Good Sleep: ঘুমের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি! স্ট্রোক রুখতে ঘুম কেন জরুরি?

world stroke day good sleep may prevent stroke say experts health tips

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

 

প্রত্যেক মিনিট জরুরি। দিনের প্রতিটি মিনিট কীভাবে কাটানো হচ্ছে, সেই অভ্যাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকে, আমরা সুস্থ থাকব কিনা! প্রতিদিন ঘুমের জন্য কতখানি সময় বরাদ্দ হয়, সেই হিসাব অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি! সম্প্রতি ছিল ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক ডে। আর সেই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতা কর্মসূচি পালন হয়। আর সেখানেই উঠে আসে মূলত দুই দাওয়াই। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই দুই পরামর্শ মেনে চললেই স্ট্রোকের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

স্ট্রোকের বিপদ এড়াতে কোন দুই দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

চাই পর্যাপ্ত ঘুম

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্ট্রোকের ঘটনা বাড়ছে। পঞ্চাশের পরে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেখা দিত। কিন্তু গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি অন্যরকম। দেখা যাচ্ছে, তিরিশের চৌকাঠ পেরনোর পরেই স্ট্রোকের ঘটনা ঘটছে। এর ফলে পরবর্তী জীবনে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আর কম বয়সিদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার অন্যতম কারণ অপর্যাপ্ত ঘুম। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের একাংশ অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাস। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন। ভোরে ঘুমোতে যান। বেলায় ঘুম থেকে ওঠেন। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকার কারণে নিয়মিত আট ঘণ্টা ঘুমোনোর সময় পান না। এর ফল হয় মারাত্মক। দীর্ঘদিন অপর্যাপ্ত ও অনিয়মিত ঘুম মস্তিষ্কের উপরে গভীর প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে, মস্তিষ্কের পর্যাপ্ত বিশ্রাম জরুরি। নিয়মিত পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেলে মস্তিষ্কের স্নায়ু সুস্থ থাকে। তাছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসরণের ভারসাম্য নষ্ট হয়। যা শরীরে একাধিক সমস্যা তৈরি করে।

উপসর্গের উপরে বাড়তি নজর

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যেমন পর্যাপ্ত ঘুমের উপরে নজর দিচ্ছে তেমনি স্ট্রোকের বড় জটিলতা এড়াতে উপসর্গের উপরে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও এ বছরে স্ট্রোক সচেতনতার মূল বার্তা, প্রত্যেক মিনিট জরুরি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্ট্রোকের উপসর্গ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। শরীরে অন্য কোনও জটিলতা রয়েছে কিনা, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, সে সম্পর্কেও সতর্ক থাকা জরুরি। তবেই বড় বিপদ এড়ানো যেতে পারে। স্ট্রোকে আক্রান্ত হলেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু প্রয়োজন। তবেই বড় স্বাস্থ্য সঙ্কট এড়ানো সম্ভব। কিন্তু অনেক সময়েই চিকিৎসা দেরিতে শুরু হয়। তাই চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রত্যেক মিনিট গুরুত্বপূর্ণ!

ভারতে স্ট্রোকের দাপট কতখানি?

কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে স্ট্রোকের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতি বছর ১৮ লক্ষ ভারতীয় স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি। ২০১৯ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে, মহিলারা তুলনামূলকভাবে‌ বেশি‌ স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ তালিকার প্রথমেই রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্ট্রোকের ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় জেরেই এ রাজ্যে স্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। তাছাড়া তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও জীবন যাপন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। এ রাজ্যে গত কয়েক বছরে ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তাই স্ট্রোক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কোন উপসর্গ স্ট্রোকের জানান দেয়?

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, রক্তচাপ নিয়ে সচেতনতা জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। নিয়মিত রক্তচাপ ওঠা নামা করলে কিংবা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে স্বাস্থ্যকর খাবারে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন।‌ কারণ উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া হঠাৎ করেই মাথা ঘোরা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, মস্তিষ্ক ঠিক মতো কাজ করতে না পারার মতো উপসর্গ দেখা দিলে সচেতন থাকা জরুরি। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার, কারণ এগুলো স্ট্রোকের লক্ষণ। হাত-পায়ের পেশি ঠিকমতো কাজ না করা, স্নায়ুর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া স্ট্রোকের অন্যতম লক্ষণ বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তীব্র মাথার যন্ত্রণা স্ট্রোকের উপসর্গ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

 

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share