মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বুধবারই দেশজুড়ে জাতিভিত্তিক গণনার (Caste Census) কথা ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। মোদি সরকারের এহেন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন নেতানেত্রী। এই তালিকায় যেমন রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও (Amit Shah), তেমনি রয়েছেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানের পাশাপাশি এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারও।
কী বললেন শাহ (Caste Census)
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই ঘোষণার ফলে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নতি হবে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিজির নেতৃত্বে আজকের সিসিপিএ সভায় আসন্ন আদমশুমারিতে জাতিভিত্তিক গণনা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সামাজিক সমতা ও প্রতিটি বিভাগের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারের একটি দৃঢ় বার্তা পাঠিয়েছে।” তিনি বলেন, “কংগ্রেস ও তার মিত্র দলগুলি কয়েক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকাকালীন জাতিভিত্তিক আদমশুমারির বিরোধিতা করেছিল এবং বিরোধী দলে থাকাকালীন একে নিয়ে রাজনীতিকরণ করেছিল। এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া সকল শ্রেণির ক্ষমতায়ন করবে, অন্তর্ভুক্তি প্রচার করবে এবং বঞ্চিতদের অগ্রগতির জন্য নতুন পথ প্রশস্ত করবে।”
নাড্ডার পোস্ট
বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, “অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত স্তরে পিছিয়ে পড়া জাতিগুলিকে মূলধারায় আনার ক্ষেত্রে এবং দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকার ও অধিকার থেকে বঞ্চিতদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।” তিনি বলেন, “মোদি সরকারের এই অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত সামাজিক সম্প্রীতি সম্প্রসারণ, সমাজের প্রতিটি অংশের উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মর্যাদা বৃদ্ধিতে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। সমাজের সকল অংশের কল্যাণের লক্ষ্যে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য আমি মোদিজির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।” তিনি বলেন, “ক্ষমতায় থাকাকালীন, কংগ্রেস সব সময় জাতিগত জনগণনার বিরোধিতা করেছে, যার প্রমাণ স্বাধীনতার পর দেশে আজ পর্যন্ত জাতিগত জনগণনা করা হয়নি। মোদি সরকারের এই অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত সামাজিক সম্প্রীতি প্রসারিত করার পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণির উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া অংশের সম্মান বৃদ্ধিতে একটি মাইলফলক (Amit Shah) হয়ে থাকবে। সমগ্র সমাজের কল্যাণে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য আমি মোদিজিকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই (Caste Census)।”
অজিত পাওয়ারের বক্তব্য
মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন, “দেশে সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনার ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিজি, মাননীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহজি এবং সমগ্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা!” তিনি লেখেন, “বহু দশক ধরে অসংখ্য ব্যক্তি, সংগঠন এবং গোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে জাতিভিত্তিক আদমশুমারির দাবি করে আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ও মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহের দূরদর্শী এবং সংবেদনশীল নেতৃত্বের কারণে এই দাবি পূরণ হয়েছে। জাতিভিত্তিক আদমশুমারির অভাবে তফশিলি জাতি ও উপজাতি ছাড়া অন্যান্য বর্ণের জনসংখ্যার অর্থনৈতিক (Amit Shah) ও সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলস্বরূপ, সমাজের অন্যান্য অংশের সঙ্গে ওবিসি সম্প্রদায়কে এর পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল।” মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধানও (Caste Census)।
কী বললেন নীতীশ কুমার
এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জাতিভিত্তিক আদমশুমারির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “জাতিগত আদমশুমারি পরিচালনার জন্য আমাদের দাবি অনেক পুরানো। এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে কেন্দ্রীয় সরকার জাতিভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনা বিভিন্ন শ্রেণির জনসংখ্যা নির্ধারণে সাহায্য করবে, যা তাদের উন্নয়ন ও উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়নকে সহজতর করবে। এটি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শ্রদ্ধেয় শ্রী নরেন্দ্র মোদিজিকে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনার সিদ্ধান্তের জন্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ (Caste Census)।”
প্রসঙ্গত, ভারতে শেষবার জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে। জনগণনা হয় প্রতি ১০ বছর অন্তর। সেই হিসেবে জনগণনা হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে সেবার জনগণনা হয়নি। শেষ জনগণনা অনুসারে ভারতের মোট জনসংখ্যা ১২১ কোটি (Amit Shah)। এর মধ্যে তফশিলি উপজাতি ৮.৬১ শতাংশ, তফশিলি জাতি রয়েছে মোট জনসংখ্যার ১৬.৬৩ শতাংশ। আর ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন ৫২ শতাংশ (Caste Census)।
Leave a Reply