মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বমঞ্চ থেকে ক্রমেই কি দূরে যাচ্ছে পাকিস্তান? অন্তত এমনই প্রশ্ন উঠছে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর। ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এসসিও সম্মেলন (SCO Summit) শেষে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif) পুতিনের সঙ্গে হাত মেলাতে দৌড়ে গিয়েছেন। এই ছবির জেরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ব্যাপকভাবে ট্রোলের শিকার হয়েছেন। এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও শেয়ার করে (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি মাধ্যম) এক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, “অন্য নেতারা যেখানে সংযম দেখিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দৌড়ে গিয়ে পুতিনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যেনতেনভাবে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা। শি জিনপিং বুঝতে পেরেছিলেন শাহবাজ কী করতে যাচ্ছেন, তাই তিনি অন্যদিকে তাকিয়ে তাঁকে উপেক্ষা করেন।”
এসসিও সম্মেলন (Shehbaz Sharif)
প্রসঙ্গত, চিনের উত্তরাঞ্চলে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলনে (SCO Summit) ১০টি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-সহ অন্যরা। অন্য একজন লিখেছেন, “এসসিও সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করেছেন আয়োজক দেশের প্রধান স্বয়ং শি।” ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুতিন যখন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে হাঁটছিলেন, তখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হঠাৎই পিছন থেকে এগিয়ে এসে পুতিনের সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করেন। ভিডিওটি ‘ইনকগনিটো’ নামের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একাই নজর কেড়ে নেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এই আচরণের জন্য নিন্দে করেছেন নেট নাগরিকদের একাংশ। কমেন্ট বক্সে প্রচুর ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য জমা হয়েছে। কেউ কেউ তাঁকে জোকারও বলেছেন। ভিডিওটি এখনও পর্যন্ত ৫ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে। তাতে জমা পড়েছে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি লাইক (Shehbaz Sharif)।
শাহবাজ শরিফের হোঁচট খাওয়ার ঘটনা
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মঞ্চে উপস্থিতির ক্ষেত্রে শাহবাজ শরিফের বেশ কয়েকবার হোঁচট খাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলনে পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় শাহবাজ শরিফ অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন। অনুবাদের জন্য ব্যবহৃত হেডফোন তিনি বারবার চেষ্টা করেও ঠিক করতে পারছিলেন না, সেটি বারবার খুলে যাচ্ছিল। এই সময় পুতিনকে হাসতে দেখা গিয়েছিল (SCO Summit)। সহকারীদের সাহায্য সত্ত্বেও এই সমস্যার কারণে বৈঠক শুরু হয় দেরিতে। ঘটনাটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রিয়া নভোস্তির ভিডিওতে ধরা পড়ে, যেখানে শরিফকে বলতে শোনা যায়, “কেউ কি আমাকে সাহায্য করতে পারেন?” এই ক্লিপ দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং পাকিস্তানের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ২০২৩ সালের জুন মাসে আর একটি মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, শরিফকে প্যারিসে গ্লোবাল ফিন্যান্সিং প্যাক্ট সম্মেলনের সময় এক মহিলা কর্মীর কাছ থেকে ছাতা নিচ্ছেন। নিজের ছাতা দিয়ে দেওয়ায় সেই কর্মী বৃষ্টিতে ভেজেন। এই ঘটনায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয় (Shehbaz Sharif)। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসেও বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন শরিফ। সেবার তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। পোস্টটি পাকিস্তানের এক্স হ্যান্ডেল নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত হয়। যার জেরে বিব্রত হন শরিফ (SCO Summit)।
শরিফকে উপেক্ষা মোদির
উল্লেখ্য, চিনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত এসসিও বৈঠকে অংশ নিতে দীর্ঘ সাত বছর পর চিন সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে মোদি উপেক্ষা করেছেন সম্পূর্ণভাবে। কূটনৈতিক মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রী এহেন আচরণের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইলেন পাকিস্তানকে। বার্তাটি হল, ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার কড়া অবস্থান বজায় রাখবে। আর সন্ত্রাস ও আলোচনা এক সঙ্গে চলতে পারে না (Shehbaz Sharif)।
বিশেষজ্ঞদের মত
প্রকাশ্যে আসা ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, সম্মেলন কক্ষের ভেতরে প্রবেশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমেই পুতিনের সঙ্গে উষ্ণ অভিবাদন বিনিময় করেন। এরপর তাঁরা দুজনে মিলে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর তাঁরা কথাবার্তা বলতে বলতে এগিয়ে যান। এই সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বারংবার মোদি ও পুতিনের দিকে তাকালেও, তাঁকে উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে যান তাঁরা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেই পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (SCO Summit)। শরিফকে প্রকাশ্যে উপেক্ষা করে তিনি ফের বুঝিয়ে দিলেন, ভারতের অবস্থান অপরিবর্তিত, সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া দেশগুলির সঙ্গে আলোচনার কোনও সুযোগ নেই (Shehbaz Sharif)।
Leave a Reply