Winter Cold Cough: হেমন্তের আবহাওয়ায় বাড়ছে কাশির দাপট! কাদের জন্য বিপদ বাড়াচ্ছে খামখেয়ালী আবহাওয়া?

season change cold cough symptoms rise onset of winter what home remedies precautions preventive measures needed

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

আর মাত্র কিছু সময়ের অপেক্ষা! দেবী-আরাধনার উৎসবের বিদায়ের ঘণ্টা বাজতে চললো। বঙ্গবাসী মেতে উঠেছে জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসবে। তবে উৎসবের শেষ বেলায় ভোগান্তি বাড়াচ্ছে হেমন্তের হাওয়া! বিদায় নিয়েছে বর্ষা। কিন্তু বৃষ্টির উপস্থিতি মাঝেমধ্যেই জানান দিচ্ছে। তার মাঝেই হাজির হয়েছে হেমন্ত। রাতের দিকে বাইরে গেলেই হালকা ঠান্ডা আমেজ। কিন্তু দুপুরে রোদের দাপট বাড়ছে। ফলে অনেক ঘরেই এখনো এসি চলছে। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার জেরে বাড়ছে শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই সময়ে শরীরের বাড়তি যত্ন জরুরি। না হলেই ভোগান্তি বাড়বে।

জ্বর-সর্দির পাশপাশি ভোগাচ্ছে কাশি

কী সমস্যা দেখা দিচ্ছে? চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়ায় শিশু থেকে প্রবীণ, বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যেই নানান সংক্রামক রোগের দাপট দেখা দিচ্ছে। জ্বর-সর্দির পাশপাশি সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে কাশি। অধিকাংশ রোগী কাশির জেরে নাজেহাল। বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি জাতীয় সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।

বাড়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার দাপট

বিশেষজ্ঞদের মতে, আবহাওয়ায় রকমফেরের জেরেই এই ধরনের ভোগান্তি বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্ষা বিদায় নিয়েছে। আর মাত্র কিছু দিন পরেই শীত শুরু হবে। এই হেমন্তের আবহাওয়ায় বাতাসে তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়। তাই প্রত্যেক বছরেই এই সময়ে বাতাসে নানান ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার দাপট বাড়ে। কিন্তু চলতি বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। এই বছরে দেখা যাচ্ছে দিন ও রাতে আবহাওয়ার পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য ভাবে হচ্ছে। বিশেষত তাপমাত্রার পরিবর্তন মারাত্মক। দিনে রোদের প্রকোপ থাকছে। বেলা বাড়লে ঘাম হচ্ছে। অস্বস্তিকর আবহাওয়া দেখা দিচ্ছে। আবার রাত বাড়লে বিশেষত ভোরের দিকে ঠান্ডার আমেজ স্পষ্ট। তাপমাত্রার এতখানি ঘনঘন পরিবর্তন ক্ষতিকারক ভাইরাসের সক্রিয়তাও বাড়িয়ে দেয়। তাই নানান সংক্রামক রোগের দাপট বাড়ে‌। তাছাড়া, এই সময়ে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই হাঁপানি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও বাড়তে থাকে।

কোন ঘরোয়া উপদানে ভরসা রাখছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

আরাম পেতে আদা

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাঙালির রান্নাঘরের পরিচিত একাধিক উপাদান এই আবহাওয়ায় শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ সাহায্য করবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে শ্বাসনালী এবং ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এবং কাশি হলে, আরাম পেতে নিয়মিত রান্নায় আদা ব্যবহার করা জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, আদায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। যার ফলে নানান সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। তাই বিভিন্ন রান্নায় নিয়মিত আদা খেলে সংক্রামক রোগের দাপট কমে।

মধু এবং তুলসী পাতা

শিশুদের নিয়মিত সকালে এক চামচ মধু এবং কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, মধু এবং তুলসী পাতা সর্দি-কাশি মোকাবিলায় বিশেষ সাহায্য করে। এই দুই ঘরোয়া উপাদানে সংক্রামক রোগ নিরাময়ের শক্তি রয়েছে। এই সময়ে অধিকাংশ শিশু ভাইরাস ঘটিত অসুখের জেরেই সর্দি-কাশি এবং জ্বরে ভুগছে। তাই নিয়মিত মধু ও তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ সাহায্য করবে।

দারুচিনি দেওয়া চা

প্রবীণদের চা খাওয়ার সময় দারুচিনি দেওয়া চা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, দারুচিনি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বিশেষ সাহায্য করে। বিশেষত ফুসফুসের সংক্রমণ ঠেকাতে দারুচিনি বিশেষ উপকারি। তাই গরম চা খাওয়ার সময় তাতে এক টুকরো দারুচিনি ফেলে ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

রান্নায় এলাচ

রান্নায় এলাচ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিরামিষ তরকারি, পায়েস হোক কিংবা মাংস কষা, যেকোনও রান্নায় সুগন্ধ বাড়াতে বাঙালি এলাচের ব্যবহার করে। রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশপাশি শ্বাসনালী সুস্থ রাখতেও এলাচ বিশেষ সাহায্য করে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়ায় কাশির দাপটে অনেকেই নাজেহাল। শ্বাসনালীর সংক্রামণের জেরেই কাশির ভোগান্তি বাড়ে। তাই নিয়মিত এলাচ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এলাচ শ্বাসনালীর সংক্রামণের ঝুঁকি কমায়।

তিন থেকে চার লিটার জল

শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়লে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমানো‌ যায়। তাই নিয়মিত তিন থেকে চার লিটার জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল থাকলে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমানো‌ যায়। তাছাড়া তাঁরা সবুজ সব্জি ও ফল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ এগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

 

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share