Dengue Malaria: হেমন্তের আমেজ থাকলেও ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ায় নাজেহাল বঙ্গবাসী! কেন বাড়ছে ভোগান্তি?

winter knocking the door west bengal still reeling under dengue malaria why say experts

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

বর্ষা বিদায় নিয়েছে। হেমন্তের আমেজ এখন বাতাসে ভরপুর। কিন্তু এখনো মশার দাপট কমেনি। মশাবাহিত রোগের জেরে বিপদে পড়ছেন বঙ্গবাসী! ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার দাপটে নাজেহাল। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, নভেম্বরে এই ধরনের রোগের দাপট কমে। কিন্তু চলতি বছরে ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। বরং উৎসবের মরশুমের শেষেও শিশু থেকে বয়স্ক, সকলেই ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের দাপটে কাবু।

কী বলছে স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য?

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু অক্টোবর মাসে কলকাতায় ৩৫০ জনের বেশি নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। যা ২০২৪ সালের তুলনায় বেশি। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের হিসাব অনুযায়ী, কলকাতায় ৮৫ জন নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। আবার ডেঙ্গির পাশপাশি কলকাতার একাধিক এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষত শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক, যাদবপুর, টালিগঞ্জের মতো একাধিক এলাকায় কয়েকশো মানুষ ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জোড়া আক্রমণে জর্জরিত কলকাতাবাসী।

কলকাতা পুরসভার পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে উত্তরের তুলনায় কলকাতার দক্ষিণে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেশি। বালিগঞ্জ পার্ক রোড, পাম অ্যাভিনিউ, পণ্ডিতিয়া রোড সহ দক্ষিণ কলকাতার একাধিক এলাকায় হাই এলার্ট‌ জারি করা হয়েছে। মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ রুখতে বিশেষ সতর্কতা ও পদক্ষেপ জরুরি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

কলকাতার পাশপাশি অক্টোবর মাসে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হুগলি ও হাওড়া জেলায় উল্লেখযোগ্য ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্টোবর শেষে রাজ্যে নতুন করে প্রায় দেড় হাজার মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন‌। যা বিগত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। জেলাগুলোতেও ডেঙ্গির পাশপাশি ম্যালেরিয়ার দাপট বাড়ছে। বিশেষত হাওড়া এবং হুগলি এই দুই জেলায় গত মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

কেন মশাবাহিত রোগের দাপট অব্যাহত?

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বর্ষার শেষে মশাবাহিত রোগের দাপট কমে। বিশেষত নভেম্বর মাসে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। তাপমাত্রার রকমফেরে মশাবাহিত রোগের দাপট কমে। কিন্তু চলতি বছরে পরিস্থিতি অন্যরকম। তার মূল কারণ আবহাওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি বছরে বৃষ্টি অনেক বেশি হয়েছে। বর্ষার উপস্থিতিও ছিল দীর্ঘমেয়াদি। তাই জল জমার সমস্যাও বেশি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মশার বংশবিস্তার সহজ হয়। তাই ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার দাপট ও বাড়ছে।

আবহাওয়ার পাশপাশি জনসচেতনতার অভাব এবং প্রশাসনের সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি কিংবা ম‌্যালেরিয়ার মতন মশাবাহিত সংক্রামক রোগ রুখতে সচেতনতা জরুরি। নিজের বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় যাতে জল না জমে সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। বাগান কিংবা ছাদে যাতে জল না জমে সেটা নজরদারি প্রয়োজন। চৌবাচ্চায় যাতে সাত দিনের বেশি এক জল না থাকে সেটাও নজর দিতে হবে।

জনসাধারণের সচেতনতার পাশপাশি প্রশাসনের সক্রিয়তা জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের একাধিক এলাকায় কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টির পরেই জল জমে থাকে। জমা জলে একাধিক রোগের দাপট বাড়ে। জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনের আরও বেশি পরিকল্পনা জরুরি। তাছাড়া ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার দাপট গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্যে চলছে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রশাসনের আরও বেশি নজরদারি প্রয়োজন।‌

 

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share