Kali Puja 2025: ভূত চতুর্দশীতে সত্যিই কি মর্ত্যলোকে নেমে আসেন বিদেহী আত্মারা!

Kali Puja 2025 significance of bhoot chaturdashi 2025 indian halloween naraka chaturdashi hindu mythology

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi 2025)। এই তিথিকে আবার অনেকে নরক চতুর্দশী (Naraka Chaturdashi) বলেও জানেন। কালী পুজোর (Kali Puja 2025) একদিন আগে ও ধনতেরসের একদিন পর ভূত চতুর্দশী পালিত হয়। এই তিথিটি ছোট দীপাবলি (Deepawali 2025), রূপ চতুর্দশী বা নরকা পুজো নামেও পরিচিত। এদিন মৃত্যুর দেবতা যম ও কৃষ্ণের পুজো করা হয়। অকাল মৃত্যু থেকে বাঁচতে নরক চতুর্দশীতে পুজো করা হয়। অনেকে এই দিনটিকে পশ্চিমী হ্যালোউইনের ভারতীয় সংস্করণ (Indian Halloween) হিসেবেও দেখেন। পুরাণ মতে, ভূত চতুর্দশীর রাতে শিবভক্ত বলি মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে, সঙ্গে আসেন তাঁর অনুচর ভূতেরা। চতুর্দশী তিথির ভরা অমাবস্যায় (Kali Puja 2025) চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে। সেই ঘন অন্ধকারে যাতে বলি রাজার অনুচরেরা বাড়িতে ঢুকে না পড়েন, তার ব্যবস্থাই করা হত প্রাচীন কালে। ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে জড়িত পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, ঘোর অমাবস্যার রাতে বিদেহী আত্মারা নেমে আসেন মর্ত্যলোকে। এর ঠিক পরের দিনই চন্দ্রের তিথির নিয়ম মেনে হয় দীপান্বিতা কালীপুজো।

কৃষ্ণ-সত্যভামার হাতে নরকাসুর-বধ কাহিনী

ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশীতে মুক্তিলাভের আশায় পুজো (Kali Puja 2025) করা হয়। এদিন সূর্যোদয়ের আগে উঠে স্নান করার প্রথা রয়েছে। মনে করা হয় এর প্রভাবে যমলোকের দর্শন করতে হয় না। বিষ্ণু পুরাণ ও শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, নরকাসুর নামক এক অসুর নিজের শক্তির দ্বারা দেবতা ও মনুষ্যদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। ১৬ হাজার স্ত্রী এবং সাধুকে বন্দি বানিয়ে রেখেছিল নরকাসুর (Narakasura)। এরপর মুনি-ঋষিরা কৃষ্ণের দ্বারস্থ হন। নরকাসুরের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব নেন কৃষ্ণ। কিন্তু শুধু স্ত্রীর হাতে মৃত্যুর অভিশাপ পেয়েছিল নরকাসুর। এই কারণে কৃষ্ণ নিজের স্ত্রী সত্যভামাকে সারথী করেন এবং তাঁর সাহায্যে নরকাসুরকে বধ করেন। যেদিন নরকাসুর বধ হয়েছিল, সেই দিনটি ছিল কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি (Kali Puja 2025)। তাই তিথিকে নরক চতুর্দশী বলা হয়।

এদিন বেরিয়ে আসে অশরীরী প্রেতাত্মারা!

আবার এই তিথিটিকে ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi 2025) বলার পিছনের আরেক ব্যখ্যা হল, মনে করা হয়, এই তিথিতে সন্ধ্যা নামলেই অশরীরী প্রেতাত্মারা বেরিয়ে আসে। তাদের হাত থেকে মুক্তি পেতে এই তিথিতে গৃহস্থ বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। আবার আর একটি প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এই তিথিতে চোদ্দ পুরুষের আত্মার আসা-যাওয়া থাকে। মনে করা হয় তাঁদের যাতায়াতের পথ আলোকিত রাখার জন্যই প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করার প্রথা রয়েছে।

হ্যালোউইন শব্দের অর্থ কী?

আমাদের দেশে যেমন কালীপুজোর (Kali Puja 2025) আগের রাতে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী, পশ্চিমী দুনিয়ায় তেমনই সবাই মেতে ওঠেন হ্যালোউইন ঘিরে। প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর মৃত আত্মাদের স্মরণ করতে হ্যালোউইন পালিত হয়। আমাদের দেশেও গত কয়েক বছর ধরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে হ্যালোউইন। স্কটিশ শব্দ ‘অল হ্যালোজ ইভ’ থেকে হ্যালোইন বা হ্যালোউইন শব্দটি এসেছে। এই শব্দের উৎপত্তি মোটামুটি ১৭৪৫ সালে। হ্যালোউইন শব্দের অর্থ পবিত্র সন্ধ্যা। হ্যালোউইনের কথা বলতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে কুমড়ো এবং ভুতুড়ে সাজগোজ। হ্যালোউইনে কুমড়ো কেটে সেখানে নাক, চোখ, মুখ বানিয়ে ভৌতিক চেহারা তৈরি করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। তার পরে এর ভিতরে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অন্ধকার রাতে কুমড়োর ভেতরে মোমবাতি জ্বলায় তা আরও ভৌতিক দেখতে লাগে। ভৌতিক কস্টিউম পরে অনেকেই এদিন অন্যকে ভয় দেখিয়ে মজা করে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share