযোগিতায় জাহাজ নির্মিত হলেও আপত্তি নেই কেন্দ্রের। ভারতের সবচেয়ে বড় দেশীয় ট্যাঙ্কার এমটি মহর্ষি পরশুরাম – যার দৈর্ঘ্য ২৩৮ মিটার ও ডেডওয়েট টনেজ ৯৩,৩৩২।
কেন এই পদক্ষেপ
দেশের (Indian Maritime security) অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ভারত আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তার অপরিশোধিত তেল শোধন ক্ষমতা ২৫০ মিলিয়ন টন থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ মিলিয়ন টনে উন্নীত করতে চায়। ভারতের অপরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে আমদানি নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। তাই নিজস্ব ট্যাঙ্কার বহর থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের নিজস্ব অয়েল ট্যাঙ্কার থাকলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশীয়ভাবে তৈরি ট্যাঙ্কারের অংশীদারিত্ব ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ৬৯ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
আত্মনির্ভর ভারতই লক্ষ্য সরকারের
ভারত চায় আগামী দিনে একটি “মেড ইন ইন্ডিয়া” নৌবহর গড়ে তুলতে। চলতি বছর বাজেটে সরকার ২৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে দেশের সামুদ্রিক পরিবহণ খাতের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো এবং বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই পরিকল্পনায় শুধুমাত্র তেল নয়, কয়লা, সার ও ইস্পাত পরিবহণের জন্যও জাহাজ নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশে জাহাজ নির্মাণের জন্য জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নির্মাতাদের সঙ্গে কথা বলছে সরকার। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এইচডি হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে কেরালার কোচিতে একটি নতুন জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারে। এছাড়া, স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ও জাপানের এনওয়াইকে লাইনের সঙ্গেও জাহাজ নির্মাণে ভারতীয় অংশীদারিত্বে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
Leave a Reply