Kali Puja 2025: ভূত চতুর্দশীর সন্ধ্যায় জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ, কোথায় রাখতে হয়?

Kali Puja 2025 significance of eating 14 leafy vegetables lighting 14 diyas bhoot chaturdashi 2025 naraka chaturdashi

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালী পুজোর (Kali Puja 2025) এক রাত আগে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi 2025) বা নরক চতুর্দশী (Naraka Chaturdashi)। বাংলার ঘরে ঘরে ভূত চতুর্দশীর দিনে ১৪ শাক খাওয়ার ও ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি রয়েছে।

দুপুরে ১৪ শাক, সাঁঝে ১৪ বাতি

ভূত চতুর্দশীর দিনে যে ১৪টি শাক (14 Saag) খাওয়া হয়, সেগুলি হল— জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, ওল, পুঁই, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, পলতা, শুলকা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা ও শুষণী। এই শাক খেয়ে এবং সন্ধেবেলা ১৪ প্রদীপ (14 Diya) জ্বালিয়ে দুরাত্মা ও অন্ধকার দূর করার রীতি প্রচলিত আছে। শাস্ত্রমতে, মৃত্যুর পর মানুষের শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। অর্থাৎ মাটি, জল, হাওয়া, অগ্নি ও আকাশ। তাই মাটি থেকে তুলে আনা শাক খেলে অতৃপ্ত আত্মারা শান্তি পায়। যে জল দিয়ে ১৪ শাক (Bhoot Chaturdashi 14 Saag) ধোয়া হয়, সেই জল আবার অনেকে বাড়িতেও ছেটান। মনে করা হয়, এর ফলে অশুভ শক্তি দূর হয় ও বাধা-বিঘ্ন কেটে যায়।

১৪ ভুবনের জন্য ১৪ প্রদীপ! (Kali Puja 2025)

দুপুরে ১৪ শাক খাওয়ার পর সন্ধেবেলা জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ । পুরাণে ১৪টি ভুবনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যার সাতটি স্বর্গ ও সাতটি পাতাল। ভূঃ, ভুবঃ, স্বঃ, জনঃ, মহঃ, তপঃ ও সত্য হল স্বর্গ। অন্যদিকে মাটির নীচে রয়েছে অতল, বিতল, সুতল, তলাতল, মহাতল, রসাতল এবং পাতাল এই ১৪ লোকের বাসিন্দাদের সম্মান জানাতে এদিন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, ভূত চতুর্দশীর দিনে কিছু সময়ের জন্য স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়, তখন আত্মারা মর্ত্যে নেমে আসে। ভূত-প্রেত নিয়ে এদিন রাজা বলিও মর্ত্যে আসেন বলে মনে করা হয়। এই দিনে অশুভ শক্তির প্রকোপ বৃদ্ধি পায় বলে একটা বিশ্বাস প্রচলিত আছে। এই অশুভ শক্তিকে নিজের বাড়ি থেকে দূরে রাখতেই ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে।

১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে…

আবার অন্য বিশ্বাস অনুযায়ী, ১৪ পুরুষের (Kali Puja 2025) উদ্দেশ্যে এই ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়। এই ১৪ পুরুষ হলেন, পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, মাতা, পিতামহী, প্রপিতামহী, মাতামহ, প্রমাতামহ, বৃদ্ধপ্রমাতামহ, মাতামহী, প্রমাতামহী ও বৃদ্ধপ্রমাতামহী। এ ছাড়াও শ্বশুর-শাশুড়ি। অশুভ আত্মাদের হাত থেকে বাঁচতে ভূত চতুর্দশীর দিনে যে মন্ত্র জপ করা হয়, তা হল ‘শীতলঞ্চ সমাযুক্ত সকণ্টক দলান্বিত। হরপাপ সপামার্গে ভ্রাম্যমাণঃ পুনঃ পুনঃ’। এই মন্ত্র পাঠের ফলে অশুভ আত্মার ভয় কেটে যায়।

হিন্দুমতে মনে করা হয়, ভূত চতুর্দশীর (Bhoot Chaturdashi 2025) রাতে শিবভক্ত রাজা বলি ও তাঁর অনুচরেরা মর্ত্যে পুজো নিতে আসেন। চতুর্দশী তিথির ভরা অমাবস্যার অন্ধকারে রাজা বলির অনুচরেরা যাতে পথ ভুলে বাড়িতে ঢুকে না-পড়েন, তাই এই প্রদীপ জ্বালানোর রীতি প্রচলিত আছে। আবার অন্য একটি প্রথা অনুযায়ী, পিতৃপক্ষের সময় পিতৃপুরুষদের মর্ত্যে আগমন হয়। এই চতুর্দশী তিথিতেই তাঁরা ফিরে যান। সে সময় অন্ধকারে পথ দেখানোর জন্য ১৪ প্রদীপ (Bhoot Chaturdashi 14 Diya) জ্বালানো হয়।

কোথায় কোথায় জ্বালবেন ১৪ প্রদীপ?

এই সময়ে বাড়ির ঠাকুরঘরে প্রদীপ দেওয়াটা সর্বাধিক প্রয়োজন। বাড়িতে তুলসীমঞ্চ থাকলে, সেখানেও একটি প্রদীপ দিতে হবে। বাড়ির সদর দরজায় দুপাশে দুটি প্রদীপ দিতে হবে। তাতে একটি করে লবঙ্গ রাখতে পারেন। বাড়ির যেখানে জলের ব্যবস্থা রয়েছে বা কলতলায় একটি প্রদীপ দিতে হবে। বাড়ির দক্ষিণ দিকে একটি প্রদীপ জ্বালাতে হবে (Kali Puja 2025)। বাড়িতে মাটির উনুন থাকলে, সেই উনুনে একটি প্রদীপ দিন। প্রতিটি প্রদীপই ১৪ পুরুষের প্রতীক।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share