Mithun Chakraborty: ‘‘দেশের কোথাও বাঙালিদের ওপর কোনও অত্যাচার হয়নি’’, তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ মিঠুনের

Mithun Chakraborty attacks Tmc regarding Bangali Issue

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভিন রাজ্যে নাকি বাঙালিদের ওপর অত্যাচার চলছে। এমনই মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণ করতে ভুয়ো ভিডিও প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে শাসক নেতাদের। বৃহস্পতিবার ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী সাফ বললেন, ‘‘দেশের কোথাও বাঙালিদের ওপর কোনও অত্যাচার হয়নি। আসলে সামনে ভোট, তাই তৃণমূল এটাকে ইস্যু করে কাজে লাগাতে চাইছে।’’ অন্যদিকে ভোটার তালিকা ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে এ প্রসঙ্গে বড় দাবি করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। তাঁর দাবি, ‘‘ভোটার লিস্ট থেকে ভুয়ো ভোটার বের করে দিলে তৃণমূল ৭০টা সিটও পাবে না।’’

তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ মিঠুনের (Mithun Chakraborty)

বিজেপি নেতার (Mithun Chakraborty) বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও বাঙালির ওপর অত্যাচার বা কোনও সত্যিকারের নাগরিককে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না। বেছে বেছে তাঁদেরই বাদ দেওয়া হচ্ছে যারা বেআইনিভাবে প্রবেশ করেছিলেন।’’ তৃণমূলের আক্রমণের সামনে যাতে মাথা নত না করে, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কমিশনকে যোগ্য সাহায্য করতে বাংলার সমস্ত নাগরিক সমাজকে আহ্বান জানিয়ে মিঠুন বলেন, ‘‘প্রতিটি এলাকায় কর্মীদের বলব, খোঁজখবর শুরু করুন, কারা অনুপ্রবেশ করে বাংলায় রয়েছে। কারও ওপর কোনও আক্রমণ হলে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’’এজন্য বৃহস্পতিবার নিজের দুটি ফোন নম্বরও দিতে দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। পাশাপাশি এদিন তিনি বাঙালি বিদ্বেষ ইস্যুতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ভিন রাজ্যে কোথাও কোনও রকমভাবে বাঙালিকে হেনস্থা করা হচ্ছে না। যে দল বলছে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের দল না, সেই দল আদৌ বাংলার দল তো? নাকি অন্য কোন দেশের দল?’’

বাংলায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন নিয়ে কী বললেন মহাগুরু?

প্রসঙ্গত, বিহারে চালু হয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR। এখানেই দেখা গেছে, ভোটার তালিকায় লক্ষ লক্ষ ভুয়ো ভোটার রয়ে গেছেন। এমনকি অনেক মৃত ব্যক্তির নাম এখনও তালিকায় রয়েছে, এবং কারও কারও নাম দুই জায়গায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের নাগরিকরাও বিহারের ভোটার তালিকায় রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলতে দেখা গেল মিঠুন চক্রবর্তীকে। তিনি তৃণমূল ও মমতা সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। বিজেপি নেতা মিঠুন বলেন, ‘‘যারা বেছে বেছে এখানে এসেছেন, তাদের বেছে বেছে ফেলে দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গে বেশি সমস্যা, তাই এত চেঁচামেচি হচ্ছে। ওরা জানে, যদি বেছে বেছে যাদের তোলা দরকার, তাদের তোলা হয়—তাহলে এই সরকার ৭০টা আসনও পাবে না।’’

মুর্শিদাবাদ ইস্যুতে হুঁশিয়ারি মিঠুনের (Mithun Chakraborty)

তৃণমূলকে (Tmc) হুঁশিয়ারি দিয়ে মিঠুন বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদে যা ঘটে গেছে তেমন ঘটনা আর ঘটলে আমরা আর চুপ করে থাকব না। ২৬-এর বিধান সভা ভোটে তৃণমূলের বিসর্জন অনিবার্য।’’ নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে এদিন তৃণমূলের তোলা যাবতীয় অভিযোগকে নস্যাৎ করে বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বেছে বেছে ইলেকশন কমিশন কেন নাম বাদ দেবে? তাদেরই বেছে বেছে বাদ দেওয়া হচ্ছে যারা বেছে বেছে এদেশে অবৈধভাবে এসেছেন। বাংলায় এরকম ঘটনা অনেক বেশি, তাই তৃণমূল চেঁচামেচি করছে।’’

তৃণমূলের অভিযোগ ‘ডাহা মিথ্যা’

বাঙালি বিদ্বেষ নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ ‘ডাহা মিথ্যা’ বলেও এদিন তিনি উল্লেখ করেছেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নিজে বেঙ্গালুরুতে একটি হোটেল খুলেছি, যেখানে বেশিরভাগই বাঙালি পরিযায়ী। তবে সেখানে কোনও বাংলাদেশি নেই। যদি বাংলাদেশি কেউ থাকেন তাঁকে অবশ্যই বাংলাদেশি বলেই চিহ্নিত করা হবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বেশ চাপের রয়েছে। নারী নির্যাতন, দুর্নীতি, রাজনৈতিক সন্ত্রাস, মুর্শিদাবাদ হিংসায় রাজ্যজুড়ে এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। একদিকে যেমন মহিলা সুরক্ষা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে একের পর এক দুর্নীতি সামনে এসেই যাচ্ছে শাসক দলের। এই আবহে তৃণমূলের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা একেবারেই নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে সামনে বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ফলে, রাজ্যবাসীর দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য ‘বাইরের রাজ্যে বাঙালিদের উপর নির্যাতন’ বলে একটি রাজনৈতিক তত্ত্ব সামনে এনে প্রচার চালাতে শুরু করেছে তৃণমূল, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।

অনেকেই বলছেন, ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচার—এই মিথ্যা অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করছে তৃণমূল, যাতে রাজ্যের প্রকৃত দুরবস্থা ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু বাস্তবচিত্র অন্য কথা বলছে। কোথাও কোনও বাঙালি নির্যাতিত হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেস এখন ‘ব্যাকফুটে’ এবং রাজনৈতিকভাবে সেই অবস্থান থেকে বেরোতে নানা কৌশল নিচ্ছে, যার মধ্যে অন্যতম হল—বাঙালিদের সঙ্গে ‘বৈষম্য’র মিথ্যা তত্ত্ব।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share