US Strike on ISIS: খ্রিস্টানদের ওপর আক্রমণের জের! নাইজেরিয়ায় আইএস জঙ্গিঘাঁটিতে বিমান হামলা আমেরিকার

us strike on isis in nigeria over attacks on christians donald trump issues warning

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: খ্রিস্টানদের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রতিবাদে নাইজেরিয়ায় (Nigeria) আইএস জঙ্গিদের ঘাঁটির (ISIS Camp) উপর মার্কিন সেনাবাহিনী (US Army) একাধিক ‘প্রাণঘাতী’ বিমান হামলা (Airstrike) চালাল। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে একথা জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (US President Donald Trump)। তিনি জানান, তাঁর নির্দেশেই এই অভিযান চালানো হয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় (North-West Nigeria) সক্রিয় আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে এই হামলা হয়।

একাধিক নিখুঁত হামলা আমেরিকার

ট্রাম্পের অভিযোগ, এই ইসলামি জঙ্গিরা মূলত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষদের নিশানা করে হত্যা করছিল। হোয়াইট হাউসের (White House) দাবি অনুযায়ী, নাইজেরিয়ায় সাম্প্রতিক হিংসা এমন মাত্রায় পৌঁছেছিল, যা বহু দশক এমনকী শতাব্দী ধরে দেখা যায়নি। ট্রাম্প আরও বলেন, আগেই তিনি এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে সতর্ক করেছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি তাদের জানিয়েছিলাম, খ্রিস্টানদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হলে তার ভয়াবহ পরিণতি হবে – আর সেটাই হয়েছে।” প্রেসিডেন্টের দাবি, অভিযানে ‘একাধিক নিখুঁত হামলা’ চালানো হয়েছে, যা মার্কিন সেনার (US Army) ক্ষমতার পরিচয় বহন করে। পেন্টাগনকে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার’ (Dept of War) বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরিকার সেনাবাহিনীই কেবল এমন নিখুঁত আঘাত হানতে সক্ষম। এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানও স্পষ্ট করেন। তিনি লেখেন, “আমার নেতৃত্বে আমেরিকা কখনওই উগ্র ইসলামিক সন্ত্রাসবাদকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না।” পোস্টের শেষে তিনি মার্কিন সেনাদের শুভেচ্ছা জানান এবং বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, “ঈশ্বর আমাদের সেনাবাহিনীকে আশীর্বাদ করুন-মেরি ক্রিসমাস।”

নাইজেরিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে হামলা

বহু বছর ধরে আইএসআইএস গোষ্ঠী এবং বোকো হারাম-সহ চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হিংসার কবলে নাইজেরিয়া। বিশেষ করে দেশটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জঙ্গিদের প্রভাব খুব বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের অধীনে নাইজেরিয়াকে “বিশেষ উদ্বেগের দেশ” হিসেবে মনোনীত করেছে। নভেম্বরে ট্রাম্প বলেছিলেন, খ্রিস্টানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের পর তিনি পেন্টাগনকে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, স্টেট ডিপার্টমেন্টও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নাইজেরীয় এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ড (AFRICOM) হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২৫ ডিসেম্বর নাইজেরিয়ার সোকোতো রাজ্যে এই হামলা চালানো হয় এবং তা নাইজেরিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ নাইজেরিয়ার সরকারের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও সামরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযানটি সম্ভব হয়েছে।

ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার অঙ্গীকার

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু বড়দিনের দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি বিবৃতি ও চিঠিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। টিনুবু তাঁর বিবৃতির সঙ্গে সংযুক্ত একটি চিঠিতে বলেছেন, “আপনাদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে, আমি নাইজেরিয়ায় ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং বিভিন্ন ধর্মের সকল মানুষকে হিংসা থেকে রক্ষা করার জন্য আমার ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” নাইজেরিয়ার বিদেশ মন্ত্রকও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানায়, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখেই এই সমন্বয় করা হয়েছে।

 

 

 

 

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share