India Pakistan War: ‘‘পাকিস্তান একে এখনও জয় বলবে?’’ ইসলামাবাদের দাবি খারিজ মার্কিন সংবাদমাধ্যমের

india pakistan war satellites indicate no damage in bharat, is Pak still going to call it a victory after operation sindoor

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তাতে মৃত্যু হয় ২৬ জনের। তারই পাল্টা হিসেবে কৌশলগত সামরিক অভিযান অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। একশো জঙ্গি নিকেশ করা হয়। বে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চারদিন ধরে চলা ভারত-পাকিস্তান (India Pakistan War) সীমান্ত সংঘর্ষ ঘিরে তথ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কে ‘জিতল’ ভারত-পাক সংঘাত? উল্লেখ্য, সংঘর্ষবিরতির পর থেকেই পাকিস্তানে উল্লাসের আমেজ। এমনকী জয় ঘোষণা করে দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও। তবে এবার স্যাটেলাইট ছবি তুলে ধরে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে পাকিস্তানের যে সামরিক ঘাঁটি ও বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করেছে ভারত, তার ‘স্পষ্ট প্রমাণ’ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান যে দাবি করছে, তার কোনও স্যাটেলাইট চিত্র নেই। এরপরই বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইসলামাবাদ যা দাবি করছে, তার অধিকাংশই ভুয়ো।

উপগ্রহ চিত্রের বিশ্লেষণ

নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক সাংবাদিক টুইটে উপহাসের সুরে লেখেন, “ভারতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না করে পাকিস্তান কি এখনও একে জয় বলবে?” মার্কিন সংবাদমাধ্যমের উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, ভারতীয় বাহিনীর আঘাতে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হলেও, পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী ভারতের বিভিন্ন স্থানে তাদের হামলার তেমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ যেসব আক্রমণের দাবি করেছেন, সেগুলির অনেকটাই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত অপ্রমাণিত ফুটেজের উপর ভিত্তি করে। এমনকি পাকিস্তান (India Pakistan War) দাবি করেছিল তারা আদমপুর বায়ুসেনা ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে, যা উপগ্রহ চিত্রে প্রমাণিত হয়নি। বরং, ভারতীয় বায়ুসেনার আধিকারিক এয়ার মার্শাল একে ভারতী জানিয়েছেন, “পাকিস্তানের বহু ড্রোন এবং বিমান আক্রমণ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে, কোনও সুনির্দিষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।” যার প্রমাণ মিলেছে উপগ্রহ চিত্রে।

আকাশপথে হানা ও অসামরিক উড়ান ব্যাহত

ভারতের (India Pakistan War) একাধিক শহর – জম্মু, উধমপুর, পাঠানকোট, অমৃতসর, ভাতিন্ডা, জয়সলমীর সহ ১২টিরও বেশি অঞ্চলে ব্ল্যাক আউট ঘোষণা করা হয় ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের হানার আশঙ্কায়। মে ৭ থেকে মে ১০ পর্যন্ত ওই অঞ্চলে অসামরিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। ২০০-র বেশি অভ্যন্তরীণ উড়ান বাতিল ও একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানের হামলায় সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। কিন্তু সন্ত্রাস দমনের জন্যেই লড়ছে ভারত। জঙ্গিদের খতম করার জন্যেই করা হয়েছিল অপারেশন সিঁদুর। কোনও নির্দিষ্ট দেশের সেনা বা জনবসতি লক্ষ্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনী কোনও আক্রমণ করেনি। তবে, সামরিক ঘাঁটি ও জনবসতি এলাকা লক্ষ্য করে পাকিস্তান আক্রমণ করার কারণে হাত গুটিয়ে বসে ছিল না ভারতীয় সেনা বাহিনী। এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী জানান, নির্দিষ্ট কিছু পাকিস্তানি এয়ারফিল্ড উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। যার স্যাটেলাইট চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘যুদ্ধের আগে ও পরে উচ্চ রেজুলেশনের স্যাটেলাইট চিত্রে ভারতীয় হামলায় পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোর ‘স্পষ্ট ক্ষতি’ দেখা গিয়েছে।’’ ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘‘স্যাটেলাইট চিত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে ভারতের হামলা ব্যাপক ছিল। ভারতের হামলায় বেশিরভাগ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পাকিস্তানের সামরিক কেন্দ্রগুলোতে। হাই-টেক যুদ্ধের নতুন যুগে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে আক্রমণ চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। স্যাটেলাইট চিত্রে তারই প্রমাণ মিলেছে।’’

পাকিস্তানি হামলায় ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট কোনও চিত্র নেই

ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘দ্বিতীয় দফার লড়াইয়ে প্রতীকী হামলা ও শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে একে অপরের প্রতিরক্ষা কেন্দ্রগুলির ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল ভারত ও পাকিস্তান। এই আবহে পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা ও বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ভারত স্পষ্টতই এগিয়ে রয়েছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পাকিস্তানের করাচি বন্দরের কাছে ভোলারি বিমান ঘাঁটিতে নিখুঁত হামলা চালিয়েছেন।’’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের দাবি অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, ভোলারি সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া, নূর খান বিমান ঘাঁটিকেও নিশানা করেছিল ভারত। নূর খান বিমান ঘাঁটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দফতর এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধান ও সুরক্ষা ইউনিটেরও কাছেই অবস্থিত।’’ ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে যে, তারা পাকিস্তানের কয়েকটি প্রধান বিমানবন্দরের রানওয়েকে নিশানা করেছিল। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সেই দাবি অনুযায়ী উপগ্রহ চিত্রে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন স্পষ্ট। এদিকে ১০ মে রহিম ইয়ার খান বিমানবন্দরে রানওয়ে চালু না থাকার কথা জানিয়ে নোটিশও জারি করেছিল পাকিস্তান। এছাড়া পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোধা বিমানবন্দরের রানওয়ের দুটি অংশে হামলা চালানোর দাবি করেছে ভারতীয় সেনা। এদিকে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘যেসব জায়গায় পাকিস্তান (India Pakistan War) আঘাত হেনেছে বলে দাবি করা হয়েছে সেসব স্থানের স্যাটেলাইট ইমেজে সীমিত এবং পাকিস্তানি হামলায় ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট কোনও চিত্র এখনও দেখা যায়নি।’’

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share