Rajnath Singh: “যুদ্ধে ইতি টানতে ভারতের হাতে-পায়ে ধরেছিল পাকিস্তানই”, সংসদে রাজনাথ

Rajnath singh on operation sindoor

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  “যুদ্ধে ইতি টানতে ভারতের হাতে-পায়ে ধরেছিল পাকিস্তানই।” সংসদে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা স্পষ্টভাবে বললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)।

লোকসভায় শুরু ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা

সোমবার লোকসভায় শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আলোচনা। সংসদে শুরু হয়েছে বাদল অধিবেশন। সেই অধিবেশনে এই অভিযান নিয়ে আলোচনা শুরুর পরেই দাঁড়িয়ে উঠে বলতে থাকেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই আলোচনা অনেক আগেই শুরু হয়ে যেতে পারত। কিন্তু বিরোধীদের প্রতিবাদের কারণে সংসদ মুলতুবি থেকেছে।”

ভারতীয় সেনার অবদান

অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজনাথ মনে করিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় সেনার অবদানের কথাও। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, অপারেশেন সিঁদুর (Operation Sindoor) আদতে ভারতীয় সেনার সাফল্যের কাহিনি। রাজনাথ (Rajnath Singh) বলেন, “অপারেশন সিঁদুর যে সাফল্য ছুঁয়েছে, সে প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য আজ এই সংসদ তৈরি। আমি সেই জওয়ানদের সম্মান জানাই, যাঁরা এই দেশের জন্য নিজেদের প্রাণ দান করেছেন, যাঁরা এখনও এই দেশের প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে চলেছেন।” তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুরের আগে এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করেই এগিয়ে গিয়েছে আমাদের সেনা। অপারেশনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে নজরে রাখা হয়েছে। মাথায় রাখা হয়েছে যেন কোনওভাবেই সাধারণ মানুষের প্রাণ না যায়। আর এভাবেই মাত্র ২২ মিনিটেই পাকিস্তানের ভেতরে থাকা ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “ভারতের প্রত্যাঘাতের জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা আঘাত হানে। তবে দেশের আকাশরক্ষী সুদর্শন চক্র বা এস-৪০০ সেই হামলা প্রতিহত করে (Rajnath Singh)।”

সেনাকে ফ্রি-হ্যান্ড

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “অপারেশন সিঁদুরের জন্য ভারতের সামরিক বাহিনীকে একেবারে ফ্রি-হ্যান্ড দেওয়া হয়েছিল। কোন কোন (Operation Sindoor) জায়গায় হামলা চালানো হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সামরিক বাহিনীই। একেবারে নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করে হামলা চালানো হয়েছিল।” তিনি বলেন, “যেভাবে হনুমানজি লঙ্কায় নিজের রণনীতি তৈরি করেছিলেন, সে রকমভাবেই আমরা তাদের নিশানা করেছি, যারা আমাদের ক্ষতি করেছিল (Rajnath Singh)।”

কীভাবে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি

কীভাবে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি হয়েছে, এদিন তাও জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, ১০ মে পাকিস্তানের একাধিক এয়ারফিল্ডে প্রত্যাহার করে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই পরিস্থিতিতে নিজেদের হার মেনে নিয়ে সংঘর্ষ-বিরতির জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে (Operation Sindoor) পাকিস্তান। আর ভারত সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে একটাই শর্তে, তা হল অপারেশন সিঁদুর কেবল স্থগিত করা হয়েছে। পাকিস্তান যদি ফের ভুলভাল কাজ করে, তাহলে আবারও পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। রাজনাথের জবাবেই স্পষ্ট, যেভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন, সেটা আদতে বিভ্রান্তিকর। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির জন্য ট্রাম্প বারবার নিজেই ক্রেডিট নিয়েছেন। ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিলেন (Operation Sindoor), “যুদ্ধে ইতি টানতে ভারতের হাতে-পায়ে ধরেছিল পাকিস্তানই (Rajnath Singh)।”

রসদের জোগানে জোর রাজনাথের (Rajnath Singh)

এর আগে, রবিবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজনাথ বলেছিলেন, “বন্দুক বা গুলি দিয়ে এখন আর যুদ্ধে জয়লাভ করা যায় না। যুদ্ধ জেতার অন্যতম হাতিয়ার এখন সামরিক রসদ সঠিক সময় জোগান দিতে পারা।” গতিশক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “পহেলগাঁও হামলার প্রতিক্রিয়ায় মে মাসে ভারতের অপারেশন সিঁদুর সে কথাই প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছে।” ভারতের রেলমন্ত্রকের অধীন এই বিশ্ববিদ্যালয় মূলত জোগানকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানকারই সমাবর্তনে ভাষণ দিতে গিয়ে যুদ্ধ জয়ের বর্তমান কৌশলটি বলে দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রসদের জোগানকে একটি কৌশলগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার ওপর জোর দেন রাজনাথ (Rajnath Singh)। তিনি বলেন, “রসদের জোগানই একটি যুদ্ধক্ষেত্রকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে। রসদের জোগান ঠিকঠাক না থাকলে গোটাটাই বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পরিণত হবে।” প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানোর পর প্রমাণিত হয়েছে একাধিক সংস্থার সমন্বয় কীভাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে। আধুনিক যুদ্ধ জয় এর ওপরই নির্ভর করে।” এর পরেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “যুদ্ধ কেবল বন্দুক এবং গুলি দিয়ে জেতা যায় না, বরং সময়মতো রসদ জোগানের ওপর নির্ভর করে (Operation Sindoor) কারা জিতবে, আর হারবেই বা কে।”

ভিন্ন সেনার জন্য পৃথক রসদের ব্যবস্থা

সব বাহিনীর জন্য যে একই রসদ নয়, এদিন তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজনাথ (Rajnath Singh)। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনায় রসদ জোগানের অর্থ ভিন্ন। সেনাবাহিনীর জন্য রসদ জোগানের অর্থ অস্ত্র, জ্বালানি, রেশন এবং ওষুধ প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া। আবার নৌবাহিনীর কাছে এর অর্থ হল জাহাজে খুচরো যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া। আর বায়ুসেনার কাছে এর অর্থ হল নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্রাউন্ড সাপোর্ট দিতে থাকা। এর পাশাপাশি প্রয়োজন জ্বালানি সরবরাহ ঠিক রাখা।”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share