Russia’s Victory Day Parade: সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি! মোদির পর রাশিয়া সফর বাতিল রাজনাথের, ভারত থেকে যাচ্ছেন কে?

pahalgam terror attack islamic terrorism’s bloody trail in jammu kashmir

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও কাণ্ডের জেরে আগেই রুশ সফর বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির পরিবর্তে রাজনাথের ৯ মে মস্কো সফরে যাওয়ার কথা ছিল। এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও রাশিয়ার বিজয় দিবসের (Russia’s Victory Day Parade) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মস্কো যাচ্ছেন না। অন্তত সূত্রের খবর এমনই। আগামী সপ্তাহেই রাশিয়ায় বিজয় দিবস পালন করার কথা। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। জানানো হয়, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সূত্রের খবর, এই সফর বাতিল করতে চলেছেন রাজনাথ সিং। তাঁর জায়গায় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন বলেও খবর। জানা গিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার পরে উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

রাশিয়ায় বিজয় দিবসের গুরুত্ব

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী (MoS) সঞ্জয় শেঠ। মস্কোর ওই অনুষ্ঠানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ বিশ্বের প্রায় ২০ দেশের প্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথা আছে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার পরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। যে কোনও সময় পাল্টা জবাব দিতে পারে নয়াদিল্লি। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই রাজনাথও তাঁর মস্কো সফর বাতিল করতে চলেছেন। ইতিমধ্য়েই পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এই হামলাকে নৃশংস অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়ার সমর্থন যে ভারতের সঙ্গে রয়েছে সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন পুতিন।

ভারতের পাশে রাশিয়া

প্রধানমন্ত্রী মোদির মস্কো সফর না করার সিদ্ধান্তের কারণ স্পষ্ট করেনি রাশিয়া (Russia’s Victory Day Parade)। রাশিয়ার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ও কুচকাওয়াজে বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা এবং সামরিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি গত বছর দুবার রাশিয়া সফর করেছিলেন। একবার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য এবং দ্বিতীয়বার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য। এই বছরের শেষের দিকে পুতিন দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত আসতে পারেন।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের

সীমান্তে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। এই নিয়ে টানা নবমবার বিনা প্ররোচনায় সীমান্তে গুলি ছুড়ল পড়শি দেশ। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শুক্রবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারা, উরি এবং আখনুর সেক্টরে গুলি ছুড়তে শুরু করে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও। পহেলগাঁও হামলার পরও নাগাড়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। এই নিয়ে দিন তিনেক আগেই সতর্ক করেছে ভারত। তবে সোজা পথে আসার বান্দা নয় পড়শি দেশ। ফের চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে সে দেশের সেনা।

প্রত্যাঘাতের দাবি

পহেলগাঁওয়ে হত্য়ালীলার (Pahalgam Terror Attack) পর প্রত্যাঘাতের দাবি দেশজুড়ে। তিন বাহিনীও বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা আঘাত হানতে প্রস্তুত। নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিচ্ছেন, কল্পনাতীত শাস্তি হবে। বিরোধীরাও জোটবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার পক্ষে!প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় কাঁপছে পাকিস্তানও। অজ্ঞাতবাস নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়ার পর আচমকা প্রকাশ্য়ে এসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানও বোঝানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা প্রস্তুত। এদিকে, পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ১১ দিন পরেও অধরা হামলাকারী জঙ্গিরা। কিন্তু কোনওভাবেই কাউকে যে ছাড়া হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে জঙ্গিদের খোঁজে উপত্যকা জুড়ে চলছে চিরুনি তল্লাশি। বিভিন্ন জঙ্গলে ও দুর্গম এলাকায় যৌথ অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। শ্রীনগরের আকাশ দিয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের দিকে ঘন ঘন উড়ছে সেনাবাহিনীর চপার! শুক্রবারও উপত্যকায় ছিলেন এনআইএ-র ডিজি সদানন্দ দাতে। এদিনও তিনি যান ঘটনাস্থলে। জরুরি বৈঠক করেন তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে।

সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি

ইতিমধ্যেই কাশ্মীর ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর মানুষ যুদ্ধের ‘প্রস্তুতি’ শুরু করেছেন। উভয় পক্ষই নিজেদের বাঁচানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতের দিকে চুরান্ডা এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠির মতো গ্রামগুলি সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় বাঙ্কার এবং সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করছে। জানা গিয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের স্থানীয় প্রশাসন সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারীদের দুই মাসের জন্য খাদ্যশস্য মজুত করার আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ার-উল-হক বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অবস্থিত ১৩টি নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের দু’মাস খাদ্যশস্য রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের মৌলিক চাহিদার কথা মাথায় রেখে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিলও গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকার রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকেও মোতায়েন করা হচ্ছে। কার্যত সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলছে প্রশাসন। পাকিস্তানে আতঙ্কের পরিস্থিতি এমন যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ১০০০ জঙ্গি ঘাঁটি বন্ধ করেছে পাকিস্তান। জঙ্গিদের সেখান থেকে সরানো হয়েছে। এছাড়া পাঞ্জাব থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। বড় শহরগুলির আকাশসীমাও প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পর্বে সাইরেনও লাগানো হচ্ছে। সদা সতর্ক রয়েছে ভারতীয় সেনাও।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share