PM Modi: ৪ বার ফোন করেন ট্রাম্প, একবারও ধরেননি ক্ষুব্ধ মোদি! বড় দাবি জার্মান পত্রিকার

Donald Trumps remark over india he says Lost India, Russia to Darkest China

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে যে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা মানুষ লুকিয়ে রয়েছেন (PM Modi), তা বুঝতে পারেননি সরল সাদাসিধে মানুষটি। যখন বুঝতে পারলেন, তখন মুখের মতো জবাব দিলেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (Donald Trump)। আজ্ঞে হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাই বলছি। ভারত-মার্কিন শুল্ক-সংঘাতের জেরে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে দুই দেশের। তার পর সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চারবার ফোন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানা গিয়েছে, একবারও ফোন ধরেননি প্রধানমন্ত্রী। জার্মান পত্রিকা ‘ফ্র্যাঙ্কুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং’য়ের এক প্রতিবেদনেই এমন দাবি করা হয়েছে। পত্রিকাটির দাবি, ভারতীয় পণ্য নিয়ে ওয়াশিংটনের ধারাবাহিক উসকানিমূলক মন্তব্য এবং শুল্ক বৃদ্ধি আরোপের কারণে এমন পদক্ষেপ করেন ক্ষুব্ধ ও সতর্ক মোদি।

জার্মান পত্রিকার প্রতিবেদন (PM Modi)

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প এর আগে ভারতকে ‘মৃত অর্থনীতি’র দেশ বলে মন্তব্য করেছিলেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। পরে ফের একপ্রস্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। গত ৩১ জুলাই ট্রাম্প বলেন, “আমি পরোয়া করি না ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করে। তারা চাইলে একসঙ্গে তাদের মৃত অর্থনীতি ধ্বংস করতে পারে।” এরই কয়েক দিন পর ১০ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী পরোক্ষে পাল্টা জবাব দেন ট্রাম্পকে। তিনি ঘোষণা করেন, ভারত বিশ্বের শীর্ষ তিন অর্থনীতির মধ্যে একটি হওয়ার পথে এগোচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে এও বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ট্রাম্প বাণিজ্যিক বিরোধে প্রায় সব প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে সফল হয়েছেন। ব্যতিক্রম ভারত। বরং নয়াদিল্লি পুরনো দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে এখন তার শক্তিশালী প্রতিবেশী চিনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। যার জেরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ট্রাম্প প্রশাসন (PM Modi)। এ পর্যন্ত ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ একটি নির্দিষ্ট ধারা মেনে এসেছে। বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ, শুল্কের হুমকি, এরপর উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা যেখানে বিদেশি নেতারা শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করেন, শেষমেশ শুল্ক কার্যকর করা হয়, পরে আলোচনার মাধ্যমে কিছুটা শিথিলও করা হয়। একে নিজের সাফল্য বলেই জাহির করতে থাকেন ট্রাম্প। তবে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের তালিকায় চার নম্বরে থাকা দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশটিকে চোখ রাঙাবে, তা বোধহয় কল্পনাও করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump)।

বৃহৎ পরিসরের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বৃহৎ পরিসরের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল। লক্ষ্য ছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা। আশা করা হচ্ছিল, এ বছরের শেষের দিকে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে। কিন্তু উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় তখন, যখন ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। আমেরিকার দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেও নয়াদিল্লি রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। তাই এই শাস্তি (PM Modi)।ভারতের বিদেশমন্ত্রক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়ে সমালোচনাকে অন্যায্য বলে নিন্দে করেছে। শুল্ক বৃদ্ধির পর ২৫ অগাস্ট নয়াদিল্লিতে যে ষষ্ঠ দফা আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল, তাও বাতিল করা হয়।

এক্স হ্যান্ডেলে জার্মান পত্রিকার প্রতিবেদন

বার্লিনের গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ইনস্টিটিউটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক থরস্টেন বেনার এক্স হ্যান্ডেলে জার্মান পত্রিকার প্রতিবেদনটি তুলে ধরে লিখেছেন, “ফ্র্যাঙ্কুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং দাবি করেছে যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ট্রাম্প মোদিকে চারবার ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু মোদি ফোন ধরেননি।” পত্রিকাটি মনে করিয়ে দেয় যে ট্রাম্প ভিয়েতনামের সঙ্গে ফোনে একটি চুক্তি নতুন করে আলোচনা করেছিলেন। তারপরে একতরফাভাবে অনলাইনে সেটিকে সফল ঘোষণা করেছিলেন। মোদি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে তিনি ট্রাম্পের পাতা ওই ফাঁদে পা দেবেন না (PM Modi)।

বিপাকে ট্রাম্প

ভারত তার মোট রফতানির প্রায় পাঁচভাগের একভাগই পাঠায় আমেরিকায়। এর সিংহভাগই হল বস্ত্র, রত্নপাথর ও অটো পার্টস। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এতে ভারতের প্রবৃদ্ধি বার্ষিক ৬.৫ শতাংশ থেকে কমে ৫.৫ শতাংশে নেমে যেতে পারে (Donald Trump)। তবে অভ্যন্তরীণভাবে সমঝোতায় পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যদিও জনমত তীব্রভাবে ট্রাম্পবিরোধী হয়ে উঠেছে। জার্মান ওই পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতি ট্রাম্পের বিতর্কিত পদক্ষেপকে (যার মধ্যে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে একটি নৈশভোজও রয়েছে) উসকানি হিসেবেই দেখেছে ভারত। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি সাত বছর পর প্রথমবারের মতো চিন সফরে যাচ্ছেন এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন) সম্মেলনে অংশ নিতে। এই সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস-সহ আরও অনেক নেতাও উপস্থিত থাকবেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এতেই ভয় পাচ্ছেন ট্রাম্প (Donald Trump)। তাই বোধহয় সম্পর্কের (PM Modi) বরফ গলাতে মোদিকে চারবার ফোন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share