Suvendu Adhikari: ২৬-এ বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বিজেপি, কীভাবে? অঙ্ক কষে বোঝালেন শুভেন্দু

suvendu-adhikari-said-bjp-will-win-west-bengal-assembly-election-2026-gives-calculation

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুজোর পরেই বিধানসভা ভোটের (West Bengal Assembly Election) বাদ্যি বাজতে শুরু করেছে। রাজ্য চলছে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রস্তুতি। এসআইআর নিয়ে চলছে বৈঠক। আর মাস সাতেক পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election)। সেই নির্বাচনে বিজেপি কীভাবে জিতবে, অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার কাঁথিতে বিজেপির বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে তিনি শাসকদল তৃণমূলকেও তীব্র আক্রমণ করলেন। রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নিয়ে শাসকদলকে নিশানা করেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)।

৪৬ শতাংশ ভোট পেলেই ক্ষমতায়

আর দেরি নয়! সোমবার কাঁথির বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের এখনই ‘ঘরে ঘরে সংগঠন গড়ে তোলা’র বার্তা দেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। বিজেপি কীভাবে ক্ষমতায় আসতে পারে, সেই হিসেবে তুলে ধরে বিজয়া সম্মলিনীর মঞ্চে শুভেন্দু বলেন, “রাজ্যে আমরা ৪৬ শতাংশ ভোট পেলেই ক্ষমতায় আসব। সংখ্যালঘুদের ৯৫ শতাংশ ভোট ওরা পায়। ওদের সঙ্গে ৪২ লক্ষ ভোটের ব্যবধান রয়েছে। দরকার ২২ লক্ষ ভোট।” তিনি দাবি করেন, বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় প্রায় ১ কোটি ভোটার বাদ যাবে। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “এই প্রক্রিয়ার (SIR) পর ভোটের অঙ্ক অনেকটাই বদলে যাবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যে ২০২৬ বিধানসভা ভোটের রণকৌশল স্পষ্ট হয়ে গেল। এসআইআর প্রক্রিয়া ও ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে তাঁর মন্তব্য, বিজেপি-র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিকনির্দেশই দিয়েছে।

বিশেষ নিবিড় সংশোধনের উল্লেখ

রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন(SIR) খুব দ্রুত শুরু হতে পারে বলে জল্পনা বেড়েছে। ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান শুভেন্দু। এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে বিএলও-দেরও বার্তা দিলেন শুভেন্দু। বলেন, “বিএলও-দের উপর নজর রাখতে হবে। বিএলও-রা কমিশনের কথা শুনে চলুন। ওদেরও না, আমাদেরও না।” পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপির ফল যে ক্রমশ ভালও হচ্ছে, সেকথা তুলে ধরেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু। বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুরে আমরা ৪৬ শতাংশ। তৃণমূল ৪১ শতাংশ।” তাঁর দাবি, বাংলায় বিস্তীর্ণ এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ রয়েছে, কাঁটাতার না থাকায় বহু বাংলাদেশি অবৈধভাবে প্রবেশ করে বসবাস করতে শুরু করেছে। এবার তাঁদের নাম সরিয়ে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি হোক, এটাই চান শুভেন্দু। তাঁর কথায়, বিহারে সরকার সাহায্য করেছে। রাজনৈতিক দলগুলিও কাজ করেছে। ফলে সেখানে ১০০ শতাংশ সফল হয়েছে (SIR)। এখানে বিস্তির্ণ এলাকায় সন্ত্রাস আছে। রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং ধর্মীয় সন্ত্রাস। এখানে একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের লোককে লেলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সঠিক এসআইআর-এর পর নির্বাচন হলে রাজ্যে ভোটের অঙ্কটাই বদলে যাবে।

বুথে বুথে হিন্দুদের এক করার আহ্বান

দলের বুথ লেভেল এজেন্টদের নিয়ে তিনি কর্মসূচির আয়োজন করবেন বলেও জানান। বুথে বুথে হিন্দুদের এক করার আহ্বান জানালেন। ‘মেরা বুথ সবচেয়ে মজবুত’-র ডাক দিলেন। পুরনো কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশও দেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, “যাঁরা একসময় দল গড়েছিলেন, তাঁদের ভুলে গেলে চলবে না। দলের মধ্যে তুই বড় না আমি বড় ছাড়ুন।” এদিন কাঁথির এই সভায় শুভেন্দুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বাবা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিশির অধিকারী। ভোটের অঙ্ক ছাড়াও এদিন নারী নিরাপত্তা নিয়েও সরব হন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। তিনি বলেন, “পাড়ায় পাড়ায় অসুর তৈরি হয়েছে। বোনেদের হাতে ত্রিশূল দরকার। মহিলাদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে মহিলারা নিরাপদ নন, তৃণমূল সরকার কেবলমাত্র ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে। “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ধর্ষকদের রক্ষাকারী। সম্প্রতি গণধর্ষণের ঘটনায় যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেও দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী এবং তৃণমূলের যুব নেতা।” এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

বিজেপি ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের লাভ

বিজেপি ক্ষমতায় এলে কী কী সুবিধা দেওয়া হবে, এদিন সেই ইঙ্গিতও দেন বিরোধী দলনেতা (Suvendu Adhikari)। তিনি বলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষ পাবেন প্রকৃত উন্নয়ন। বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে সরকারি বাসে মহিলারা বিনামূল্যে যাতায়াত করছেন, গ্যাসের দাম কমেছে। বাংলায়ও সংকল্পপত্রে সেই প্রতিশ্রুতিগুলো থাকবে।” তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা— “যতই বাধা আসুক, আমরা লড়ব। বাংলায় পরিবর্তন আসবেই।” শুভেন্দু অধিকারী দাবি করে বলেন, “প্রার্থীকে দেখার দরকার নেই, উপরে মোদিজি আর নিচে পদ্মফুল, এরাই আপনার প্রার্থী। এ লড়াই বাঁচার লড়াই”।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share