PM Modi: মোদির সম্ভাব্য চিন সফরে গুরুত্ব বেজিংয়ের, ড্রাগনের দেশের সংবাদপত্রে হিন্দু প্রবাদ

pm modis beijing visit hindu proverb to hail

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “তোমার ভাইয়ের নৌকোকে নদী পার করিয়ে দাও, তাতে তোমার নিজের নৌকোও তীরে পৌঁছে যাবে।” হিন্দুদের এই প্রবাদ (Hindu Proverb) বাক্যটি গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়েছে চিনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে। সেখানে এও লেখা হয়েছে, ভারত-চিন (PM Modi) সম্পর্কের এই ঘনিষ্ঠতা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আমেরিকা ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতিকে কোনওভাবেই প্রভাবিত করতে পারবে না। তাহলে কি সংবাদ মাধ্যমের আশঙ্কাই ঠিক? আমেরিকাকে রুখতে জোটবদ্ধ হচ্ছে রাশিয়া-ভারত-চিন, সংক্ষেপে ‘রিচ’ (RICH)!

এসসিওর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে মোদি (PM Modi)

এবার এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন) সম্মেলন হতে চলেছে চিনের তিয়ানজিনে। এসসিওর এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিন সফরে যাবেন তিনি। গত সাত বছরের মধ্যে এটাই হবে মোদির প্রথম চিন সফর। প্রধানমন্ত্রী যে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যাচ্ছেন, সে ব্যাপারে এখনও সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে প্রধানমন্ত্রী ড্রাগনের দেশে যাচ্ছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী যদি ওই দিন সত্যিই চিনে যান এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে, তাহলে ২০২০ সালের গালওয়ান সীমান্ত সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্কে সৃষ্টি হওয়া তিক্ততার সম্পর্ক ফের মধুর হতে পারে।

ভারত-চিনের সম্পর্কের উন্নতি

সাম্প্রতিক কালে ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছে। বহু বছরের টানাপোড়েনের পর এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। গিয়েছিলেন শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কর্তাও। তাঁদের ধারাবাহিক সফর কূটনৈতিক অচলাবস্থার বরফ গলানোরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। ২০২৪ সালের অক্টোবরে কাজানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে পার্শ্ববৈঠকে জট খুলতে শুরু করে ভারত-চিন সম্পর্কের। উভয় পক্ষই এ বিষয়ে একমত যে, ভারত ও চিন উন্নয়নের অংশীদার, হুমকি বা প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। এরপর থেকে ফের শুরু হয়েছে ভারত চিনের নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা ইস্যু করা। কৈলাশ-মানস সরোবর তীর্থযাত্রার পথ আবারও খুলে দিয়েছে চিন (PM Modi)।

চিনা সংবাদপত্রে হিন্দু প্রবাদ

চিনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস মোদির সম্ভাব্য সফরের খবরে বেশ আশাবাদী। পত্রিকাটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক গতি স্বীকার করলেও ভারতের তৈরি কিছু প্রতিবন্ধকতা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, চিনা বিনিয়োগের ওপর ভারতের পর্যালোচনা ও সীমাবদ্ধতা, চিনা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ভিসা প্রদানে সীমাবদ্ধতা এবং সরাসরি ফ্লাইট ফের চালুর দেরি। গ্লোবাল টাইমস সতর্ক করেছে যে, এসব প্রতিবন্ধকতার সমাধান না হলে আস্থা ফেরানো কঠিন হবে (Hindu Proverb)। এর পরেই সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে হিন্দু প্রবাদটি: “তোমার ভাইয়ের নৌকোকে নদী পার করিয়ে দাও, তাতে তোমার নিজের নৌকোও তীরে পৌঁছে যাবে।”

মোদির সফরকে গুরুত্ব

সম্পাদকীয়তে জোর দেওয়া হয়েছে যে, যদি প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে, তবে এটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা গভীর করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মোদির সম্ভাব্য চিন সফরের সময়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি ঘটতে চলেছে এমন একটা সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর দু’দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করার কয়েক দিনের মধ্যেই। এই পদক্ষেপটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভারতের রাশিয়া থেকে অব্যাহত তেল আমদানিকে, ওয়াশিংটনের মতে যা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে হুমকি স্বরূপ (PM Modi)।

মার্কিন হুমকির জবাবে দৃঢ় অবস্থান মোদির

মার্কিন হুমকির জবাবে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত তার অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করবে এবং কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। চিনা গণমাধ্যম মোদির কূটনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনকে ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতির অংশ হিসেবেই দেখেছে (Hindu Proverb)। পশ্চিমী মহলের জল্পনা, মোদির চিন সফর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার পদক্ষেপ। যদিও গ্লোবাল টাইমস জানিয়ে দিয়েছে, চিন-ভারত সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থ ও দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহাসিক যুক্তির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, তৃতীয় পক্ষের বিরোধিতার ওপর নয় (PM Modi)।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের বৃহত্তম দুটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিন ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে যৌথ স্বার্থ রয়েছে। উভয় দেশই গ্লোবাল সাউথের শীর্ষ কণ্ঠ এবং এসসিওর মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর এই ক্ষেত্রগুলিতে আরও বেশি সহযোগিতার অনুঘটক হতে পারে, সূচনা করতে পারে চিন-ভারত সম্পর্কের একটি নয়া অধ্যায়ের। বিশ্ববাসী দেখতে পারেন (Hindu Proverb) ‘ড্রাগন’ ও ‘হাতি’র যৌথ নৃত্য (PM Modi)।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share