মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং নির্যাতিতদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। দিল্লিতে জনসংখ্যা ও জনবিন্যাস সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিতাড়িত হিন্দুরা নিজেদের নামে বাড়ি কিনতে পারেননি। তারা সরকারি চাকরি পাননি, রেশন কার্ড পাননি, এমনকি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাও হয়নি। তাদের অধিকার দেওয়ার জন্যই সিএএ।”
কাদের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের সিদ্ধান্ত সংসদ নয়, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি নিয়েছিল। সেই ভুল সিদ্ধান্তের জন্য এই মানুষগুলোর চার প্রজন্ম নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এখন তারা কি সস্তায় রেশন, বছরে ৫ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমার চিকিৎসা, ভোটাধিকার এবং সম্পত্তি কেনার অধিকার পাবে না?” এ প্রসঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলির তুলনা টেনে শাহ জানান, পাকিস্তানে ১৯৫১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১৩ শতাংশ, বর্তমানে তা কমে মাত্র ১.৭৩ শতাংশে। বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ২২ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭.৯ শতাংশে। আফগানিস্তানে হিন্দু-শিখ মিলিয়ে একসময় ছিল ২.২ লক্ষ, এখন মাত্র ১৫০ জন। শাহের বক্তব্য, এই হ্রাস ধর্মান্তরের কারণে নয়, বরং নির্যাতনের ফলে তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানান, “যারা ধর্মরক্ষার জন্য ভারতে এসেছে, তারা উদ্বাস্তু। কিন্তু যারা অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক স্বার্থে অবৈধভাবে ঢুকেছে, তারা অনুপ্রবেশকারী।” অমিত শাহের দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) আনার মাধ্যমে এই অবহেলিত মানুষদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শাহ বলেন, “ভারতের মাটিতে কারা প্রকৃত শরণার্থী আর কারা অনুপ্রবেশকারী, সেই সীমারেখা স্পষ্টভাবে টানা জরুরি। যাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে এই দেশে আশ্রয় খুঁজেছেন, তাঁদের নৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার। যতটা অধিকার আমার এই দেশের মাটিতে, ঠিক ততটাই অধিকার পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দুদেরও এই মাটিতে।”
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে অপপ্রচার
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে শাহ (Amit Shah) বলেন, সিএএ নিয়ে অন্যায়ভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে এবং অযথা প্রতিবাদ হয়েছে। তাঁর কথায়, “এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং নির্যাতিতদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য।” তাঁর দাবি, ১৯৫১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে ঐতিহাসিক ভুলগুলো হয়েছে, মোদি সরকার তা সংশোধন করেছে। শাহ আরও বলেন, “যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে তারা উদ্বাস্তু। কিন্তু অবৈধভাবে ঢোকা মানে অনুপ্রবেশ। উদ্বাস্তুদের আমরা নাগরিকত্ব দিচ্ছি, অনুপ্রবেশকারীদের নয়। কারণ, যদি সবাইকে ঢুকতে দেওয়া হয়, তবে ভারত একদিন ধর্মশালা হয়ে যাবে।”
Leave a Reply